—প্রতীকী ছবি।
এক জনকে এলাকার মানুষ জানতেন মানসিক ভারসাম্যহীন বলে। অন্য জনকে মেধাবী ছাত্র হিসেবে। দুই জেলা থেকে এমন দুই যুবক জঙ্গি-যোগে গ্রেফতার হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যে কি তবে ফের ছড়িয়েছে জঙ্গি-জাল? রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) দাবি, বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের শাখা ‘শাহদাত’-এর জন্য এই দু’জন এ রাজ্যে সদস্য সংগ্রহ করছিল। আর কোন কোন জেলায় সেই জাল ছড়িয়েছে, দেখছেন তদন্তকারীরা।
দিন চারেক আগে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা থেকে ধরা হয় কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র মহম্মদ হাবিবুল্লাহকে। সে এ রাজ্যে শাহদাতের মাথা বলে দাবি পুলিশের। মঙ্গলবার হাওড়া স্টেশন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় নদিয়ার মায়াপুরের হারেজ শেখকে। শাহদাতের লোকেরা সমাজমাধ্যম মারফত যে ভাবে সদস্য সংগ্রহ করে, হারেজের পক্ষে তা সম্ভব কি না, প্রশ্ন তার পড়শিদের। তার ভাই মারেজ শেখ কল্যাণীতে পড়াশোনা করেন। তাঁর দাবি, হারেজের কোনও সন্দেহজনক গতিবিধি কখনও চোখে পড়েনি। তবে হারেজকে ফোন করে সব সময় পাওয়া যেত না। প্রশ্ন উঠেছে, যে হারেজ বাড়ি থেকে প্রায় বেরোতেনই না, তিনি হঠাৎ গেঞ্জি কারখানায় কাজ পাওয়ার কথা বলে মঙ্গলবার হাওড়া গেলেন কেন? আগাম খবর না থাকলে সেখান থেকে এসটিএফ তাঁকে ধরলই বা কী করে?
২০১৪ সালে বর্ধমানে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে যে সব জেলায় জঙ্গি-জাল ছড়ানোর হদিস পেয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ), সেই তালিকায় ছিল না নদিয়া। এ বার সেখানকার যুবকের জঙ্গি-যোগে গ্রেফতারের ঘটনা কপালে ভাঁজ ফেলছে গোয়েন্দাদের। তদন্তকারীদের দাবি, হাবিবুল্লাহেরা শাহদাতের জন্য এ রাজ্যে জনা দশেক সদস্য সংগ্রহ করেছে। তাই নজর রয়েছে অতীতে জঙ্গি-যোগ মেলা এলাকাগুলিতেও। খাগড়াগড় কাণ্ডে একাধিক অভিযুক্তের খোঁজ মিলেছিল বীরভূমের নানুরের নিমড়া গ্রামে। পুলিশ সূত্রের দাবি, হাবিবুল্লাহের সঙ্গে কয়েক বছর আগে এই এলাকার কয়েক জনের যোগ ছিল। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। এসটিএফ কর্তারও দেখছেন।’’
মুর্শিদাবাদের ডোমকলে বছর চারেক আগেও এনআইএ-র তল্লাশি চলেছে। রানিনগর ও জলঙ্গি থেকে গ্রেফতার হয় ৯ জন। জলঙ্গির একটি বিএসএফ চৌকিকে ঘাঁটিও করে এনআইএ। পপুলার ফ্রন্ট নিষিদ্ধ ঘোষণা হওয়ার পরে এনআইএ সম্প্রতি অভিযান চালায় লালগোলায়। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, নিষিদ্ধ সংগঠনের একাধিক নেতার বাস ছিল সেখানে। তারা পড়শি রাজ্যে আত্মগোপন করেছে বলে সন্দেহ। শমসেরগঞ্জেও নিষিদ্ধ সংগঠন সিমি-র কিছু কর্মী একটি রাজনৈতিক দলের আড়ালে থেকে কাজ চালাচ্ছে, দাবি গোয়েন্দা সূত্রের। বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণ কাণ্ডেও শমসেরগঞ্জে ছ’জন গ্রেফতার হয়। হাবিবুল্লাহদের গ্রেফতারের পরে এই সব এলাকায় নজরদারি বাড়ছে।
বছর আটেক আগে কাঁকসা থেকে আইএস-যোগের অভিযোগে এক ছাত্রকে ধরে এনআইএ। সেই কাঁকসারই বাসিন্দা হাবিবুল্লাহ। দুই বর্ধমানের অজয় ও দামোদর তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, খবর জেলা পুলিশ এবং এসটিএফ সূত্রে। বীরভূমের নিমড়া থেকে মায়াপুরের মোল্লাপাড়ার বাসিন্দাদের অবশ্য দাবি, এলাকায় কোনও জঙ্গি কার্যকলাপ দানা বাঁধছে, এমন কিছু তাঁদের নজরে নেই। ধৃত হারেজের ভাই মারেজ যদিও বলছেন, “এসটিএফ যখন ধরেছে, কিছু নিশ্চয়ই পেয়েছে। হতে পারে, অসুস্থতার সুযোগে কেউ দাদাকে ভুল বুঝিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy