Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
TMC

‘মুড়ি-ঘুগনি’ খেয়েও ভোট অন্যকে, খেদ

বুথ সভাপতি বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের সময় ৮০ কেজি মুড়ি আর ৪০ কেজি ঘুগনি খাওয়ানো হয়েছিল। তার পরেও মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। তাই আমরা ৫৫০ ভোটে হেরেছি।’’

ভোটারদের খাওয়ানো হচ্ছে মুড়ি-ঘুগনি। ফাইল চিত্র

ভোটারদের খাওয়ানো হচ্ছে মুড়ি-ঘুগনি। ফাইল চিত্র

তন্ময় দত্ত 
মুরারই শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২০ ০২:৫৯
Share: Save:

কর্মী সম্মেলনের মঞ্চে বসে আছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর সামনেই বোমা ফাটালেন বুথ সভাপতি। বলে দিলেন, তাঁদের কাছে মুড়ি ঘুগনি খেয়ে মানুষ ভোট দিয়েছে বিজেপিকে! প্রকাশ্যে এই কথা শুনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিড়ম্বনায় পড়লেও পরে হাসির মেজাজে বিষয়টি সামাল দেন। বিরোধীরা অবশ্য এত সহজে ছাড়ছেন না বিষয়টিকে। তাঁদের কটাক্ষ, তৃণমূলের ‘হাটে হাঁড়ি’ ভেঙেছেন তাদেরই দলের নেতা!

শনিবার মুরারই ১ ব্লকের চাতরা, ডুমুরগ্রাম ও পলশা অঞ্চলের বুথভিত্তিক কর্মী সম্মেলনে ছিল। পলসা অঞ্চলের ৮৩ নম্বর বুথের সভাপতি অলোক কুমার মণ্ডলের কাছে তাঁর বুথে বিজেপি-র চেয়ে পিছিয়ে থাকার কারণ জানতে চান অনুব্রত। বুথ সভাপতি বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের সময় ৮০ কেজি মুড়ি আর ৪০ কেজি ঘুগনি খাওয়ানো হয়েছিল। তার পরেও মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। তাই আমরা ৫৫০ ভোটে হেরেছি।’’

ক’দিন আগেই মুরারই ২ ব্লকের কর্মী সম্মেলনে তীর গ্রামের এক বুথ সভাপতি অনুব্রতকে বলেছিলেন, ‘‘প্রয়োজনে বুথ দখল করে ভোট করব।’’ তাতে দলকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল। এ বার দলের নেতার সামনে এনে ফেললেন বিরোধীদের পুরনো অভিযোগ ‘মুড়ি-ঘুগনি’, যা আরও বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে অনুব্রত মণ্ডলদের। অনুব্রত মজার ছলেই পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘ভোটে ভাল ফল করতে হলে কি তা হলে এক কুইন্টাল মুড়ি লাগবে?’’ ডুমুরগ্রাম অঞ্চলের ১০০ নম্বর বুথের সভাপতিকে অনুব্রত জিজ্ঞাসা করেন, সিপিএমের ভোট বেশি হল কেন? তাদের কি দলে টানতে পারছেন না? বুথ সভাপতি বলেন, ‘‘সকলেই আমাদের সঙ্গে থেকেছে। ঘুরেছে। কিন্তু ভোট দিয়েছে সিপিএমে। বিষয়টি আমি অঞ্চল সভাপতিকে জানিয়েছি।’’ শুনে জেলা সভাপতির প্রতিক্রিয়া, ‘‘আপনি ছেড়ে দিন। রোগ হলে রোগের ওষুধও আছে। সেটা আমি ব্লক সভাপতিকে বলে দেব।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের দাবি, ‘‘লোকসভা ভোটে শুধু মুড়ি-ঘুগনি খাওয়ানো হয়নি। ভোটের আগের রাতে বিভিন্ন বুথে টাকা দিয়েও ভোট কেনা হয়েছে। এই অভিযোগ আমরা বারবার করে এসেছিলাম। আজ সত্যিটা প্রকাশ পেল ওদেরই দলের নেতার কথায়।’’ তাঁর বক্তব্য, ভয় দেখিয়ে বা টাকা ও মুড়ি-ঘুগনি খাইয়ে বিধানসভার ভোট হবে না। মানুষ এখন অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখেছেন। সিপিএমের বীরভূম জেলা কমিটির সদস্য দুকড়ি রাজবংশীর মন্তব্য, ‘‘বুথ সভাপতি তো সত্যি কথাই বলেছেন। তৃণমূল এ ভাবেই ভোট করে। বর্তমানে তৃণমূলের দুর্নীতি ও কাটমানির জন্য মানুষ বিরক্ত। ভোটাররা যদি তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তাহলে তৃণমূল ও সাম্প্রদায়িক বিজেপির বিরুদ্ধেই ভোট দেবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Anubrata Mandal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy