প্রতীকী ছবি।
প্রায় দু’যুগ আগে স্কুলপড়ুয়াদের ব্যাগের ভার কমানোর সুপারিশ করেছিল একটি কেন্দ্রীয় কমিটি। এত দিন পরে স্কুলব্যাগের ওজন কমিয়ে কচিকাঁচাদের কাঁধ বাঁচাতে আবার তৎপর হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রীয় স্কুলশিক্ষা সচিব অনিল স্বরূপ মঙ্গলবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে জানান, পড়ুয়াদের স্কুলব্যাগের অতিরিক্ত ওজন কমানোর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে। পুরনো কমিটির সুপারিশের উল্লেখ না-করলেও অনিল জানান, স্কুলব্যাগের ভার কমানোর বিষয়ে নতুন নির্দেশ দেওয়ার জোড়জোড় শুরু হয়েছে।
সদ্য প্রয়াত যশপালের নেতৃত্বে নব্বইয়ের দশকে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি খুদে পড়ুয়ারদের কাঁধে ভারী বইয়ের ব্যাগ চাপানোর বিরুদ্ধে মত দিয়েছিল। যশপাল কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী সিবিএসই বোর্ড এই বিষয়ে নিয়ম চালু করেছে। কিন্তু বাস্তবে তা না-মানায় বহু পড়ুয়ারই নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ।
সোদপুর ও খড়দহের দু’টি সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলেই বইয়ের ব্যাগের ভার কমাতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্কুলের সচিব দ্যুতিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পড়ুয়াদের চেহারা ও গড়ন অনুযায়ী ব্যাগ নেওয়ার নিয়ম চালু হয়েছে আইসিএসই বোর্ডের অধীন এই দুই স্কুলে। ঠিক হয়েছে, প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কোনও পড়ুয়া এক দিনে দু’টির বেশি বই আনতে পারবে না। খাতার বদলে সেলাই না-করা কাগজ দিচ্ছে স্কুলই। পরে সেগুলো পড়ুয়ারা ফাইল বানিয়ে রাখবে। প্র্যাক্টিক্যাল তো স্কুলেই হচ্ছে। তা ছাড়াও বেশ কিছু বিষয় পড়ানো হচ্ছে ডিজিটাল বোর্ডে। জলের বোতল নিয়ে বইয়ের ব্যাগের ওজন যাতে কোনও ভাবেই আড়াই কিলোগ্রামের বেশি না-হয়, সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা-ও থার্মোফ্লাস্ক অথবা স্টিলের জলের বোতল আনতে হবে খালি অবস্থায়। স্কুলে পরিস্রুত জল ভরার ব্যবস্থা রয়েছে। জল ভরার জন্য পড়ুয়াদের অতিরিক্ত সময়ও দেওয়া হচ্ছে।
ডিপিএস-রুবি পার্ক আইসিএসই বোর্ডের অধীন স্কুল। ওই স্কুলের অধ্যক্ষা ইন্দ্রাণী সান্যাল জানান, তাঁরা সব সময়েই স্কুলে ষথাসম্ভব কম বই আনার নির্দেশ দেন। ‘‘বেশি ওজনের ব্যাগ বইলে পড়ুয়াদের শারীরিক সমস্যা হয়। সেই জন্যই আমরা কম বই-খাতা আনতে বলি। তবে যদি কেউ বেশি বই-খাতা ট্রলি ব্যাগে করে আনে, আমরা তারও অনুমতি দিই,’’ বলেন ইন্দ্রাণীদেবী। সহপাঠীদের সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে মিলিয়ে-মিশিয়ে কম বই
আনার বন্দোবস্ত করেছে গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল। ‘‘আরও কী ভাগে ব্যাগ এর ভার কমানো যায়, সেই চেষ্টা করছি,’’ বলেন সিবিএসই বোর্ডের অধীন ওই স্কুলের অধ্যক্ষা ইন্দ্রাণী মিত্র।
হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষারকান্তি সামন্তের দাবি, সিবিএসই এবং আইসিএসই বোর্ডের তুলনায় এ রাজ্যের বোর্ডের স্কুলের পড়ুয়াদের বইয়ের ভার অনেক কম।
অনেক ক্ষেত্রেই স্কুল থেকে ব্যাগ, জুতো ইত্যাদি কিনতে বাধ্য করানো হয়। এই নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় স্কুলশিক্ষা সচিব অনিল এ দিন জানান, স্কুল থেকে ব্যাগ, জুতো কিনতে বাধ্য করানো হলে সেটা বরদাস্ত করা হবে না। সিবিএসই স্কুলে যাতে এনসিইআরটি-র বই-ই পড়ানো হয়, সেই বিষয়ে আরও কড়া নজরদারি চাইছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy