রাজ্যের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোস ইতিমধ্যেই স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু বাকি ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটির তৈরি প্যানেলে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের প্রার্থী নিয়ে আপত্তি তুললেন তিনি। বিষয়টি তাঁর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে ‘সিলড কভারে’ জানানো হয়েছে। রাজভবন মিডিয়া সেল-এর এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে জানানো হয়েছে, ‘বাকি ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে, প্রার্থীদের অতীত রেকর্ড ও ব্যাকগ্রাউন্ড বিচার করে, বিভিন্ন অভিজ্ঞ ও নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে, মাননীয় রাজ্যপাল কিছু যুক্তিযুক্ত আপত্তি তুলেছেন।’
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গঠিত সার্চ কমিটির তিন জনের নামের প্যানেল প্রথমে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তিনি তাঁর পছন্দ জানিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সেই পছন্দেই সায় দিয়েছেন রাজ্যপাল। কিন্তু বাকি ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্যানেলে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের প্রার্থীর বিষয়ে এ বার তিনি সুপ্রিম কোর্টে আপত্তি জানালেন। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া চেয়ে শনিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে মেসেজ এবং ফোন করেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপালকে নির্দেশ দিয়েছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ১৭টি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে। তা না হলে আদালত নিজেই হস্তক্ষেপ করবে। তবে রাজভবন মিডিয়া সেলের বক্তব্য, এটি আচার্যের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ নয়। বরং আদালত যথাযথ ভাবে মাননীয় রাজ্যপালের স্বাধীনতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে সম্মান জানিয়ে নিজের বিবেচনায় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। এক্স অ্যাকাউন্টে এ-ও জানানো হয়েছে, ২ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে, যেহেতু মামলাটি তালিকার বাইরেই তোলা হয়, মাননীয় অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে থাকতে পারেননি। ফলে প্রার্থীদের নিয়ে আপত্তি সম্বলিত সিলড কভারগুলি তখন পেশ করা সম্ভব হয়নি। তা পরে পেশ করা হয়েছে বলেই খবর।
যাদবপুর, কলকাতা সহ রাজ্যের মোট ১৭ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও স্থায়ী উপাচার্য নেই। এর মধ্যে যাদবপুর উপাচার্যহীন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে অধ্যাপক হিসেবে তাঁর চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার চারদিন আগেই গত সপ্তাহে অপসারিত করেছেন রাজ্যপাল। অন্য কাউকে উপাচার্য পদের দায়িত্বও দেওয়া হয়নি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘আচার্যের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য যাতে থাকেন, তা দেখা। কিন্তু এমন কাণ্ড চলছে, তাতে যাদবপুরের উপাচার্যহীন অবস্থা কত দিন চলবে, তাই বোঝা যাচ্ছে না।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)