Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

হাসপাতালের ভোটেও সংঘর্ষ শাসক গোষ্ঠীর

রাস্তার দু’ধার থেকে ইট ও কাচের বোতল ছুড়ে সংঘর্ষে জড়াল শাসক তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠী। যাদের এক পক্ষ রাজ্যের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান এবং অন্য পক্ষ বিধায়ক তথা কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদের অনুগামী।

ভাঙচুর: তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে এই হাল ইকবাল আহমেদের অনুগামীদের কার্যালয়ের। রবিবার পার্ক সার্কাসে। —নিজস্ব চিত্র।

ভাঙচুর: তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে এই হাল ইকবাল আহমেদের অনুগামীদের কার্যালয়ের। রবিবার পার্ক সার্কাসে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৭
Share: Save:

খাস কলকাতা শহরে একটি হাসপাতালের পরিচালন সমিতির নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল জনবহুল এলাকা। রাস্তার দু’ধার থেকে ইট ও কাচের বোতল ছুড়ে সংঘর্ষে জড়াল শাসক তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠী। যাদের এক পক্ষ রাজ্যের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান এবং অন্য পক্ষ বিধায়ক তথা কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদের অনুগামী। পুলিশ ও র‌্যাফ নামিয়ে শেষ পর্যন্ত আয়ত্তে আনতে হয়েছে পরিস্থিতি।

মাঝখানে পার্কসার্কাসের সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ। এক দিকে নাসিরুদ্দিন রোড এবং অন্য দিকে কংগ্রেস এগজিবিশন রোড থেকে দু’টি দল একে অপরকে লক্ষ করে ছুঁড়ছিল ইট ও কাচের বোতল। কারও কারও হাতে ছিল বোমাও। ওই রাস্তাগুলিতে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল গাড়ি চলাচল। সাধারণ মানুষ এ দিক-ও দিক দৌড়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছিলেন। দোকানের ঝাঁপ বন্ধ। পরে পুলিশ ও র‌্যাফ বাহিনী এসে লাঠি চালিয়ে গোলমাল সামাল দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারামারির জেরেই উত্তপ্ত হয়েছিল পার্কসার্কাস এলাকা।

গোলমালের কারণ ইসমালিয়া হাসপাতালের পরিচালন সমিতির নির্বাচন ছিল। প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করছিলেন যে, নির্বাচন স্বচ্ছ ভাবে হয়নি। তখনই খবর পৌঁছয়, মন্ত্রীর এক অনুগামীকে মারধর করা হয়েছে। এর পরেই দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়। অভিযোগ, কংগ্রেস এগজিবিশন রোডে মন্ত্রীর অনুগামীদের দলীয় কার্যালয়ে তাণ্ডব চালানো হয়। মন্ত্রীর অনুগামীরাও পাল্টা চড়াও হন ইকবালের অনুগামীদের কার্যালয়ে। সেখানে ভাঙচুর চালানো হয়। মোটরবাইক জ্বালিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ।

ঘটনার পরে সেখানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, গোটা রাস্তায় ছড়িয়ে রয়েছে কাচ। এক প্রত্যক্ষদর্শী দোকানদার বলেন, ‘‘দু’টো দলীয় অফিসে ভাঙচুর করার পরেও গোলমাল থামেনি। রাস্তার দু’পাশ থেকে দু’টি দল ইট-কাচ ছুঁড়তে থাকে। যে কোনও সময়ে সাধারণ লোকজন আহত হতে পারতেন। পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করার পরে গোলমাল থামে। দু’দলের হাতে লোহার রডও ছিল।’’ দু’পক্ষের কমবেশি ১০ জন আহত হয়েছেন।

সূত্রের খবর, নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইকবালের অনুগামীরা জিতে যান। ডেপুটি মেয়রের দাবি, ‘‘হেরে যাওয়ার পরেই ওরা (মন্ত্রীর অনুগামীরা) দলীয় অফিসে ভাঙচুর চালায়।’’ মন্ত্রী জাভেদের প্রতি ইঙ্গিত করেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা তো একই দল করি! কেন উনি এ রকম করলেন, বুঝতে পারলাম না!’’ জাভেদের পাল্টা দাবি, ‘‘নির্বাচন স্বচ্ছ ভাবে হয়নি। বুথের ভিতরে প্রার্থীরাই প্রিসাইডিং অফিসার হয়ে বসে ছিল!’’ দলের এক মন্ত্রী ও এক বিধায়কের অনুগামীদের সংঘর্ষ নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য মুখ খোলেননি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE