কড়া নিরাপত্তায় বৃহস্পতিবারও ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে আনা হয়েছে শিয়ালদহ আদালতে। — ফাইল চিত্র।
গত দু’দিনের মতো বৃহস্পতিবারও আদালত চত্বরে কোনও রকমের মন্তব্য করতে পারলেন না আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁকে নিয়ে আগের দু’দিনের ‘কৌশল’ই বজায় রাখল কলকাতা পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিচারের চতুর্থ দিনে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হয়। কনভয়ে ছিল বেশ কয়েকটি প্রিজ়ন ভ্যান এবং কালো কাচ তোলা একটি সাদা গাড়ি। সূত্রের খবর, ওই সাদা গাড়িতেই ছিলেন ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার রুদ্ধদ্বার এজলাসে তিন জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জন চিকিৎসক এবং এক জন ভিডিয়োগ্রাফার। শুক্রবার আরজি কর মামলার শুনানি নেই শিয়ালদহ আদালতে। সোমবার থেকে পরের চার দিনে দু’জন করে সাক্ষ্য দেবেন।
বিচারের প্রথম দিনে গত সোমবার আদালত থেকে প্রিজ়ন ভ্যানে বার হওয়ার সময় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার চিৎকার করে দাবি করেন, তিনি ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’। এর পরেই সক্রিয় হয় কলকাতা পুলিশ। মঙ্গলবার থেকে আদালতে তাঁর আসা-যাওয়ায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার কিছুই বলার সুযোগ পাননি তিনি। বুধবার যদিও বা হাতের ইশারায় কিছু বলার চেষ্টা করেছিলেন অভিযুক্ত, বৃহস্পতিবার সেই সুযোগও ঘটেনি। আদালত চত্বরে ঢোকা এবং বার হওয়ার সময় ধৃতকে দেখাই যায়নি। শুনানি শেষে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে।
প্রতি দিনের মতো বৃহস্পতিবারও অনির্বাণ দাসের এজলাসে রুদ্ধদ্বার (ইন ক্যামেরা) কক্ষে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব চলে। সাক্ষ্য দেন দুই চিকিৎসক-সহ তিন জন। সোমবার থেকে প্রতি দিন দু’জন করে সাক্ষ্য দেবেন।
গত সোমবার থেকে আরজি করে ধর্ষণ-খুনের মামলার বিচার শুরু হয়েছে শিয়ালদহ আদালতে। প্রথম দিন সাক্ষ্য দিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা এবং প্রতিবেশী এক ‘কাকু’। মঙ্গলবার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয় আরজি করে ঘটনার রাতে নির্যাতিতার সঙ্গে ডিউটিতে থাকা তাঁর দুই সহকর্মী জুনিয়র ডাক্তারের। বুধবার আরও দুই চিকিৎসকের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। তাঁদের এক জন সিনিয়র ডাক্তার। অন্য জন মহিলা ডাক্তার।
গত ৯ অগস্ট আরজি করের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে ওই মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগে সেই রাতেই কলকাতা পুলিশের ফোর্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাক থেকে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তভার পায় সিবিআই। ঘটনার ৫৮ দিন পর গত ৭ অক্টোবর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা চার্জশিট জমা দেয়। চার্জশিটে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছিল, ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারই যে আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় জড়িত, তার বহু প্রমাণ হাতে রয়েছে। সংগৃহীত বয়ান, ভিডিয়ো এবং ফরেন্সিক বা সায়েন্টিফিক রিপোর্টের ভিত্তিতে ধৃতের বিরুদ্ধে মোট ১১টি ‘প্রমাণ’ পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
চার্জশিটে একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে নাম থাকার পর থেকে বার বার মুখ খোলার চেষ্টা করছেন ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার। কখনও ভরা এজলাসে ধৃত দাবি করেছেন, তাঁকে বলতে দেওয়া হচ্ছে না। কখনও আবার প্রিজ়ন ভ্যান থেকে চেঁচিয়ে দাবি করেছেন, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। সোমবার বিচার শুরুর দিন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার এবং ডিসি ডিডি (স্পেশ্যাল)-র নামে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তার আগে চার্জ গঠনের দিনও শিয়ালদহ আদালত থেকে বেরোনোর সময় নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবি করে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছিলেন ধৃত। ওই দু’দিনের পর সতর্ক হয় পুলিশ। মঙ্গলবার থেকে আদালত চত্বরে আর কিছু বলার সুযোগই পাননি ধৃত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy