দিল্লিতে রওনা হওয়ার আগে পুরুলিয়ায় চলছে মহড়া। ছবি: সুজিত মাহাতো।
দিল্লিতে মতদাতা উৎসবে এ বার যোগ দিয়েছে পুরুলিয়ার ছৌ। তবে কোনও সরকারি বিজ্ঞাপন বা প্রকল্পের প্রচারের জন্য নয়। ভোট দানের বিষয়ে জনগণকে সচেতনতার বার্তা দিতে পুরুলিয়ার ছৌ শিল্পকে বেছেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এই উৎসবে বাংলার লোকশিল্পের দল হিসেবে পুরুলিয়ার ছৌ দল শনিবার আধিকারিকদের সামনে মঞ্চস্থ করেছে তাদের পালা। পুরুলিয়া-২ ব্লকের বোঙাবাড়ির বিশ্বেশ্বর ছৌ নৃত্য দলের এই পালার নাম দেওয়া হয়েছে ‘গণতন্ত্রকে লিয়ে নিবার্চন’।
কী ভাবে অবাধে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা নাগরিকের একেবারেই নিজস্ব এবং সেই ভোট সম্পূর্ণ ভাবেই গোপন থাকবে এমন বার্তা নিয়েই মঞ্চস্থ হচ্ছে পালাটি, বলে জানিয়েছেন দলের পরিচালক সুনীল পরামানিক। ২১ জনের একটি দল নিয়ে দিল্লি গিয়েছেন সুনীলবাবু। তিনি জানিয়েছেন, পালায় বিভিন্ন চরিত্র রাখা হয়েছে। যেমন নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি, বুথস্তরের অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার, সাধারণ ভোটার এবং কিছু লোকজন আছেন যাঁরা বুথে গণ্ডগোল পাকায়, ছাপ্পা ভোট দেয়, বোমাবাজি করে— এমন নানা চরিত্রও রয়েছে। সুনীলবাবুর কথায়, ‘‘আমরা এই পালায় বলতে চেয়েছি, ভোটাধিকার আপনার নিজস্ব অধিকার। কোনওভাবেই প্রভাবিত হবেন না। কেউ টাকা-পয়সা দিয়ে যদি প্রলোভন বা ভয় দেখালে আপনার হাতের কাছে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি রয়েছে। সেখানে জানান।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ভয় দেখাতে অনেক সময় কোথাও প্রচার করা হয়, কোন প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন তা প্রকাশিত হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা পালায় দেখিয়েছি সেটা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। বিভ্রান্ত না হয়ে ভোট দেওয়ার জন্য আধাসামরিক বাহিনীও রয়েছে। সকলেই আপনাকে সহায়তা করবে।’’
পুরুলিয়া জেলা নির্বাচন আধিকারিক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় জানান, প্রথমে এই দলটি ব্লকস্তরে এই পালা দেখিয়েছিল। তারপরে জেলাস্তরের পরে রাজ্যস্তরে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের সামনে এই পালা উপস্থাপিত করে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনই দিল্লি নির্বাচন কমিশনের কাছে এই পালাটির সুপারিশ করেছে।
সম্প্রতি নিবার্চন সংক্রান্ত প্রশাসনিক বৈঠকের পরে দলের শিল্পীরা জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং জেলা প্রশাসনের অন্য আধিকারিকদের সামনে পালাটি মঞ্চস্থ করে। জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এই দলটি দিল্লিতে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত মতদাতা উৎসবে যোগ দিয়েছে। কীভাবে একজন নাগরিক সুষ্ঠুভাবে এবং অবাধে ভোট দিতে পারবেন, কেউ ভোটারকে প্রভাবিত করতে পারবে না এমনই বার্তা দেওয়া হয়েছে এই পালায়।
এই দলের সঙ্গে শিল্পী হিসেবে রওনা দিয়েছেন শঙ্কর মাহাতো, বাবুলাল কালিন্দী, সুবল কর্মকার, অনিল রাজোয়াড় প্রমুখ। এঁদের কেউ চা, তেলেভাজার দোকান চালান, কেউ দিনমজুর। দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের উৎসবে যোগদানের সুযোগ পেয়ে তাঁদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘প্রথমত জেলার মানরক্ষার ভার, সেই সঙ্গে পালার মাধ্যমে জনগণকে বার্তা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছি আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy