আগুন জ্বলছে রামচন্দ্রপুর পাহাড়ে নিজস্ব চিত্র।
১৪ ঘন্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও পাহাড়ে এখনও আগুন জ্বলছে দাউ দাউ করে। ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর বনাঞ্চলের সাঁতুড়ি বিটের রামচন্দ্রপুর পাহাড়ে। প্রায় আড়াইশো ফুট উঁচু পাহাড় জুড়ে লেলিহান শিখা ২৫ কিলোমিটার দূর থেকেও দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কার্যত অসহায় বন দফতর এবং দমকল বিভাগ l কারণ এই পাহাড় চূড়ায় ওঠার নাকি কোনও রাস্তাই নেই! তাই প্রকৃতির উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন তাঁরা।
পুরুলিয়ার কংসাবতী উত্তর বনবিভাগের অন্তর্গত রঘুনাথপুর রেঞ্জের বনকর্মীদের দাবি, প্রকৃতির আপন নিয়মেই এই আগুন এক সময় নিভে যাবে। বুধবার সন্ধ্যায় গ্রামবাসীরা বন দফতরের খবর দিয়েছিলেন, রামচন্দ্রপুর পাহাড়ে আগুন লেগেছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, বনকর্মীরা গিয়ে রাতভর ‘ফায়ার ব্লোয়ার দিয়ে পাহাড়ের নীচের অংশের আগুন নিভিয়েছিলেন। কিন্তু পাহাড় চূড়ায় আগুন নেভাতে না পেরে মানুষজনকে সতর্ক করে ভোররাতে কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন তাঁরা।
রঘুনাথপুর বনাঞ্চলের আধিকারিক বিবেক ওঝা বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, ‘‘২৫০ ফুট উঁচু পাহাড় চূড়ায় আগুন জ্বলছে। ওখানে ওঠার কোনও রাস্তা নেই। খুবই দুর্গম। তাই আমাদের সত্যিই আর কিছু করার নেই। আশা করছি, দুপুরের পর আগুন নিভে যাবে। আমরা মানুষজনকে সাবধান করেছি, আপাতত ওই পাহাড়ে না যেতে l’’ গ্রামবাসীরা দাবি, এই আগুনে ক্ষতি হয়ে যাবে বনাঞ্চলের একটা বড় অংশ। সেই সঙ্গে প্রাণহানি হবে বহু ছোটখাটো বন্যপ্রাণীর। তবে বন দফতরের দাবি, এই পাহাড়-জঙ্গলে তেমন কোনও বন্যপ্রাণ নেই l ওখান থেকে কিছুটা দূরে বরন্তি পাহাড়ে চিতল হরিণ, হায়না, সজারু, বুনো শুয়োর রয়েছে।
কিন্তু স্থানীয় গ্রামবাসীদের একাংশের প্রশ্ন, যে পাহাড়ে ওঠার কোনও রাস্তাই নেই বলে দাবি করছে বন দফতর, সেখানে কী ভাবে নিশ্চয়তার সঙ্গে বলছে বন্যপ্রাণ নেই? তাঁদের দাবি, রামচন্দ্রপুর পাহাড়ে হরিণ না থাকলেও হায়না, শেয়াল, বুনো খরগোশ, সজারু, বন বেড়াল, অজগর ছাড়াও বহু পাখি বসবাস করে। এই ভাবেই গত বছরের মার্চ থেকেই পুরুলিয়ার একের পর এক বনাঞ্চলে আগুন লাগার ঘটনা সামনে আসছে। ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে হেক্টরের পর হেক্টর বনাঞ্চলের। মৃত্যু হচ্ছে হহু ছোটখাটো বন্যপ্রাণীর। গত মাসে পুরুলিয়ার বিভিন্ন বনাঞ্চলে টানা ৭ দিনের আগুনে ১০০ হেক্টরের বেশি জঙ্গল ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানায় বন দফতর। স্থানীয় কাঠকয়লা ব্যবসায়ীদের একাংশ এই আগুন লাগার ঘটনার জন্য দায়ী বলেও অভিযোগ ওঠে।
এরপর থেকে তৎপর হয়ে পুরুলিয়া জেলার সমস্ত জঙ্গলে ঢোকার মুখে ‘নাকা চেকিং’ শুরু হয়। যানবাহন থেকে পথচারীদের তল্লাশি এখনও চালাচ্ছেন বনকর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy