Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
CPM

বাংলা, ত্রিপুরায় জমি উদ্ধারের চর্চা সিপিএমে

শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগকে সামনে রেখে বাংলায় টানা প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে চলেছে সিপিএম। দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের কর্মসূচি যথেষ্টই নজর কাড়ছে।

দিল্লিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক।

দিল্লিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২২ ০৬:২৭
Share: Save:

ক্ষমতা হারানোর পরে দুই রাজ্যেই সংগঠন দুর্বল হয়েছে। নির্বাচনী বিপর্যয়ের জেরে কর্মী মহলের মনোবলেও ধাক্কা লেগেছিল। কিন্তু গত কয়েক মাসে বাংলা ও ত্রিপুরায় দলের রাজনৈতিক জমি কিছুটা পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত মিলছে বলে আশাবাদী সিপিএম। প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করেই কর্মী-সমর্থকেরা আবার দলের আন্দোলন, কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে দুই রাজ্যের সিপিএম নেতৃত্বের তরফে জমা পড়া রিপোর্ট থেকে এই নির্যাসই উঠে আসছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরামর্শ, দুই রাজ্যেই আন্দোলন এবং কর্মসূচির ধারাবাহিকতা আরও তীব্র করে বুথ স্তরে সংগঠনকে সাজাতে হবে।

শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগকে সামনে রেখে বাংলায় টানা প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে চলেছে সিপিএম। দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের কর্মসূচি যথেষ্টই নজর কাড়ছে। খাতায়-কলমে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি হলেও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের নিরিখে তাদের চেয়ে এগিয়ে গিয়েছে সিপিএম। দিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যে তিন দিনের বৈঠক শনিবার থেকে শুরু হয়েছে, সেখানে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের দেওয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে: এক দিকে, ‘পাহারায় পাবলিক’ বা ‘নজরে পঞ্চায়েত’-এর মতো কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। আবার অন্য দিকে, দল আন্দোলনমুখী হলে সংগঠনের ‘নিষ্ক্রিয়’ অংশকেও যে ফিরে পাওয়া সম্ভব, তারও ইঙ্গিত মিলছে। বিভিন্ন জেলাতেই বসে যাওয়া কর্মী-সমর্থকেরা আবার দলের ডাকে বেরোচ্ছেন। তার জন্য আলাদা সংযোগ অভিযানও চলছে। রাজ্যে ‘ইতিবাচক’ সাড়া পাওয়ার ফলেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নভেম্বর মাস জুড়ে গ্রামাঞ্চলে পদযাত্রার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

আর এক বাঙালি রাজ্য ত্রিপুরার সরেজমিন রিপোর্টও এ বার তুলনায় ভাল। সে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে বহু ক্ষেত্রেই বামেদের কর্মসূচি চালানো দুষ্কর হয়ে উঠেছিল। সিপিএমের অভিযোগ, শাসক দল বিজেপির ‘সন্ত্রাস এবং গা-জোয়ারি’র কারণেই বিরোধী দলের কর্মীরা সুস্থ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারছিলেন না। কিন্তু ইদানিং কালে বিজেপির বাধা বা ‘মারধর’ অগ্রাহ্য করেই সিপিএমের লোকজন আবার রাস্তায় নামছেন, মাঠে-ময়দানে কর্মসূচিতে ভিড় করছেন। কয়েক দিন আগে জেলায় জেলায় বিজেপির বাধা এবং আক্রমণের অভিযোগ সত্ত্বেও আগরতলায় দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির উপস্থিতিতে সমাবেশে বিপুল লোক হয়েছিল। ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোট আগামী বছর। তার আগে এই প্রবণতা ইতিবাচক বলেই বৈঠকে মত দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী। তবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, বাংলা ও ত্রিপুরা, দু’রাজ্যের ক্ষেত্রেই নিচু তলায় সংগঠনকে পোক্ত করাই পাখির চোখ হওয়া উচিত।

সিপিএমের জন্য আর এক গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য কেরলে রাজনৈতিক আবহ এখন তপ্ত রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের ভূমিকাকে ঘিরে। রাজ্যপাল যে ভাবে উপাচার্যদের প্রথমে পদত্যাগের নির্দেশ এবং পরে শো-কজ় করেছেন, রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর অপসারণ চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন, এই নজিরবিহীন পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অবিলম্বে জাতীয় স্তরে প্রতিবাদে যাওয়ার দাবি তুলেছেন সিপিএমে কেরল রাজ্য নেতৃত্ব। যদিও সূত্রের খবর, শুধু রাজ্যপাল-প্রশ্নে জাতীয় কর্মসূচিকে সীমাবদ্ধ রাখার পক্ষপাতী নয় পলিটবুরো। তাদের মত, প্রধানমন্ত্রী সব রাজ্যে পুলিশের একই উর্দি চাইছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সব রাজ্যে এনআইএ-র শাখা চাইছেন, রাজ্যপাল রাজ্যের মন্ত্রীর অপসারণ চাইছেন— এই গোটা বিষয়কে এক সূত্রে বেঁধে কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির হাতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পড়ার অভিযোগের প্রতিবাদ হোক। তাতে সঙ্গে নেওয়া যেতে পারে জাতীয় স্তরের অন্যান্য বিরোধী দলকেও।

এরই পাশাপাশি, দলের পলিটবুরোয় নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির বিষয়েও বৈঠকের শেষ দিনে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে সিপিএম সূত্রের খবর। কেরল সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন প্রয়াত হওয়ায় তাঁর শূন্য স্থানে বর্তমান রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দন মাস্টারকে পলিটবুরোয় নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy