প্রতীকী ছবি
কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। কিন্তু তাঁরা ছড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। তাই ভোটে অভাবনীয় সাফল্যের পরেও একসঙ্গে উদ্যাপনে মেতে উঠতে পারছেন না সকলে মিলে। কোনও দলের আবার এ রাজ্যে বেশি আসন দখলে থাকা সত্ত্বেও নাকি সাফল্য উদ্যাপনের মানসিকতাই নেই। শুক্রবার সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে এমনই চিত্র রাজ্যের দুই যুযুধান শিবির— বিজেপি এবং তৃণমূলের আইটি শাখায়।
লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০১৮ সালের শুরু থেকেই নিজের নিজের মতো করে কাজ শুরু করেছিল দু’টি দলেরই আইটি শাখা। দলীয় ভবনের বাইরে পৃথক জায়গায় নিজেদের ‘ওয়ার জ়োন’ তৈরির পাশাপাশি দলের নিচু স্তর পর্যন্ত কাজ পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন প্রত্যেকেই। তবে দিনের শেষে রাজ্যে বিজেপি-র ১৮টি আসন দখল করা দেখে অনেকেই বলছেন, বিজেপি-র আইটি শাখা বাকিদের অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে।
বিজেপি-র আইটি শাখার সঙ্গে যুক্ত অনেকে জানালেন, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৬, মুরলীধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপি-র দফতরের বাইরে অন্যত্র ঘর ভাড়া নিয়ে কাজ শুরু করেন তাঁরা। প্রথমেই দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রের জন্য এক জন করে, মোট ৪২ জন আইটি ইনচার্জ নিযুক্ত করা হয়। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য নিয়োগ হয় আলাদা আলাদা আইটি শাখা ইনচার্জ। তাঁদের নীচে কাজ করেছেন এক জন করে মণ্ডল আইটি শাখা এবং তারও নীচে বিজেপি-র শক্তি কেন্দ্রের আইটি শাখার ইনচার্জেরা।
এর পরে ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের জন্য আলাদা আলাদা ‘হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ’ খোলার পরিকল্পনা হয়। আইটি শাখার এক কর্মীর কথায়, ‘‘ভোট গণনার দিন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ খুলতে পেরেছি আমরা। এমনকি, প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে প্রায় এক হাজারটি করে হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছিল।’’ এ ছাড়াও অভিযানের অন্যতম হাতিয়ার ছিল ফেসবুক পেজ। বিজেপি-র হিসেব, গত দু’মাসে সেখানে প্রায় ২ কোটি ‘লাইক’ পড়েছে। তবে পৌঁছনো গিয়েছে তারও প্রায় দশ গুণ বেশি লোকের কাছে। যে-ই পোস্টে ‘লাইক’ বা মন্তব্য করেছেন, তাঁদের ‘ওয়াল’ হয়ে বিজেপি-র কর্মসূচি পৌঁছে গিয়েছে বিভিন্ন ভোটদাতার সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে।
কিন্তু কী সেই কর্মসূচি? বিজেপি-র আইটি শাখার প্রধান উজ্জ্বল পারেখ বলেন, ‘‘জয় শ্রীরাম শুনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর তেড়ে যাওয়া আমরা ভাইরাল করেছি। তেমনই প্রচার হয়েছে কেন্দ্র ধরে ধরে। যেমন, হুগলি কেন্দ্রের তৃণমূলপ্রার্থী রত্না দে নাগ নিজে চিকিৎসক। চাইল্ড কেয়ার স্পেশ্যালিস্ট। কিন্তু খোঁজ করে দেখুন, দেশের সব ক’টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে শিশুদের দেখভালে হুগলি সবচেয়ে পিছিয়ে।’’
উল্টো দিকে মোদী বিরোধী প্রচারকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হোয়াট্সঅ্যাপের বদলে ফেসবুকে বেশি ভরসা রেখেছিল তৃণমূল। সার্বিক ‘লাইক’ এবং মন্তব্যের বিচারে তারা এগিয়ে থাকলেও বিজেপি-র একের পর এক আসনলাভ আটকাতে পারেনি। এই প্রেক্ষিতে তৃণমূলের আইটি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাক্তন সেনা আধিকারিক কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী বলেন, ‘‘কথা বলার মতো মনের অবস্থা নেই। আমরা চেষ্টা করেছিলাম।’’
কথা বিশেষ বলেন না বিজেপি-র জয়ের অন্যতম কাণ্ডারী বলে ধরা হচ্ছে যাঁকে, সেই উজ্জ্বলও। উত্তর কলকাতার বাসিন্দা এই আইটি বিশেষজ্ঞ এক আইটি সংস্থার হয়ে ২০১২ সাল থেকে বিজেপি-র দায়িত্বে রয়েছেন। ভাল ফলাফল নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি নেতাদের থেকে দারুণ সাহায্য পেয়েছি। দিল্লিতে বিজেপি-র আইটি শাখার প্রধান অমিত মালব্যর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করা এক দারুণ অভিজ্ঞতা। পরের লক্ষ্য ২০২১।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy