Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Recruitment Scam

‘কালীঘাটের কাকু’র দালাল কুন্তল-শান্তনুরা, সুজয়কে জেরার পর দাবি ইডি সূত্রের

এক সময় দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তাপস মণ্ডলকেও বলতে শোনা গিয়েছিল, কুন্তল তাঁকে বলেছেন, ‘কালীঘাটের কাকু’র কাছে টাকা পৌঁছে দিতে হবে। ‘কালীঘাটের কাকু’র নাম প্রকাশ্যে আসে সেই প্রথম।

Sujay Krishna Bhadra.

বিচার ভবনে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৩ ০৮:৪৩
Share: Save:

শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে তৃণমূলের দুই বহিষ্কৃত যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়-কুন্তল ঘোষের দাপট এবং টাকার লেনদেন নিয়ে এর আগে বিস্তর হইচই হয়েছে। প্রোমোটার অয়ন শীলের গ্রেফতারির পর শুরু হয়েছে পুরসভায় চাকরি-দুর্নীতির তদন্ত। এখন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’কে গ্রেফতার ও জেরা করার পরে ইডি সূত্রের দাবি, শান্তনু-কুন্তল বা অয়ন চাকরির টোপ দিয়ে টাকা তোলার চক্রে কাজ করতেন কার্যত তাঁর ‘মিডলম্যান’ বা দালাল হিসেবেই।

ইডি সূত্রের দাবি, সুজয়কৃষ্ণেরই অঙ্গুলিহেলনে কখনও সরাসরি তাঁর কাছে, কখনও বা তাঁর ঘনিষ্ঠদের কাছে টাকা পৌঁছে দিতেন কুন্তলেরা। যে-কারণে, এক সময় দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তাপস মণ্ডলকেও বলতে শোনা গিয়েছিল, কুন্তল তাঁকে বলেছেন, ‘কালীঘাটের কাকু’র কাছে টাকা পৌঁছে দিতে হবে। ‘কালীঘাটের কাকু’র নাম প্রকাশ্যে আসে সেই প্রথম।

বুধবার আদালতে তুলে সুজয়কে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার পরে টানা জেরা করে চলেছে ইডি। ইডি সূত্রের খবর, সুজয়েরই নির্দেশে কুন্তল ২৬ কোটি টাকা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মহেশতলার বাসিন্দা ও তৃণমূল নেতা সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছে দিতে বলেছিলেন অয়নকে। সুজয় রাজ্য জুড়ে এমনই বহু দালালের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতিতে সক্রিয় ছিলেন বলে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সূত্রের দাবি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের সংস্থার অন্যতম কর্তা সুজয়ের প্রভাবশালী-যোগের একের পর এক সূত্র ও তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে। প্রয়োজনে সুজয়কে সন্তুর মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হবে বলেও জানিয়েছে ইডি সূত্র।

ইডি সূত্রের খবর, বিশেষজ্ঞদের দিয়ে মোবাইলের সমস্ত নথি লোপাট করার চেষ্টা করেছিলেন সুজয়। ওই সূত্রের অভিযোগ, গত জানুয়ারি থেকেই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগের সমস্ত নথি নষ্ট করার কাজ শুরু করেছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত তাঁর ঘনিষ্ঠদেরও সমস্ত নথি নষ্ট করে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। সাতগাছিয়ার বাসিন্দা, বিষ্ণুপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরা ছিলেন সুজয়-ঘনিষ্ঠদের অন্যতম। অভিযোগ, ‘কাকু’ ফেব্রুয়ারিতে তাঁর মোবাইলের সমস্ত নথি নষ্ট করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে লিখিত বয়ানে ইডি-কে জানিয়েছেন রাহুল। সুজয় ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের নষ্ট করা সব তথ্যই উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি ইডি সূত্রের।

বুধবার সুজয়কে আদালতে তুলে ইডি অভিযোগ করেছিল যে, ওই অভিযুক্ত খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। সে-কথা শুনে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারক। তদন্তকারীদের দাবি, আদালত থেকে ফিরে বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে খাওয়াদাওয়া করেছেন সুজয়। এক পদস্থ ইডি-কর্তা বলেন, ‘‘সুজয় ডায়াবিটিসের রোগী। খাওয়া বন্ধ করলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিতে হবে। নিজেকে অসুস্থ প্রতিপন্ন করে জেরা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি।’’ বৃহস্পতিবার সুজয়ের মেয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি ওষুধ ও জামাকাপড় দিয়ে গিয়েছেন বলে ইডি সূত্রের খবর।

অন্য বিষয়গুলি:

Recruitment Scam Sujay Krishna Bhadra Kuntal Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy