দাড়িভিট-কাণ্ডের তদন্তে যাওয়া সিআইডি অফিসারদের সঙ্গে গুলিতে নিহত রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণের পরিবারের কেউ কথা বলতে চাননি। নিহতদের পারিবারিক সূত্রের খবর, সিআইডির অফিসাররা নিজেদের পরিচয় দিতেই নিহত দুই পরিবারের সদস্যরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁরা সিআইডি-র সঙ্গে কথা বলবেন না। এর পরেই সিআইডি অফিসাররা তাপস ও রাজেশের বাবা যথাক্রমে নীলকমল সরকার এবং বাদল বর্মণকে তলব করেন। সুত্রের খবর, ৫ নভেম্বর ইসলামপুর থানায় তাঁদের ‘তদন্তের স্বার্থে সাক্ষাৎ’ করার নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সিআইডির তলব পাওয়ার পরে নিহত দুই পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, আইনজীবীদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। সিআইডি তদন্তে তাঁদের আস্থা নেই। তাই সিবিআই চেয়ে কলকাতা হাইকোর্ট মামলা দায়ের করেছেন। সে ক্ষেত্রে সিআইডিকে সহযোগিতা করার প্রশ্ন ওঠে না বলে তাঁদের যুক্তি। নিহত রাজেশের বাবা নীলকমল বলেন, ‘‘সিআইডি ডেকেছে। দেখা করব কি না সেই বিষয়টি আইনি পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সিআইডির প্রতি আস্থা রাখতে পারছি না। আমরা সিবিআই তদন্ত চাই।’’
একই বক্তব্য নিহত তাপসের পরিবারের লোকজনেরও। এর আগে নিহত রাজেশের কাকা কৃপানাথকে সিআইডি তলব করে চিঠি পাঠিয়েছে। কৃপানাথ রাজেশকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে গোলাপাড়ায় দুষ্কৃতীরা আটকে মারধর করে বলে অভিযোগ। তখন কৃপানাথ জখম হন। তাই সিআইডি কৃপানাথবাবুকে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ডেকেছে বলে এক তদন্তকারী অফিসারের দাবি। তা ছাড়া গুলিবিদ্ধ বিপ্লব সরকারের বাবা গোবিন্দকেও তলব করেছে সিআইডি।
শুধু তাই নয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই সিআইডিকে সাহায্য করতে নারাজ। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘গুলি তো পুলিশ চালিয়েছে। তাই আমরা সিআইডি তদন্তের প্রতি আস্থা রাখতে পারছি না।’’
সুত্রের খবর, এই ঘটনায় সিআইডি স্কুলের শিক্ষকদেরও তলব করে জেরা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষকের জবানবন্দি রেকর্ড করেছে। জেরা করা হয়েছে ঘটনার দিন উপস্থিত পুলিশকর্মীদেরও। সিআইডি অফিসাররা স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সিআইডির দাবি, বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
সিআইডির একটি সূত্রেই দাবি করা হয়েছে, যে সমস্ত তথ্য মিলেছে তাতে পুলিশের গুলি চালানোর কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি। সূত্রের খবর, সিআইডি ইতিমধ্যে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র দফতরে জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্টে পুলিশের গুলি চালানোর উল্লেখ নেই বলেও সিআইডির এক সূত্রে দাবি করা হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে সিআইডির মালদহের সুপার ডেভিড ইভান লেপচার প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তাঁকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা বেজে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy