দল ছাড়ার আগে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সমশের আলি। ছবি: সংগৃহীত।
লোকসভা ভোটের আগে দল ছাড়লেন বিনয়পন্থী মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য সমশের আলি। লিখিতভাবে দলের সাধারণ সদস্যপদ ছেড়ে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। শনিবার দলের সভাপতি বিনয় তামাংয়ের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দল ছাড়ার কথা জানিয়েছেন সমশের। দল ছাড়ার আগে মোর্চা ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দলে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করা যাচ্ছে না। দলের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হয়েছে। ফলে রাজ্য সরকার একের পর এক অনৈতিক কাজ করে গেলেও সেগুলি নিয়ে কিছু বলতে পারছি না।’’
সমশেরের আরও অভিযোগ, ‘‘সব কাজেই দুর্নীতি হচ্ছে। যোগ্যতা না দেখেই পছন্দের লোকেদের চাকরিতে ঢোকাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল। চুপ করে আর এই সব সহ্য করা যাচ্ছে না। তাই দল ছাড়লাম।’’ মোর্চা ছাড়লেও আপাতত অন্য দলে যোগ দিচ্ছেন না বলেই জানিয়েছেন তিনি। বরং মোর্চা ও তৃণমূলের অনৈতিক কাজকর্ম নিয়ে সামাজিক আন্দোলন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
সমশেরের দলত্যাগ নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি মোর্চার সভাপতি বিনয় তামাং। ফোন ধরেননি দলের সাধারণ সম্পাদক অনীত থাপা। ‘মেসেজ’ করলেও উত্তর দেননি। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা দার্জিলিংয়ের বিধায়ক অমর সিংহ রাই বলেন, ‘‘সমশেরের পদত্যাগ করার কথা শুনেছি। তবে কেন পদত্যাগ করলেন, তা জানি না।’’ পাহাড় তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি এলবি রাই বলেন, ‘‘আমাদের দল ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন সমশের। যদি কোনও দুর্নীতির প্রমাণ থাকে, উনি তা প্রকাশ করুন। আমরা যথাযথ পদক্ষেপ করব।’’
বিনয়পন্থী মোর্চা, তৃণমূল ও বিজেপি থেকে সম-দূরত্ব বজায় রেখে একজন প্রার্থী ঠিক করে লোকসভায় লড়াই করার জন্য পাহাড়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু করেছে ২২টি রাজনৈতিক সংগঠন। ফলে কিছুটা হলেও চাপ বেড়েছে বিনয়ের। সমশেরের বাড়ি কালিম্পং শহরে। মোর্চা নেতাদের একাংশের মতে, দার্জিলিঙে যে ভাবে তাদের প্রতিপত্তি বেড়েছে, কালিম্পংয়ে সে ভাবে বাড়েনি। তা ছাড়া হরকা বাহাদুর ছেত্রীর জন আন্দোলন পার্টিও কালিম্পংয়ে বেশ শক্তিশালী। এই পরিস্থিতিতে নানা অভিযোগ তুলে সমশের পদত্যাগ করায় দল আরও বেকায়দায় পড়ল।
মোর্চা সূত্রের খবর, সমশেরের দল ছাড়ার কথা জানাজানি হতেই শনিবার দুপুরে কালিম্পংয়ে বৈঠকে বসেন মোর্চার মেতারা। কেন সমশের দল ছাড়লেন বা অন্য কোনও দলে যোগ দেবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রবিবার সকালে দার্জিলিঙে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকে বসে ওই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন। তার আগে সমশেরকে নিয়ে দলের কোনও নেতাকে কিছু বলতে নিষেধ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy