পর্যটকদের উদ্ধার করছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ছবি: পিটিআই।
ষষ্ঠীর দিন ভোরে আমরা আট জন স্পিতি উপত্যকার উদ্দেশে বহরমপুর থেকে মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়েছিলাম। বেনারস, লখনউ পর্যন্ত আমাদের কোনও অসুবিধা হয়নি। কিন্তু গিউ ভিলেজে পৌঁছনোর আগেই ব্যাপক বৃষ্টি শুরু হয়। রাস্তা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। আমরা তখন সিদ্ধান্ত নিই, আর না এগিয়ে ওখানেই থাকব। সেখানে একটি হোম স্টে-তে থেকে গেলাম। পরের দিন আবার ওখান থেকে রওনা দেব বলে।
কিন্তু সকালে উঠেই শুরু হল তুষারপাত। তবে তুষারপাত বললে ছোট করে বলা হয়, বলা উচিত তুষারঝড় শুরু হয়। কুমজুম পাসে সেই ঝড় শুরু হয়েছিল। তবু সেখান থেকে সাহসে ভর করে পাঁচটি বাইকে আট জন যাত্রী, যাঁদের মধ্যে তিন
জন মেয়েও আছে, এগিয়ে গেলাম। কিন্তু ১৪ কিলোমিটারের বেশি আর যাওয়া হল না। হুরলিং ভিলেজে আটকে গেলাম। সেখানে রাত কাটালাম। পরের দিন সকালে রোদ ঝলমলে আকাশ দেখে মন ভাল হয়ে গেল। কিন্তু অন্য অভিজ্ঞতা হল, বাইক নিয়ে রাস্তায় নামার পরে।
রোদ ওঠায় বরফ গলতে শুরু করেছে। অন্য জায়গার পাহাড়ের মতো এখানকার পাহাড় নয়। ঝুরঝুরে মাটি। পাথর, মাটি ভেঙে ভেঙে রাস্তায় পড়ছে। দশ বারো কিলোমিটার আগে মালিংনালা বলে এক জায়গায় ধস নেমে গাড়ি দুর্ঘটনার কথা শুনেছি। এও শুনেছি, সেখানে তিন জন মারা গিয়েছেন ওই ভাঙা পাহাড়ের ধাক্কায়। যা শুনে আমাদের মুখ ভয়ে শুকিয়ে গিয়েছে।
এর আগেও আমরা বাইকে বিভিন্ন পাহাড়ি জায়গা ঘুরেছি। কিন্তু তুষারঝড়, বৃষ্টি, ধস নামার মতো কানে শোনা শব্দগুলোকে প্রত্যক্ষ করব, তা দলের কেউই ভাবিনি। তখন আর অন্য জায়গা দেখার ইচ্ছে প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। মনে হচ্ছে, কখন ধরব বাড়ি ফিরবার রাস্তা। ইচ্ছা ছিল মানালি হয়ে ফিরবার। কিন্তু সে ইচ্ছা পূরণ হল না। রাস্তায় এক ফুট দেড় ফুট বরফ পড়েছে। বাইকে বসেই হাঁটু পর্যন্ত বরফ। কাজা থেকে ধীরে ধীরে নীচে নামার চেষ্টা করছি।
উত্তরাখণ্ডের দুর্যোগের খবর শুনে বাড়িতে বাবা, মা, আত্মীয় স্বজন উদ্বিগ্ন। যত দূর যাব বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম, তত দূর এ যাত্রায় যাওয়া হল না। সিমলা হয়ে ফেরার পথ ধরেছি। যত ক্ষণ না বহরমপুর পৌঁছচ্ছি তত ক্ষণ চিন্তা যাচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy