Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
R G Kar Case Hearing

‘পুরস্কৃত অধ্যক্ষকে ছুটিতে যেতে বলুন, নইলে আমরা নির্দেশ দেব’! আরজি কর মামলায় রাজ্যকে হাই কোর্ট

প্রধান বিচারপতি রাজ্য সরকারের কাছে আরজি কর মামলার কেস ডায়েরি চেয়ে পাঠালেন। মঙ্গলবার দুপুর ১টার মধ্যে কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

Hearing of kolkata RG Kar doctor\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s death case in calutta high court

(বাঁ দিকে) সন্দীপ ঘোষ এবং কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৪ ১১:৩১
Share: Save:

আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে স্বেচ্ছায় ছুটিতে পাঠাতে বললেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। শুধু তা-ই নয়, সময়ও বেঁধে দিয়েছেন তিনি। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘বিকেল ৩টে পর্যন্ত সময় দিলাম। এর মধ্যে অধ্যক্ষকে স্বেচ্ছায় ছুটিতে চলে যেতে বলুন। না হলে আমরা নির্দেশ দিতে বাধ্য হব।’’ রাজ্যের পাশাপাশি অধ্যক্ষকেও স্বেচ্ছায় ছুটিতে যাওয়ার কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।

মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয় আরজি করের চিকিৎসক খুনের ঘটনার বেশ কয়েকটি জনস্বার্থ মামলার। শুনানিতে সন্দীপের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সওয়াল, ‘‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সোমবার সকালে বলেছিলেন সরকারি চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। বিকেলে তাঁকেই অন্য কলেজের মাথায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তা শুনে প্রধান বিচারপতি বিস্ময়প্রকাশ করে বলেন, ‘‘১২ ঘণ্টার মধ্যে পুরস্কৃত হয়ে গেলেন?’’ সন্দীপের আইনজীবী আদলতে জানান, ‘‘ইস্তফা দিয়েছিলেন। কিন্তু গ্রহণ করা হয়েছে কি না জানা নেই।’’ প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘অধ্যক্ষ ইস্তফা দেওয়ার পরেও কী ভাবে পুরস্কৃত হলেন?’’

রাজ্য এই মামলায় জবাব দেওয়ার জন্য এক দিন সময় চেয়েছিল। রাজ্যের আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘‘তদন্ত করছে পুলিশ। কিছু লুকিয়ে রাখা হচ্ছে না। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে আরও এক জন জড়িত। এর কোনও সত্যতা এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।’’ আরও বলা হয়, ‘‘আমরা বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে প্রস্তুত। তদন্তের রিপোর্টও আমরা দেব। ৩৫-৪০ জনের বেশি লোকের বয়ান নেওয়া হয়েছে। আমাদের সময় দেওয়া হোক। প্রত্যেকের যে যে অভিযোগ রয়েছে, আগামী কাল (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টায় সবার উত্তর দেব।’’ তার পরই প্রধান বিচারপতি রাজ্য সরকারের কাছে আরজি কর মামলার কেস ডায়েরি চেয়ে পাঠালেন। মঙ্গলবার দুপুর ১টার মধ্যে কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

আরজি-কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। অধ্যক্ষ পদ থেকে সন্দীপের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন আরজি করের চিকিৎসক পড়ুয়ারা। সোমবার সকালে সন্দীপ আরজি করের অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। এমনকি, সরকারি চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলেন। বিকেলেই স্বাস্থ্য দফতরে গিয়ে নিজের ইস্তফাপত্র জমা দেন সন্দীপ। আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদের ইস্তফাপত্র গ্রহণ করলেও সরকারি চাকরির ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেনি স্বাস্থ্য দফতর। পরে জানানো হয়, আরজি কর থেকে সরিয়ে সন্দীপকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করা হয়েছে। মঙ্গলবারই তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার কথা থাকলেও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক পড়ুয়াদের বিক্ষোভের জেরে তা সম্ভব হয়নি।

পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলবার সকালে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে যান এন্টালির বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা এবং মন্ত্রী জাভেদ খান। তাঁদের সামনেই নিজেদের আশঙ্কা এবং ক্ষোভের কথা উগরে দেন ন্যাশনাল মেডিক্যালের পড়ুয়ারা। আরজি কর থেকে সদ্য পদত্যাগী সন্দীপ ঘোষকে কেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে ‘চাপিয়ে দেওয়া হল’, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা। এক জন বলেন, “আমরা ভয়ে আছি।” আর এক জন উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমরা ন্যাশনাল মেডিক্যালকে আরজি কর বানাতে চাই না। ওখানকার আবর্জনা এখানে চাই না।” তার মধ্যেই প্রধান বিচারপতি সন্দীপকে ছুটিতে পাঠাতে বললেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court rg kar medical college
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE