যে লেবু ১০ টাকায় পাঁচটা ছিল। সেটা এখন ১০ টাকায় একটা। বিশ্বাস হচ্ছে না।’’ তবে প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, কেউ কালোবাজারি করতে চাইলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
ফাইল চিত্র।
চাষির ঘরে উঠতে শুরু করেছে ‘গোলাপি আনাজ’ পেঁয়াজ। কিন্তু মুর্শিদাবাদে পেঁয়াজ সংরক্ষণের সুবিধা নেই। চাষিদের অভিযোগ, বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাটে-বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা কেজি দরে। সেই পেঁয়াজের দাম চাষিরা পাচ্ছেন ৬ থেকে বড় জোর ৭ টাকা কেজি। ফলে চাষের খরচই উঠছে না বলে দাবি চাষিদের। নওদার এক চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিকল্প উপায় না থাকায় এক প্রকার বাধ্য হয়েই পেঁয়াজ চাষ করতে হয়। কিন্তু এক দিকে ফলন কম, অন্য দিকে খরচ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। খরচের টাকাটুকুই উঠছে না।’’
বিশেষ করে পেঁয়াজ সংরক্ষণের সুযোগ না থাকায় খেত থেকে তোলার পরেই তা বিক্রি করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ চাষিদের। জুলফিকার আলি নামে এক চাষি বলেন, ‘‘পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে দাম বাড়লে বিক্রি করব, তারও কোনও উপায় নেই। তাই কম দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে।’’ উদ্যানপালন দফতরের এক আধিকারিক জানান, অনেক চাষি ঘরোয়া পদ্ধতি ও কাঁচাগোলায় পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে থাকেন। বেশ কিছু চাষিকে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে বলে উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। রাজ্যের উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহা মুর্শিদাবাদেরই বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘পেঁয়াজ সংরক্ষণের বন্দোবস্ত করার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।’’
কেন ফলন কম? উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ১৬ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়। তার মধ্যে সাড়ে ছ’হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ করে থাকেন নওদার চাষিরা। সেই পেঁয়াজ চাষির ঘরে উঠতে শুরু করেছে। অনেক চাষি পেঁয়াজ তোলার পরে পরেই ওই খেতে পাট বীজ বুনতে শুরু করেছেন। তবে চাষিরা বলছেন, এ বছর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায়, বিশেষ করে মাঘ-ফাল্গুন মাসে একাধিক বার বৃষ্টির কারণে ফলন অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম হচ্ছে। অন্যান্য বছর এক বিঘা খেতে ৩৫-৪০ কুইন্টাল পেঁয়াজ ফলে থাকে। কিন্তু এ বছর খেতের ধরন অনুযায়ী ২৫ থেকে বড় জোড় ৩০ কুইন্টাল পেঁয়াজ ফলেছে বিঘা প্রতি। তা ছাড়া পেঁয়াজ বীজ থেকে শুরু করে সার, ছত্রাকনাশক সব কিছুর দামই বেড়েছে।
তার মধ্যে এই গরমে পাতিলেবুর দামেও আগুন। বেলডাঙার পাইকারি ও খুচরো বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, গত সপ্তাহের শেষ থেকে পাতিলেবুর পাইকারি দাম ছিল এক একটা ৪-৬ টাকা। সেটা খুচরো বাজারে ছোটো মাপের দাম ৮ টাকা ও একটু বড় হলেই ১০ টাকা।
কিন্তু কেন এই অবস্থা? গরম পড়তেই পাতিলেবুর চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু পাতিলেবু এখন সে ভাবে হয় না। তার সঙ্গে দীর্ঘদিন বৃষ্টি নেই। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বৃষ্টি না হলে এই আকাল আরও বাড়বে। বলরাম মণ্ডল নামের খুচরো লেবু বিক্রেতা বলেন, ‘‘ফাল্গুনের গোড়ায় শেষ বৃষ্টি। চৈত্রে সে ভাবে বৃষ্টি হয়নি। তাই পাতিলেবুর এই চড়া দাম। যে লেবু ১০ টাকায় পাঁচটা ছিল। সেটা এখন ১০ টাকায় একটা। বিশ্বাস হচ্ছে না।’’ তবে প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, কেউ কালোবাজারি করতে চাইলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy