প্রতি বেঞ্চে দু’জনের বদলে এক জন পড়ুয়া বসানোই বাঞ্ছনীয়। ফাইল চিত্র।
কোভিড বিধি মেনে পঠনপাঠন চালানোর জন্য প্রয়োজনে স্কুলের সময় সকাল ও দুপুর দু’ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। স্কুল শুরু হওয়ার আগে করোনা নিয়ে পড়ুয়াদের সচেতন করতে ১০ মিনিট সময় বরাদ্দ রাখতে হবে। পারস্পরিক দূরত্ব রক্ষার জন্য প্রতি বেঞ্চে দু’জনের বদলে এক জন পড়ুয়া বসানোই বাঞ্ছনীয়।
১৬ নভেম্বর স্কুল খুললে কী কী স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, বৃহস্পতিবার সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকায় এ কথা জানিয়েছে শিক্ষা দফতর। ফেব্রুয়ারিতে উঁচু শ্রেণির জন্য স্কুল খোলার সময় যে-নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল, তার সঙ্গে এ বারের নির্দেশিকার অনেকটাই মিল আছে বলে প্রধান শিক্ষকেরা জানান। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চালু করার ক্ষেত্রে নিয়মবিধি কী হবে, তারও নির্দেশিকা এ দিন জারি করা হয়েছে। শিক্ষা দফতর বলেছে, ‘অ্যাকাডেমিক গাইডলাইন’ বা পঠনপাঠন সংক্রান্ত নির্দেশিকা পরে প্রকাশিত হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৬ নভেম্বর খোলার সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় স্কুলে আপাতত নবম-দ্বাদশের পড়ুয়াদের হাজিরার কথা বললেও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ছাত্রছাত্রী একসঙ্গে আসবেন কি না, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই বিষয়ে কিছু জানাননি। খোলার পরে কী ভাবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে হবে, উচ্চশিক্ষা দফতর সেই বিষয়ে এ দিন নির্দেশ দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তাতেও এর কোনও উল্লেখ নেই। শিক্ষা শিবিরের একাংশের বক্তব্য, এর অর্থ, উচ্চশিক্ষা স্তরে সব পড়ুয়াকেই ক্যাম্পাসে আসতে বলা হচ্ছে।
স্কুলে পোস্টার-সহ নানা ভাবে পড়ুয়াদের করোনা-সচেতন করতে বলা হয়েছে এ দিনের নির্দেশিকায়। কোভিড বিধি মেনে স্কুল চালাতে গেলে শিক্ষকদের কী করতে হবে, তারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে অভিভাবকদেরও। ক্লাস শুরুর আগে যাতে কোনও রকম হুড়োহুড়ি না-হয়, সেই জন্য স্কুল শুরুর ৬০ মিনিট আগে থেকে পড়ুয়াদের ঢোকার অনুমতি দিতে হবে। সব পড়ুয়া নিজের জলের বোতল আনবে। নিজস্ব বই বা পেন অন্যদের ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। মাস্ক পরতেই হবে। সঙ্গে রাখতে হবে স্যানিটাইজ়ার।
মিড-ডে মিল এখন চালু হচ্ছে না। যখন তা চালু হবে, তখনও কোভিড বিধি মানতে হবে। প্রধান শিক্ষকদের বলা হয়েছে, রোজ স্কুলবাড়ি, ল্যাবরেটরি, শৌচালয়, গ্রন্থাগার জীবাণুমুক্ত করতে হবে। রাখতে হবে পর্যাপ্ত মাস্ক ও জীবাণুনাশক। স্কুলের পরিস্থিতির উপরে নজর রাখার জন্য গড়তে হবে বিশেষ কমিটি।
এ দিনের নির্দেশে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েও সব রকম সতর্কতা অবলম্বন করেই ক্লাস চালু করতে হবে। প্রয়োজনে হস্টেলও খোলা যাবে। সর্বোপরি নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা জরুরি। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা যাতে রেলকর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট স্পেশাল বা বিশেষ ট্রেনে যাতায়াত করতে পারেন, তার জন্য স্পেশাল পাশের ব্যবস্থা করতে হবে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। ক্লাস শুরু হবে ১৬ নভেম্বর। তবে সব দিক থেকে প্রস্তুতির জন্য ১ নভেম্বর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে ক্যাম্পাস, খেলার মাঠ, গ্রন্থাগার, ল্যাবরেটরি, ক্লাসঘর এবং হস্টেলে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার জন্য ‘থার্মাল স্ক্যানিং’-এর ব্যবস্থা রাখা আবশ্যিক। মাস্ক পরা, ঘনঘন হাত ধোয়া বাধ্যতামূলক। কারও মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিলে তাঁকে ‘আইসোলেশন’ বা আলাদা রাখার ব্যবস্থা যেন থাকে। যদি ক্যাম্পাসের মধ্যে রাখা না-যায়, তা হলে সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। বহিরাগতদের ঢোকার ক্ষেত্রে জারি করতে হবে নিষেধাজ্ঞা। সংক্রমণ আটকাতে গয়না পরতে বারণ করা হয়েছে পড়ুয়াদের। জাঙ্কফুড চলবে না। খেতে হবে বাড়ির তৈরি খাবার। বই-সহ পঠনপাঠনের সরঞ্জাম আদানপ্রদান যথাসম্ভব কম করতে বলা হয়েছে। স্টাডি টুর, ফিল্ড ওয়ার্কের বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা চাই। করোনা সম্পর্কে সচেতনতার বাতাবরণ তৈরি করতে হবে ক্যাম্পাসে। বিভিন্ন ধরনের পোস্টার, সিম্বল বা প্রতীক দিয়ে দূরত্ব রক্ষার বিষয়ে ক্যাম্পাসের সকলকে সদা-সচেতন রাখতে হবে। গ্রন্থাগার, জিমনাসিয়াম, ক্যান্টিন, প্রেক্ষাগৃহ, কনফারেন্স হলেও যাতে পারস্পরিক দূরত্বের বিধি যথাযথ ভাবে মেনে চলা হয়, সে-দিকে বিশেষ নজর রাখা জরুরি। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যথেষ্ট স্যানিটাইজ়ার স্টেশন, স্যানিটাইজ়ার, সাবানের বন্দোবস্ত রাখার কথাও বলা হয়েছে এ দিনের নির্দেশিকায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy