Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Birbhum

ED raid in Birbhum: পাথর খাদানের কর্মী থেকে বৈভবের ইমারতে! ‘অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ’ টুলু মণ্ডলের উত্থানকাহিনি

‘অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী টুলু মণ্ডলের একের পর এক বাড়িতে হানা দেয় ইডি। একটি বাড়ির তালা ভেঙে ঢোকেন আধিকারিকরা। যদিও টুলু বেপাত্তা।

অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ টুলু মণ্ডলের ‘উত্থান’ চমকপ্রদ।

অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ টুলু মণ্ডলের ‘উত্থান’ চমকপ্রদ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২২ ১৪:৪৯
Share: Save:

ঘিয়ে রঙের তিনতলা বাড়ি। রয়েছে ঝুল বারান্দা। সামনে সাজানো বাগান। শান্তিনিকেতনের সুভাষপল্লির এই প্রাসাদোপম বাড়ির সব ঘরে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র। এমনকি, লিফট্ও। বুধবার এই বাড়িতেই তল্লাশি চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই একটি বাড়িই নয়, মালিকের আরও দু’টি বাড়িতে তল্লাশি চলে। সিউড়ির সাজানোপল্লির বাড়িটির যদিও গেট তালাবন্ধ ছিল। সেই তালা ভেঙেই ভাড়িতে ঢোকেন ইডি আধিকারিকেরা।

এই তিনটি বাড়ির মালিকের নাম টুলু মণ্ডল। বয়স ৫০ বছরের কাছাকাছি। পেশায় পাথর ব্যবসায়ী। তবে স্থানীয়রা বলেন, টুলু রাজনীতিও করেন। সেটা শখে। জেলায় তৃণমূলের প্রায় প্রতিটি কর্মসূচির মঞ্চ আলো করে বসে থাকতে দেখা যেত তাঁকে। এ হেন টুলুর বাড়িতে হানার পর জানা যায়, তিনি ‘বেপাত্তা’।

এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় পার্থের গ্রেফতারির পর একাধিক জায়গায় তাঁর নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি আছে বলে দাবি করে তদন্তকারী সংস্থা। তার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে শান্তিনিকেতন। বুধবার সেখানে ইডি অভিযান চালায়। তবে তার আগেই টুলুর বাড়িতে হানা দেন কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা। না, টুলুর সঙ্গে এসএসসি মামলার কোনও সম্পর্ক নেই। রয়েছে অন্য এক মামলা।

টুলুর একাধিক বাড়ির একটি।

টুলুর একাধিক বাড়ির একটি। —নিজস্ব চিত্র।

বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিশেষ ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত টুলু প্রথন জীবনে ছিলেন পাথর খাদানের কর্মী। সেখান থেকেই উত্থান। কয়েক বছর পর একটি খাদানের মালিক। সেখান থেকে আরও একটি... তার পর আরও এক। এই ভাবে বেনামে নাকি বহু পাথর খাদানের মালিক টুলু। পরিচিতরা বলেন, ‘‘টুলুর দিনের কামাই কোটি টাকা।’’

বীরভূমে বৈধ পাথর খাদান মাত্র ছ’টি। তবে অবৈধ খাদানের সংখ্যা প্রায় ৪০০। টুলুর মতো আরও কয়েক জন এই সব খাদান চালান বলে অভিযোগ। পাথর ব্যবসা ছাড়াও একটি পেট্রল পাম্প রয়েছে টুলুর। শোতসল পাথর খাদান এলাকায় টুলুর অফিসে হানা দেওয়ার পাশাপাশি, মহম্মদবাজারে ওই পেট্রল পাম্পেও হানা দিয়েছে ইডি। পরে সেটি সিল করা হয়েছে।

টুলুর বাড়ি ও অফিসে এই অভিযানের মূলে রয়েছে কয়লা ও গরুপাচার মামলা। ইতিমধ্যে এই মামলায় অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল নেতার দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। ইলামবাজার-সহ বীরভূমের নানা জায়গায় সেই দেহরক্ষীরই কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিস মিলেছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। সূত্রের খবর, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই উঠে আসে টুলুর নাম। টুলু নাকি সায়গলের ব্যবসাও দেখতেন। অন্য দিকে, এঁদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনে যুক্ত ছিলেন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খান। এই সব সূত্র ধরে শুরু হয়েছে ইডি তদন্ত।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE