জাহাজে তোলার পরে সেই ভারতীয় মৎস্যজীবী (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র
লাইফ জ্যাকেট ছিল না গায়ে। উত্তাল সমুদ্রে ট্রলার ডুবে যাওয়ার পরে কোনওক্রমে ভেসে থাকেন জলে। দিন য়ায়, রাত যায়। সাড়ে চার দিনে সমুদ্রের স্রোত তাঁকে টেনে নিয়ে গেল চট্টগ্রামের উপকূলে। সেখানে একটি পণ্যবাহী জাহাজের নাবিকেরা তাঁকে দেখতে পেয়ে লাইফ জ্যাকেট ছুড়ে দেন। দু’ঘণ্টা চেষ্টার পরে জল থেকে তোলা হয় তাঁকে। বুধবার বিকেলে উদ্ধারের পরে জল ও খাবার খেয়ে একটু চাঙ্গা হয়ে তিনি জানান, নাম রবীন্দ্রনাথ ওরফে কানু দাস। বাবার নাম মধুমঙ্গল দাস। বাড়ি নামখানায়।
কানু জানিয়েছেন, অন্য ১০ জন মৎস্যজীবীর সঙ্গে তিনি ট্রলারে চড়ে সাগরে গিয়েছিলেন মাছ ধরতে। সমুদ্রে বাংলাদেশের জলসীমার কাছে উথালপাথাল ঢেউয়ে সেই ট্রলার উল্টে যায়। কিন্তু সেটা যে কত দিন আগে, তা ঠিক করে বলতে পারেননি কানু। কানুর হিসেবে অন্তত সপ্তাহ খানেক আগের ঘটনা। তবে শনিবার ভোরে হয়েছিল এই ট্রলারডুবি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা প্রশাসন জানিয়েছে, নিখোঁজের তালিকায় কানু ওরফে রবীন্দ্রনাথের নাম রয়েছে।
চট্টগ্রামের এসআর শিপিংয়ের জাহাজ এমভি জাওয়াদের ক্যাপ্টেন এস এম নাসিরুদ্দিন বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বুধবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টা (ভারতীয় সময় ১০.৩০) নাগাদ নাবিকেরা উত্তাল সাগরে এক জনকে ভাসতে দেখেন। তিনি যে বেঁচে রয়েছেন, তা বোঝা যাচ্ছিল। জাহাজ থেকে বয়া ও লাইফ জ্যাকেট ছুড়ে দেওয়া হয়। কানু জ্যাকেটটি ধরতে পারলেও বয়াটি ভেসে যায়। বাংলাদেশের তটরক্ষীদের জানানো হলেও খারাপ আবহাওয়ার জন্য তাদের উদ্ধারকারী জাহাজ এগোতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজ শুরু করেন পণ্যবাহী জাহাজটির নাবিকেরা। প্রায় একটার সময়ে কানুকে উদ্ধার করে ডেকে তোলা যায়।
উদ্ধারের সময়ে কানু প্রায় অচেতন ছিলেন। কিন্তু প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ধীরে ধীরে তাঁর জ্ঞান ফেরে। নাবিকেরা কানুকে গরম পোশাক দেন। জল ও গরম কফি খাওয়ানো হয়। এর পরে কথা বলা শুরু করেন কানু। নিজের পরিচয় দেন। নাম, বাবার নাম, ঠিকানা জানান।
বুধবার রাত পর্যন্ত ভারতীয় মৎস্যজীবীকে জাহাজেই শুশ্রূষা করা হচ্ছে। কিন্তু কী ভাবে সাড়ে চার দিন তিনি সাগরে ভেসেছিলেন, নিজেও বুঝতে পারছেন না কানু। দক্ষিণ ২৪ পরগনা প্রশাসনের তরফে তাঁর বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy