প্রতীকী ছবি।
কাজের টোপ দিয়ে এক তরুণীকে বাড়িতে ডেকে পাঠিয়েছিল তাঁর পরিচিত যুবক। অভিযোগ, ওই যুবক ও তার সঙ্গী তরুণীকে ওই বাড়িরই একটি ঘরে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা করে। কোনও মতে তাদের হাত থেকে পালিয়ে ঘরের গ্রিলহীন জানলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে নিজেকে বাঁচান ওই তরুণী।
সোমবার দুপুরে বেলুড়ের চাঁদমারি এলাকার ওই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক সানি মাইতিকে গ্রেফতার করেছে নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ এবং আটক করা হয়েছে সঙ্গী নাবালককে। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টা, মারধরের মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, হুগলির আদি সপ্তগ্রামের বাসিন্দা ওই তরুণী রং মিস্ত্রি। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় রয়েছে মার্বেল মিস্ত্রি সানির। দু’জনে একসঙ্গে কাজও করেন। ওই তরুণী তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, সানি তাঁকে নেতাজিনগরে একটি বাড়িতে রঙের কাজ আছে বলেছিল। এক হাজার টাকা অগ্রিম দেবে। সে জন্য সোমবার এসে দেখা করতে। সেই মতো ওই তরুণীকে নিজের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল সানি। নেতাজিনগরের বাসিন্দা আরতি সরকার নামের এক প্রৌঢ়ার বাড়ির দোতলায় সপরিবার থাকত ওই যুবক। দিন কয়েক আগে স্ত্রী ও ছেলেকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল সানি।
তরুণীর দাবি, ওই যুবক তাঁকে জানিয়েছিল, সে একতলায় থাকে। দোতলায় থাকেন আরতিদেবী। তাঁর ঘরই রং করতে হবে। অভিযোগ, ঘর দেখানোর পরে আচমকাই সানি ও এক কিশোর ওই তরুণীকে জোর করে একটা ঘরে ঢুকিয়ে হাত-পা বেঁধে দেয়। সেই ঘরের দরজা বন্ধ করে ভিতরে বসে ছিল ওই দু’জনও। মঙ্গলবার ওই তরুণী বলেন, ‘‘কিছু ক্ষণ পরে আমি বাথরুমে যাব বলায় ওরা পায়ের বাঁধন খুলে দেয়। বাথরুমের দরজা বন্ধ করে গ্রিলহীন জানলা থেকে ঝাঁপ দিই।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরে ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালা দিয়ে সানি এবং ওই নাবালক পালায়। পরে পুলিশ গিয়ে তালা ভেঙে তরুণীর ব্যাগ উদ্ধার করে। তবে হাত-পা বেঁধে রাখার কোনও নমুনা ওই ঘরে মেলেনি বলেই দাবি তদন্তকারীদের। বাঁধার সময়ে ওই তরুণী চেঁচামেচি করেছিলেন কি না তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দিন বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ চাঁদমারির নেতাজিনগরে একটি গলিতে ভারী কিছু পড়ার শব্দ পান স্থানীয়েরা। এর পরেই কয়েক জন বাসিন্দা দেখেন বছর তিরিশের এক তরুণী কোনও মতে হামাগুড়ি দিয়ে গলি থেকে বড় রাস্তার দিকে বেরিয়ে আসছেন। ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকারও করছেন তিনি। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী সবিতা সরকার বলেন, ‘‘দোকান থেকে বেরিয়ে এসে তরুণীকে জিজ্ঞাসা করায় ঘটনাটি জানতে পারি। ওঁর থেকে ফোন নম্বর নিয়ে আত্মীয়দের খবর দিই।’’ এর পরে স্থানীয়েরাই একটি টোটোয় চাপিয়ে তরুণীকে বেলুড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে পরিজনেরা তাঁকে নিয়ে গিয়ে চুঁচুড়া-ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর কোমরে এবং পায়ে চোট লেগেছে।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) অংশুমান সাহা বলেন, ‘‘ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। রাতেই দু’জনকে ধরা হয়েছে। ওই তরুণীর সঙ্গেও কথা বলে এবং সানিকে পুলিশি হেফাজতে এনে বিস্তারিত জানার চেষ্টা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy