আদালতের নির্দেশে মিলেছে অ্যাডমিট কার্ড। কিন্তু অভিযোগ, বালি বঙ্গশিশু বালিকা বিদ্যালয়ের পূজা ঘোষ যে তাঁদের পরীক্ষা কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী, তা জানতেনই না বালি শিক্ষানিকেতন বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পূজা যে সেখানে পরীক্ষা দিতে আসবে, সোমবার দুপুর পর্যন্ত সে সম্পর্কে কিছুই লিখিত ভাবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বা পূজার স্কুলের তরফে জানানো হয়নি পরীক্ষা কেন্দ্রে। এমনকি, অসুস্থ পূজার জন্য যে আলাদা সহায়তা প্রয়োজন, তারও নির্দেশিকা পৌঁছয়নি বলেই দাবি শিক্ষানিকেতন কর্তৃপক্ষের।
সোমবার মাধ্যমিকে বসার অনুমতি সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে পূজার বাবা রাকেশ ঘোষ পরীক্ষা কেন্দ্রে হাজির হলে তখনই বিষয়টি জানতে পারেন কর্তৃপক্ষ। বালি-বেলুড় পরীক্ষা কেন্দ্রের সম্পাদকও তখনই জানতে পারেন এক জন পরীক্ষার্থী বাড়ছে। আগে শিক্ষানিকেতন বালিকা বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৪৯ জন।
গত বছর এপ্রিলে তিন শিক্ষিকার অপমান সহ্য করতে না পেরে স্কুলের চারতলা থেকে পূজা ঝাঁপ দেয় বলে অভিযোগ। তার দু’পা ভেঙে যায়, কোমর ও মাথায় চোট লাগে। রাকেশবাবুর দাবি, স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমে জানান, পূজা মাধ্যমিক দিতে পারবে। পরে বলা হয়, টেস্ট পরীক্ষা না দেওয়ায় সে মাধ্যমিকে বসতে পারবে না। গত ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্ট স্কুলকে নির্দেশ দেয়, ছাত্রীর অ্যাডমিট কার্ড সংক্রান্ত নথি ওই দিনই মধ্য শিক্ষা পর্ষদকে দিতে। পর্ষদকে নির্দেশ দেওয়া হয়, পরের দিনই পূজার অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছে দিতে।
এ দিন পূজার চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজ ও হাইকোর্টের নির্দেশ খতিয়ে দেখে সহায়তার ব্যবস্থা করেন শিক্ষানিকেতন কর্তৃপক্ষ। টিচার-ইন-চার্জ শম্পা মণ্ডল বলেন, ‘‘ও যে পরীক্ষা দিতে আসবে তা নিয়ে কোনও বার্তা পাইনি। বঙ্গশিশুর তরফে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছিল সে পরীক্ষা দিতে পারে।’’ তবে ‘ডিআর’ কপি পেয়ে যাওয়ায় আর সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।
ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি সনাতন গোস্বামী বলেন, ‘‘নির্দেশ না থাকলেও মানবিকতার খাতিরে আলাদা ঘরে ফোল্ডিং বিছানার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। যাতে মেয়েটি বসে বা শুয়ে পরীক্ষা দিতে পারে। এক পরীক্ষকও থাকবেন।’’ রাকেশবাবু জানান, মেয়ের জন্য আলাদা ব্যবস্থার অনুরোধ করতে এ দিন সনাতনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যায়, পূজা সম্পর্কে কোনও তথ্যই শিক্ষানিকেতনের কাছে নেই। রাকেশবাবুর কথায়, ‘‘ডিআর কপি যে পরীক্ষা কেন্দ্রে জমা দিতে হবে, তা কেউ জানাননি। আজ পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে যখন সব কাগজ দেখাচ্ছি তখনই টিচার-ইন-চার্জ বিষয়টি জানান। পরীক্ষার দিন সরাসরি এলে চরম ভোগান্তি হত।’’ রাকেশবাবুর প্রশ্ন, হাইকোর্টের নির্দেশে শুধু অ্যাডমিট কার্ড দিয়েই কি দায়িত্ব শেষ পর্ষদের? পরীক্ষা কেন্দ্রে জানানোর দায়িত্ব কি বঙ্গশিশু স্কুল বা পর্ষদের ছিল না? এমনকি, আদালত যেখানে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়েছে, সেখানে পূজাকে সহায়তার বিষয়টিও কি জানাতে পারেনি পর্ষদ বা স্কুল কর্তৃপক্ষ?
রাজ্য মধ্য শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুল বা ওই ছাত্রীর পরিবারের তরফে আমার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়নি।’’ আর বঙ্গশিশু বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বর্ণালী বসু বলেন, ‘‘আদালতের রায়ের কপি হাতে পাইনি। আইনজীবী মারফৎ জেনে অ্যাডমিট কার্ড পাওয়ার সব ব্যবস্থাই করেছি। ছাত্রীর বাবা অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে এসেছেন। পরীক্ষা কেন্দ্রে মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলাম পূজা পরীক্ষা দিতে পারে।’’ আলাদা সহায়তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘এ জন্য ছাত্রীর পরিবার পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy