একটানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন শহরের আলিপুর এলাকা। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
আষাঢ়ের প্রথম দিন থেকেই বর্ষা এ বার বঙ্গের প্রতি প্রসন্ন। সেই প্রসন্নতা বাড়িয়েছে গাঙ্গেয় বঙ্গের উপরকার একটি ঘূর্ণাবর্ত আর তার দোসর, বঙ্গোপসাগর থেকে ঢোকা জলীয় বাতাসের যুগলবন্দি। সেই সুবাদে বুধবার, পয়লা আষাঢ় যে-বৃষ্টির শুরু, বৃহস্পতিবার, আষাঢ়স্য দ্বিতীয় দিবসেও সেই ধারাবর্ষণ অব্যাহত।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কাল, শনিবার পর্যন্ত গোটা রাজ্যেই বৃষ্টি হবে। রবিবার থেকে বৃষ্টি কমতে পারে। আগামী দু’দিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সতর্কতাও রয়েছে। তার জেরে বিভিন্ন নিচু এলাকা জলমগ্ন হতে পারে এবং জল জমতে পারে শহরাঞ্চলেও। সমুদ্র উত্তাল থাকায় আজ, শুক্রবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সাগরে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হচ্ছে। তার জেরে সম্ভাব্য বজ্রপাতের থেকেও সাবধান থাকতে বলেছেন আবহবিজ্ঞানীরা।
বুধবার থেকে এ দিন সকাল পর্যন্ত কলকাতায় প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। তার জেরে মহানগরের বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। পুরসভার হিসেব অনুযায়ী কলকাতায় সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে মোমিনপুরে, ১৮৭ মিলিমিটার। পুরকর্তাদের ব্যাখ্যা, প্রবল বর্ষণ এবং সেই সঙ্গে গঙ্গায় জোয়ারের ফলে সকালে জল নামতে পারেনি। জলমগ্নতার প্রসঙ্গেই রাজ্যের সেচ ও নিকাশি দফতরকে একহাত নিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী ও কলকাতার পুর-প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম (ববি)। “বর্ষা এলে নিকাশি সংস্কারের কথা মনে পড়ে। শীতকালে সেচ ও নিকাশি দফতর ঘুমিয়ে থাকে,” বলেন তিনি।
গত কয়েক বছর জুনে গাঙ্গেয় বঙ্গে তেমন জোরালো বৃষ্টি হয়নি।
তার জেরে বর্ষার চরিত্র বদল হয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দিল্লির মৌসম ভবনের তথ্য বলছে, এ বছর জুনে গাঙ্গেয় বঙ্গের উপরে বর্ষার কৃপাদৃষ্টি পড়েছে। ১ জুন থেকে বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন পর্যন্ত গাঙ্গেয় বঙ্গে মোট ২০৩.৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের থেকে ৭৫ শতাংশ বেশি। বর্তমানে বর্ষার যা মেজাজ, তাতে এই উদ্বৃত্তের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। উদ্বৃত্ত বৃষ্টির জেরে নদীগুলিতে জলস্তর বৃদ্ধির আশঙ্কাও আছে।
আষাঢ়ের সূচনাতেই বর্ষা এত সদয় কেন? কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গাঙ্গেয় বঙ্গের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাতাস ঢুকছে। এই দুইয়ের জেরেই জোরালো বৃষ্টি হচ্ছে। গত ১২ জুন রাজ্যের সব জেলায় বর্ষা পৌঁছে যাওয়ার পর থেকে নিয়মিত বৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ছাড়াও কলকাতা, দার্জিলিং, কালিম্পংয়েও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। শনিবার উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, ডুয়ার্স এবং দক্ষিণবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, বীরভূমে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এই দু’দিন রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy