Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

হুমকিতেই রইল বন্‌ধ

বিমল গুরুঙ্গ বারবার বন্‌ধ চালানোর কথা বললেও যে এ ভাবে জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করবে, ভাবতে পারেননি কট্টরপন্থীরা। পরিস্থিতি ‘হাতের বাইরে’ চলে যাচ্ছে বুঝে তাঁরাও নেমে পড়েন রাস্তায়।

জ্বলন্ত: কার্শিয়াং থেকে চটকপুর যাওয়ার পথে পুড়ছে গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

জ্বলন্ত: কার্শিয়াং থেকে চটকপুর যাওয়ার পথে পুড়ছে গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

কিশোর সাহা ও অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি ও কার্শিয়াং শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৩
Share: Save:

পাহাড়ের ব্যবসায়ীরা মিলে শনিবার সিদ্ধান্ত নেন, রবিবার থেকে দার্জিলিঙের দোকানপাট খুলে দেওয়া হবে। তা আটকাতে মরিয়া কট্টরপন্থীরা এ দিন গাড়ি পুড়িয়ে, ভাঙচুর করে, এমনকী প্রাণে মারার হুমকি-পোস্টারে ‘বাঁচিয়ে রাখলেন’ বন্‌ধকে। নাম না করে অনেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, বহু জায়গায় বিমল গুরুঙ্গের নাম বলে টেলিফোনে হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

ফলে ১০১ দিন পেরিয়ে এগিয়ে চলল অনির্দিষ্টকালের বন্‌ধ।

অথচ সকালটা ছিল অন্যরকম। এ দিন দার্জিলিঙের বিখ্যাত গ্লেনারিজ থেকে ম্যাল চৌরাস্তা, চকবাজার, জজবাজার এলাকায় দোকান খুলতে শুরু করে। গাড়ি সমতলে নামার প্রস্তুতি নেয়। কালিম্পং, মিরিক এবং কাশির্য়াঙেও খুলে যায় কিছু দোকানপাট। সর্বত্র শুরু হয় পুলিশ ও সিআরপিএফের টহল। বন্‌ধের ফতোয়া উপেক্ষা করে পাহাড় স্বাভাবিক হতে থাকায় রাস্তায় নেমে আসেন বাসিন্দারা।

বিমল গুরুঙ্গ বারবার বন্‌ধ চালানোর কথা বললেও যে এ ভাবে জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করবে, ভাবতে পারেননি কট্টরপন্থীরা। পরিস্থিতি ‘হাতের বাইরে’ চলে যাচ্ছে বুঝে তাঁরাও নেমে পড়েন রাস্তায়।

আরও পড়ুন: মোড় ঘুরতেই দেখি সামনে জ্বলছে গাড়ি

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথমে লেবঙের কাছে একটি গাড়ি পোড়ানো হয়। তার পরে গাড়ি ভাঙচুর হয় সোনাদার কাছে। কার্শিয়াঙের সিপাহিধুরার দিকে, পাহাড় যাতে স্বাভাবিক হয় সেই প্রচার করছিলেন অনীত থাপা। তাঁর কনভয় লক্ষ করে এক দল যুবক কটূক্তি করতে থাকেন বলে অভিযোগ। অনীতের অনুগামীরা তাঁদের তাড়া করে ধরে ফেলেন এবং পাল্টা মারধর করেন বলে অভিযোগ। বিকেলে চটকপুর, দিলারামের কাছে আরও গাড়ি জ্বালানো হয়।

দুপুরে কালিম্পঙে দোকানপাট খোলা শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে ডম্বরচক লাগোয়া এলাকায় পোস্টার পড়ে। তাতে বলা হয়, দোকান খুললে বা গাড়ি চালালে খুনও হয়ে যেতে পারেন! মোর্চা অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের এক প্রবীণ নেতা জানান, আলাদা রাজ্যের জন্য পাহাড়বাসী আন্দোলন জারি রেখেছে। সেখানে তাদের ফাঁসানোর জন্য এ সব চক্রান্ত হচ্ছে।

কিন্তু এই হুমকি, হামলায় দার্জিলিঙের দোকানপাট ফের বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক জন ব্যবসায়ীর অভিযোগ, এর মধ্যে তাঁদের কাছে হুমকি ফোনও এসেছে। পুলিশ জোর করে কিছু দোকানপাট খোলানোর চেষ্টা করলে ব্যবসায়ীদের একাংশের সঙ্গে তাদের তর্কাতর্কি, ধস্তাধস্তিও হয় বলে অভিযোগ। আক্রান্ত সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিও।

তাই দিনের শেষে দার্জিলিং রয়ে গেল অনিশ্চয়তার মধ্যেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE