প্রতীকী ছবি।
তেহট্টের পাঁচ করোনা আক্রান্তকে ভর্তি করা হল বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। সেই সঙ্গে ওই পরিবারের আরও আট জনকে পাঠানো হল রাজারহাটের কোয়রান্টিনে। আপাতত সেখানে তাঁরা পর্যবেক্ষণে থাকবেন।
ওই পরিবারের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতর রীতি মতো উদ্বেগে। দিল্লি থেকে তেহট্টের বাড়ি ফেরার সময় ওই আক্রান্তেরা কত জনের সংস্পর্শে এসেছিলেন, সেটাই এখন সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। শুধু তাই নয়, বাড়ি ফেরার পর তাঁরা কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, কাদের সঙ্গে মেলামেশা করেছেন, এ সব প্রশ্নই এখন ভাঁজ ফেলছে স্বাস্থ্য দফতরের কপালে।
প্রাথমিক ভাবে স্বাস্থ্য দফতর জানতে পেরেছে, রাজধানী এক্সপ্রেসে তেহট্টের যুবতীরা সংরক্ষিত কামরাতেই কলকাতায় এসেছিলেন। কিন্তু শিয়ালহ নামার পর তাঁরা লালগোলা প্যাসেঞ্জারে বাড়ি ফিরেছিলেন। ওই ট্রেনের অসংরক্ষিত কামরায় উঠেছিলেন তাঁরা। ফলে দিল্লি থেকে বেথুয়াডহরি— দু’বার ট্রেন বদল করে বাড়ি পৌঁছনোর পথে প্রচুর মানুষের সংস্পর্শে এসেছেন প্রত্যেকেই। রাজধানী এক্সপ্রেসের রিজার্ভেশন তালিকা থেকে কিছুটা হলেও একটা হিসেব বার করা সম্ভব। কিন্তু লালগোলা প্যাসেঞ্জারের যাত্রীদের খুঁজে বের করা কার্যত অসম্ভব। ফলে এ ক্ষেত্রে বিপদটা সব থেকে বেশি। রেলের সহযোগিতায় রাজধানী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের একটা তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তা দ্রুত খতিয়ে দেখার পর, ওই তালিকায় থাকাদের আপাতত হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
এখানেই বিষয়টি মিটছে না। আক্রান্তরা বেথুয়াডহরি স্টেশনে নেমে অটো করে বাড়ি ফিরেছিলেন। সেখানে ফেরার পর প্রতিবেশীদের সঙ্গে দেখা করেছেন। বাজারে গিয়েছেন। তাঁদের বাড়িতেও অনেকে এসেছেন। জেলা প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা সেই তালিকাও তৈরি করছেন। ইতিমধ্যে যাঁদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হচ্ছে। সেই তালিকা প্রস্তুত করতেও বেশ কিছুটা সময় লেগে যেতে পারে।
আরও পড়ুন- নয়াবাদের করোনা-আক্রান্ত বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি
আরও পড়ুন- রাজস্থান ও তামিলনাড়ুতে খোঁজ মিলল আরও ৪ করোনা-আক্রান্তের
শনিবার তিনটি অ্যাম্বল্যান্সে করে আক্রান্ত এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কলকাতায় আনা হয়। আক্রান্ত পাঁচ জনকে ভর্তি করা হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। বাকি ৮ জনকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজারহাট কোয়রান্টিন সেন্টারে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, আক্রান্তদের মধ্যে ২৭ বছরের এক যুবতী ছাড়াও তাঁর ন’মাস ও ছ’বছরের দু’টি মেয়ে রয়েছে। তা ছাড়াও ৪৫ বছরের এক মহিলা ও তাঁর ১১ বছরের ছেলে আছেন। তাঁরা ওই যুবতীর পরিজন।
চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চললে তেহট্টের যুবতীর সূত্রে একসঙ্গে এত জন মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হতেন না। যুবতীর এক ভাই ১৬ মার্চ লন্ডন থেকে দিল্লিতে ফেরেন। তাঁকে নিতে যুবতী ছাড়াও পরিবারের আরও কয়েক জন দিল্লি যান। সেখানে পারিবারিক সম্মিলনী হয়। তার পরে বিলেত ফেরত ভাইয়ের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। জানা গিয়েছে, ওই যুবক দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি। চিকিৎসকেরা ওই যুবতীকে ২৮ দিন কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেন। কিন্তু যুবতী এবং তাঁর পাঁচ সঙ্গী রাজধানী এক্সপ্রেসে চলে আসেন শিয়ালদহে। লালগোলা প্যাসেঞ্জারে পৌঁছন বেথুয়াডহরিতে। সেখান থেকে অটোয় তেহট্টের বার্নিয়া গ্রামের বাড়িতে ফেরেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy