পথ অবরোধে বাহারালের বাসিন্দারা। শনিবার রতুয়ায়। ছবি: বাপি মজুমদার
পাত্র সেনাবাহিনীর জওয়ান। তার উপর নিকটাত্মীয়ও। পাত্রীর মাসতুতো দাদা। ফলে পাত্রের বাড়ির দেওয়া বিয়ের প্রস্তাবে সাগ্রহে রাজি হয়ে যান বাবা-মা। দেরি না করে তাঁরা রতুয়ার রুকুন্দিপুরের বাসিন্দা আজহার শেখের সঙ্গে তাঁদের একমাত্র কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মর্জিনা খাতুনের বিয়ে দিয়ে দেন।
সেই মেয়ের এমন পরিণতি কোনও ভাবেই মানতে পারছেন না বাবা আনিসুর রহমান ও মা ফুলন বিবি। তাঁদের আক্ষেপ, বিয়েতে রাজি ছিল না পাত্র আজহার। তার বাড়ির অনুরোধে পড়ে মেয়ের বিয়ে দেওয়াই কাল হল। তাঁদের ওই ‘ভুলে’ই মাত্র ২২ বছরে মরতে হল মর্জিনাকে। মৃতার মা বলেন, “ছেলে চাকরি করে বলে ভেবেছিলাম মেয়ে সুখে থাকবে। সেই ছেলেই যে খুন করবে তা ভাবতেই পারছি না।” মেয়ের খুনে অভিযুক্ত আজহারের কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন তাঁরা।
রতুয়া থানার বাহারালের উত্তর সাহাপুরের বাসিন্দা আনিসুরের তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে মর্জিনা দ্বিতীয়। মর্জিনা সামসি কলেজে পাশ কোর্স নিয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছিলেন। মর্জিনা ছোট থেকে খুবই শান্ত স্বভাবের বলে দাবি পরিবারের লোকেদের। মর্জিনার এক আত্মীয় জিয়াউল রহমান বলেন, “মর্জিনাকে খুব পছন্দ ছিল আজহারের মা কৌসারির। তিনিই মর্জিনার সঙ্গে ছেলের বিয়ের প্রস্তাব দেন। আজহার চাকরি করে ভেবে রাজিও হয়ে যান মেয়ের বাবা-মা।” বিয়েতে মেয়ে রাজি থাকলেও আজহার নিজে রাজি ছিল না বলে দাবি পরিবারের একাংশের। তাঁদের দাবি, রুকুন্দিপুরের এক তরুণীর সঙ্গে আজহারের সম্পর্ক ছিল। যদিও তাঁর ব্যাপারে আগ্রহী ছিল না পরিবার। এরপরে পরিবারের কথা মেনে আজহার বিয়ে করে। তবে বিয়ের পরেও অধিকাংশ সময় মর্জিনা বাপের বাড়িতেই থাকতেন।
১৪ অক্টোবর কলেজ যাওয়ার নামে গ্রামেরই এক বান্ধবীর সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হন মর্জিনা। ওইদিন সন্ধের পরেও বাড়ি না ফেরার খোঁজ শুরু করেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। এরপরেই তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন আজহারকে। তার কথায় অসঙ্গতি থাকায় তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা। পুলিশ অপহরণের মামলা রুজু করে তাকে আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেয়। আর নিখোঁজের চারদিন পর বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূর কলেজের কাছে মর্জিনার পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মর্জিনাকে আজহারই খুন করেছে বলে দাবি পরিবারের।
মৃতার খুড়তুতো দাদা রয়েল শেখ বলেন, “পুজোর জন্য কলেজ ছুটি রয়েছে। তারপরেও বোন কলেজের নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়। বোনকে অপহরণ করে আজহার খুন করেছে। অথচ, পুলিশ আজহারকে হেফাজতে নিজেদের হেফাজতে নিয়েও কোনও কিনারা করতে পারেনি। এমনকি, বোন বেঁচে আছে বলে পুলিশ আমাদের কাছে দাবি করেছিল।” পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আজাহার বছরখানেক আগে সেনাবাহিনীতে চাকরি পায়। বিয়ের পণ হিসেবে সে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা নেয় বলে দাবি করেছেন রয়েল। তিনি বলেন, “আজহারের একটি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সে-ই আমার বোনকে
খুন করেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy