অধিকাংশ ক্ষেত্রে মূর্তিমান বিপদ হয়েই দেখা দেয় ঘূর্ণিঝড়। এ বার বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র দিক থেকে অবশ্য রাজ্যে তেমন ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন না আবহবিদেরা। বরং দারুণ অগ্নিবাণে কাবু এ-পার বাংলায় খানিকটা মুশকিল আসান হয়েই আসছে সে। কেননা ওই ঘূর্ণিঝড়ের দৌলতে উত্তরবঙ্গে সময়ের আগেই ঢুকে পড়তে পারে বর্ষা।
নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপ, তা থেকে অতি-গভীর নিম্নচাপ। সেই অতি-গভীর নিম্নচাপই রূপ নিচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের। দিল্লির মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, ওই ঘূর্ণিঝড় আজ, মঙ্গলবার সকালের দিকে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়তে পারে চট্টগ্রাম উপকূলে। সেই ঝড়ের দামালপনার আঁচ বিশেষ লাগবে না বলেই এ-পারে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা তেমন নেই। বরং তার প্রভাবে বৃষ্টি জ্বালা জুড়িয়ে দিতে পারে। এই অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হলে তার নাম দেয় উত্তর ভারত মহাসাগরীয় এলাকার কোনও দেশ। এ বারের ‘মোরা’ নামটি দিয়েছে তাইল্যান্ড।
সাধারণত বর্ষার ঠিক আগে আগে বঙ্গোপসাগরে কোনও ঘূর্ণিঝড় হলে তা আরবসাগরের বাযুপ্রবাহকেও প্রভাবিত করে। আরবসাগর উপকূল থেকে সব জলীয় বাষ্প টেনে নিয়ে আসে বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়। ফলে বিলম্বিত হয় বর্ষার আগমন। কেরল দিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার মৌসুমি বায়ুর মূল ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ার কথা। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র জন্য সেই আগমনি-নির্ঘণ্ট পিছিয়ে যাবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন আবহবিদেরা। তবে হাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ, সোমবার পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে এ বার অন্তত সেই সমস্যার আশঙ্কা তেমন নেই। বরং বর্ষার অগ্রদূতের ভূমিকা নিতে চলেছে ‘মোরা’। মৌসম ভবন এ দিন জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের পিঠোপিঠি বর্ষা ঢুকতে চলেছে কেরলে। আজ, মঙ্গলবার অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের দু’দিন আগেই কেরলে ঢুকে পড়বে বর্ষা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উপকূলে জারি করা হল ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত
ঘূর্ণিঝ়ড় ‘মোরা’র দাক্ষিণ্যে কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে দক্ষিণবঙ্গও। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আজ, মঙ্গলবার কলকাতা-সহ উপকূলীয় জেলাগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিও হতে পারে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘ঘূর্ণিঝ়়ড়ের প্রভাবে উত্তর-পূর্ব ভারত তো বটেই, উত্তরবঙ্গেও বর্ষা আগেভাগে ঢুকে পড়তে পারে।’’ সাগর উত্তাল থাকায় মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। যাঁরা ইতিমধ্যেই মাঝসমুদ্রে চলে গিয়েছেন, তাঁদের ফিরে আসতে বলা হয়েছে।
সতর্কবার্তা পেয়ে সক্রিয় হয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনীও। তাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মুখপাত্র ডেপুটি কম্যান্ডান্ট অভিনন্দন মিত্র জানান, মৎস্যজীবীদের ফিরিয়ে আনতে জাহাজ পাঠানো হয়েছে। আকাশপথেও ডর্নিয়ের বিমানের সাহায্যে টহলদারি চলছে।
মোরা-র অভিমুখ
• কোথায় আঘাত করার কথা: চট্টগ্রাম উপকূলে
• কবে নাগাদ স্থলভূমিতে ঢোকার কথা: মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে
• তীব্রতা কত হবে: ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার
• সতর্কতা: মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে মানা
পশ্চিমবঙ্গে প্রভাব
• উপকূলে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে
• দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy