Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

তিনি যে ‘ভিন্‌দেশি’, জানায়নি পুলিশ

সওকতের আইনজীবী অর্ণব চট্টোপাধ্যায় জানান, ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর ওই বাংলাদেশি নাগরিককে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান বাজারে একটি হোটেলের সামনে থেকে জাল টাকা-সহ গ্রেফতার করে পুলিশ।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

শমীক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪১
Share: Save:

তিনি যে বাংলাদেশি, ধরা পড়ার পরে বারবার সে কথা বলতে চেয়েছিলেন মহম্মদ সওকত আলি। নিম্ন আদালতেও তাঁর আর্জি ছিল— ভিন্‌দেশি নাগরিকের পরিচয়টা যেন মনে রাখা হয়। কিন্তু মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশ সে কথা গ্রাহ্যের মধ্যেই আনেনি। সাধারণ নিয়মেই তাই চলতে থাকে জাল টাকা রাখার বিচার পর্ব। আর, জঙ্গিপুর আদালতের নির্দেশে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অনুশাসনে জেলে পচতে থাকেন সওকত।

বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে সওকতের মামলা শেষতক পৌঁছেছিল কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার, সেই মামলার রায় দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করন নায়ার রাধাকৃষ্ণন ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছেন— সওকতের সাজার মেয়াদ দশ বছর। তবে ইতিমধ্যেই প্রায় ১৪ বছর হাজতবাস হওয়ায় সৌকতকে এখন দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

সওকতের আইনজীবী অর্ণব চট্টোপাধ্যায় জানান, ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর ওই বাংলাদেশি নাগরিককে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান বাজারে একটি হোটেলের সামনে থেকে জাল টাকা-সহ গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে ১০৫টি ৫০০ টাকার ভারতীয় জাল নোট পাওয়া গিয়েছিল বলে শমসেরগঞ্জ পুলিশের অভিযোগ ছিল। তাঁর আইনজীবীর দাবি, বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার সাহাপুরের বাসিন্দা সওকত ধুলিয়ানে এসেছিলেন এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। তাঁর কাছে থাকা নোটগুলি যে জাল, তা তিনি জানতেনই না। দু’বছর বিচার চলার পরে জঙ্গিপুর আদালত ২০০৮-এর ১৭ সেপ্টেম্বর সওকতকে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দেয়। সওকতের ধুলিয়ানের আত্মীয়েরা আইনজীবীর মাধ্যমে কলকাতা হাইকোর্টে আপিল মামলা করেন। সেই মামলার রায়ে এ দিন যাবজ্জীবন থেকে সাজার মেয়াদ কমে হয়েছে দশ বছর। কিন্তু এর মাঝে তেরো বছর সওকতের কেটে গিয়েছে এ দেশের জেলে।

হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে সরকারি কৌঁসুলি জানান, সওকতের কােছ যে জাল নোট মিলেছিল, তার প্রমাণ রয়েছে। কাজেই যাবজ্জীবনের নির্দেশ বজায় থাকুক। কিন্তু সওকতের আইনজীবী অর্ণব তাঁর সওয়ালে জানান, কারও কাছে জাল নোট থাকা ঘৃণ্য বা জঘন্য কোনও অপরাধ নয়। তাঁর কাছে জাল টাকা থাকলেও, তিনি সেই টাকা দিয়ে কোনও লেনদেন করছেন কি না সেটাই দেখার।

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Fake Currency Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy