Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পরীক্ষা এপ্রিলে, বই-ই পায়নি অর্ধেক মাদ্রাসা

ক্লাস চলছে জানুয়ারি থেকে। প্রথম পর্বের পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। অথচ রাজ্যের ৬১৪টি মাদ্রাসার অর্ধেকের কাছেই এখনও পাঠ্যপুস্তক পৌঁছয়নি। বই না-পাওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা মুষড়ে পড়েছে। পুরনো বই সংগ্রহ করে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৭ ০৪:১৮
Share: Save:

ক্লাস চলছে জানুয়ারি থেকে। প্রথম পর্বের পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। অথচ রাজ্যের ৬১৪টি মাদ্রাসার অর্ধেকের কাছেই এখনও পাঠ্যপুস্তক পৌঁছয়নি। বই না-পাওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা মুষড়ে পড়েছে। পুরনো বই সংগ্রহ করে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে।

রাজ্য মাদ্রাসা পর্ষদ সূত্রের খবর, বই মিলছে না বলে বিভিন্ন জেলার মাদ্রাসা থেকে নিত্যদিন অভিযোগ আসছে। খুব খারাপ অবস্থা উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ ও মালদহের। বই-সঙ্কট নেই, পর্ষদ-কর্তারা এমন কথা বলছেন না। তবে তাঁদের অনেকের বক্তব্য, সমস্যা হচ্ছে মূলত ইতিহাসের বই নিয়েই। কেননা ওই বই নতুন করে ছাপানো হচ্ছে। তাই অনেক মাদ্রাসা এখনও ওই বই পায়নি। তবে অন্যান্য বই নিয়ে কোনও সমস্যা নেই বলে ওই সব পর্ষদ-কর্তার দাবি।

কিন্তু বাস্তব ছবিটা অন্য রকম। যেমন বাঁকুড়া সম্মিলনী হাইমাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে ছাত্রের সংখ্যা ৭৫। তাদের মধ্যে ২৩ জন পড়ুয়া কোনও বিষয়েরই বই হাতে পায়নি। শুধু ইতিহাস নয়, কোনও বই-ই পায়নি বাঁকুড়ার লালবাঁধ সিনিয়র মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ১২ জন পড়ুয়া। ওই দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা জানান, পুরনো ছাত্রছাত্রীদের কাছে থেকে বই চেয়ে পড়তে হচ্ছে ওদের। বাঁকুড়া সম্মিলনী হাইমাদ্রাসার এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘বই না-পাওয়ার কথা আগেই আমরা জেলা সংখ্যালঘু দফতর, ডিএমই (ডিরেক্টর অব মাদ্রাসা এডুকেশন)-কে জানিয়েছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি।’’

মুর্শিদাবাদে ১০৬টি এবং মালদহে ৮২টি মাদ্রাসা রয়েছে। ওই দুই জেলার অধিকাংশ মাদ্রাসায় যথেষ্ট সংখ্যায় বই না-পৌঁছনোয় আতান্তরে পড়েছে ছাত্রছাত্রীরা। মুর্শিদাবাদের অধিকাংশ মাদ্রাসায় অঙ্ক, ইতিহাস ও ঐস্লামিক ইতিহাসের বই এখনও পড়ুয়াদের হাতে আসেনি। হাওড়ার বেশ কিছু মাদ্রাসায় বই পৌঁছয়নি। হাওড়ার আজানগাছি হাইমাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়াদের আরবি ব্যাকরণ এবং সপ্তম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ঐস্লামিক ইতিহাসের বই এখনও দেওয়া যায়নি। একই অবস্থা উলুবেড়িয়ার মৌলানা জামালউদ্দিন সিনিয়র হাইমাদ্রাসায়। ওই মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির সম্পাদক এস এম শামসু্দ্দিন বলেন, ‘‘এই প্রতিষ্ঠানে সপ্তম ও নবম শ্রেণির কোনও বিষয়েরই বই পৌঁছয়নি। জানুয়ারিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিকর্তাকে সব জানানো সত্ত্বেও কোনও লাভ হয়নি।’’

কিছু মাদ্রাসায় অনেক বই-ই যে এখনও পৌঁছয়নি, তা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতরের প্রতিমন্ত্রী গিয়াসুদ্দিন মোল্লা। তাঁর আশ্বাস, ‘‘সব মাদ্রাসা শীঘ্রই যাতে বই পায়, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

খোদ মন্ত্রী বই-সমস্যার কথা মেনে নিলেও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিকর্তা আবিদ হোসেন তা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘মাদ্রাসায় বই নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। এমন অভিযোগ আপনার কাছ থেকেই শুনছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Madrasa Textbook Exam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE