অভাবের সংসার। দু’বেলা পেট ভরে ভাতও জোটে না। বাড়িতে অসুস্থ বাবা-মা। তার উপর মুদির দোকানে ধারের পরিমাণ ক্রমশই লম্বা হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় চকোলেট কারখানায় শ্রমিকের কাজ করছিলেন কুড়ি বছরের জয়ন্তী সোরেন।
প্রতি দিনের মতো শুক্রবার রাতেও কারখানা থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন ওই যুবতী। কিন্তু তাঁর আর বাড়ি ফেরা হল না। ফেরার পথে তাঁকে অপহরণের চেষ্টা করে কয়েক জন দুষ্কৃতী। কিন্তু জয়ন্তী তাদের বাধা দিলে ট্রাকের চাকায় তাঁকে পিষে দিয়ে পালায় অপহরণকারীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ হুগলির পোলবা থানার কামদেবপুরে দিল্লি রোডের উপর। চকোলেট কারখানা থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন জয়ন্তী-সহ আরও চার মহিলা শ্রমিক। জয়ন্তী এবং তাঁর এক সহকর্মী পূজা ওঁরাও পিছনে পড়ে যান। সেই সময় পিছন থেকে একটি ছোট ট্রাক এসে তাঁদের রাস্তা আটকায়। ট্রাকের এক খালাসি জয়ন্তীর হাত ধরে তাকে টেনেহিঁচড়ে ট্রাকে তোলার চেষ্টা করে। অপহরণকারীদের কাছ থেকে জয়ন্তীকে বাঁচাতে তাঁর হাত ধরে টানতে থাকেন পূজা। ধস্তাধস্তির জেরে রাস্তায় পড়ে যান জয়ন্তী। সেই সময় ওই যুবতীকে ট্রাকের চাকায় পিষে চম্পট দেয় অপহরণকারীরা। পূজাও গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলে লোক জড়ো হলে পুলিশের কাছে খবর যায়। পুলিশ এসে দুই যুবতীকে গুরুতর অবস্থায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা জয়ন্তীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশকে পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন পূজা।
আরও পড়ুন:পাঁচ কাঠা জমির জন্য পুত্রবধূ-নাতির হাতে খুন বৃদ্ধা!
হুগলির পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও, পোলবা থানার ওসি মিন্টু সরকার এবং সিআই সদরের নেতৃত্বে এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। সূত্রের খবর, ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রঞ্জিত বৈঠা নামে এক ব্যক্তিকে কলকাতা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মনে করা হচ্ছে ঘটনার সময় সে ওই ট্রাকের ভিতরেই ছিল। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ৩৬৩ ধারায় অপহরণ, ৩৫৪-র (এ) ধারায় শ্লীলতাহানি, ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। দোযীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছে নিহত যুবতীর পরিবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy