Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বর্ষণে ফুলচাষে ক্ষতি, চিন্তা যোগানে

অতিবৃষ্টিতে রাজ্যজুড়ে ক্ষতি হয়েছে ফুলচাষে। ফলে ইতিমধ্যেই এক লাফে বেড়ে গিয়েছে ফুলের দাম। এ দিকে, গোড়া পচে গিয়ে অনেক জায়গাতেই মরে যাচ্ছে মরসুমি ফুল। কোথাও আবার বাগানে জল জমে যাওয়ায় চাষ করা যাচ্ছে না দুর্গা পুজোয় প্রয়োজনীয় ফুলের।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৫ ০২:২৮
Share: Save:

অতিবৃষ্টিতে রাজ্যজুড়ে ক্ষতি হয়েছে ফুলচাষে। ফলে ইতিমধ্যেই এক লাফে বেড়ে গিয়েছে ফুলের দাম। এ দিকে, গোড়া পচে গিয়ে অনেক জায়গাতেই মরে যাচ্ছে মরসুমি ফুল। কোথাও আবার বাগানে জল জমে যাওয়ায় চাষ করা যাচ্ছে না দুর্গা পুজোয় প্রয়োজনীয় ফুলের। এমনটা চলতে থাকলে পুজোর মরসুমে ফুলের দাম আকাশছোঁয়া হবে বলেই জানাচ্ছেন ফুলচাষীরা।

সারা বাংলা ফুলচাষী ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নারায়ণ নায়েক জানান, অতি বর্ষণে প্রচুর পরিমাণে গাঁদা, দোপাটি, অপরাজিতা, রজনীগন্ধার মতো নরম পাপড়ির ফুল নষ্ট হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পচে যাচ্ছে ফুল। আর যেগুলি বাঁচছে, সেগুলির পাপড়িতে কালো দাগ হয়ে যাচ্ছে। গুণমান নষ্ট হচ্ছে সেগুলির। এ দিকে আবার পুকুর উপচে মার খাচ্ছে পদ্ন ফুলের চাষও।

নারায়ণবাবু বলেন, ‘‘গোটা জুলাই মাস জুড়ে বর্ষার জন্য যত না বৃষ্টি হয়েছে, তার চেয়ে বেশি হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে। এ দিকে, দুর্গা পুজোর জন্য এখন থেকেই মরসুমি ফুলের চাষ করার দরকার ছিল। কিন্তু বাগানে জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় সেই কাজও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।’’

নদীয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়ার মতো জেলাগুলিতে ফুলের চাষ হয়। ফুলচাষীরা জানান, গাঁদা, রজনীগন্ধার যোগান আসে মূলত নদীয়া থেকে। পূর্ব মেদিনীপুরে চাষ হয় বেল, জুঁই, গাঁদার। পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে আসে গাঁদা, গোলাপ। তাঁরা জানান, শ্রাবণ মাসে বিয়ের দিন থাকলেও বৃষ্টির কারণেই অনুষ্ঠান এ সময়ে কম হয়। ফুলের অধিকাংশ বিক্রি হয় পুজোর কাজে। অফিসগুলিতে কোনও অনুষ্ঠানে মাঝেমধ্যে ব্যবহার করা হয়। ফলে দামটা বেশি হলেও এখনই তা উপলব্ধি করা যাচ্ছে না। তা টের পাওয়া যাবে দুর্গাপুজোর সময়ে।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ফুলচাষী ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বিশ্বনাথ ভক্তা জানান, জারবেরা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, অ্যাস্টারের মতো মরশুমি ফুলের গাছে গোড়া-পচা রোগে সংক্রমিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে বাজারে যে সব ফুল মিলছে সেগুলি দু’মাস আগে রোপন করা হয়েছিল। ফলে এ সময়ে বা আর কিছু দিনের মধ্যে ফুলের চাষ না করা গেলে পুজোর সময়ে চাষীদের উৎপাদন কম হবে। বাড়বে ফুলের দাম।’’

হাওড়ার মল্লিকঘাট ফুল বাজারের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গাঁদার ঝুরো ফুল যেখানে ২০ থেকে ২৫ টাকা কিলো দরে বিক্রি হত, এই ক’দিনে তা পৌঁছে গিয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। তিন ফুট লম্বা কুড়িটি করে লাল গাঁদার মালার দাম ৩২০টাকার আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। আর ওই ধরনের হলুদ গাঁদার মালার দাম উঠে গিয়েছে ৪২০ টাকায়। দোপাটি ফুলের কিলো প্রতি দাম ১০-১৫ টাকার জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে ১৪০ টাকায়।

নিউ মার্কেটের ফুল ব্যবসায়ী সুরজিতকুমার দাঁ জানান, রজনীগন্ধার ডজনের স্টিক ৭০-৮০ টাকার জায়গায় মিলছে ১২০-১৩০ টাকায়। অতি বৃষ্টিতে বাজারে অমিল সিকিম ও কালিম্পং থেকে আসা গ্ল্যাডিওলাস। তিনি বলেন, ‘‘পদ্মের চাষের ক্ষতি হওয়ায় পুজোর সময়ে তার সরবরাহও বাজারে পদ্মের সরবরাহ কম থাকবে। ফসলে পুজোর সময় এক একটি পদ্ম ২৫ টাকায় বিক্রি হবে। এখনই বাজারে পদ্ম ফুল ১২টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Flower rain nadia 24 pargana new market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE