প্রসন্ন রায়। —ফাইল চিত্র ।
৬ বছরে ৭২ কোটি টাকা জমা পড়েছে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত ব্যবসায়ী প্রসন্ন রায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এবং এই টাকা এসেছে চাকরি ‘বিক্রি’ করে। আদালতে একটি রিপোর্ট জমা দিয়ে তেমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির। যদিও প্রসন্নের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেলের অ্যাকাউন্টে যে অর্থরাশি জমা পড়েছে, তা ব্যবসার টাকা। এর সঙ্গে নিয়োগের কোনও সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি।
শুক্রবার এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল কলকাতা নগর দায়রা আদালতের বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে। সেই শুনানি চলাকালীন প্রসন্নের বিরুদ্ধে আদালতে এই রিপোর্ট জমা দেয় ইডি। ইডির আইনজীবীর দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানতে পেরেছে, ৬ বছরে ৭২ কোটি টাকা জমা পড়েছে প্রসন্ন রায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। যা চাকরি বিক্রির টাকা বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। আদালতে এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও জমা দিয়েছে ইডি। রিপোর্টে ইডি জানিয়েছে, এক জন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল। এর পরেই ইডির কাছে বিচারক মুখোপাধ্যায় জানতে চান, কত জনের কাছ থেকে চাকরির টাকা নেওয়া হয়েছিল।
অন্য দিকে, ইডির দাবি শুনে প্রসন্নের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা জানান, প্রসন্নের অ্যাকাউন্টে যে টাকা জমা পড়েছে তা তাঁর ব্যবসার টাকা। এর সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির সম্পর্ক নেই। ‘৭২ কোটি জমা দিলে তাতে অপরাধ কিসের?’, এই প্রশ্নও তোলেন তিনি। পাশাপাশি, অনির্বাণের আবেদন, প্রসন্নের অ্যাকাউন্টে জমা পড়া টাকা যদি চাকরি বিক্রির হয়, তা হলে কত জনের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে, তা বিস্তারিত ভাবে জানাক ইডি।
উল্লেখ্য, এর আগে ইডি দাবি করেছিল চাকরি ‘বিক্রি’ করে একাই ১০০ কোটি টাকা তুলেছিলেন প্রসন্ন। অভিযোগ ছিল, শিক্ষা দফতরের আধিকারিক এবং অযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে তিনি সেতুবন্ধনও করতেন। প্রসন্ন এবং তাঁর পরিচিতদের ৯০টি সংস্থা রয়েছে বলেও আদালতে দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রসন্নের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিংহের ‘ঘনিষ্ঠ’। এক জন ‘মিডলম্যান’। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল বলে জানা গিয়েছিল সিবিআই সূত্রে। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দু’টি মামলার তদন্তে নেমে প্রসন্নের নাম পেয়েছিল সিবিআই। প্রসন্নকে এর পরে গ্রেফতার করে সিবিআই। তবে গ্রেফতার করা হলেও প্রসন্নের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়নি। চার্জশিট দেওয়ার পর নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও তাঁর প্রেক্ষিতে কোনও পদক্ষেপ না করায় বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন প্রসন্ন। বেশ কিছু শর্ত দিয়ে সিবিআইয়ের মামলায় তাঁকে জামিন দেয় শীর্ষ আদালত। এর পর তাঁকে ইডি গ্রেফতার করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy