প্রতীকী ছবি।
স্থায়ী নিয়ম ও নির্দেশ আছে দেশের নির্বাচন কমিশনের। অজামিনযোগ্য ধারায় অভিযুক্ত, ফেরার দাগিদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়াই হয়ে থাকে। এক সময় কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে (সুয়োমোটো ডিলিশন) এই ধরনের নাম বাদ দিতে পারতেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই নিয়ম কতটা বলবৎ করা যাবে, বাংলার জেলা প্রশাসনের অনেক আধিকারিক তা নিয়ে সবিশেষ চিন্তিত। ওই অফিসারদের অনেকের বক্তব্য, কাগজে-কলমে নিয়মবিধি থাকা এক জিনিস এবং কার্যক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের।
কমিশনের বর্তমান নিয়ম অনুসারে ভোটার তালিকা থেকে কারও নাম বাদ দিতে হলে ফর্ম-৭ জমা পড়া বাধ্যতামূলক। অজামিনযোগ্য ধারায় অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে কী ভাবে ফর্ম-৭ জমা পড়বে, বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের অনেক আধিকারিকের চিন্তা তা নিয়েই। ‘‘অজামিনযোগ্য ধারা সাধারণ ভাবে সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধেই প্রয়োগ করা হয়। ছাপোষা মানুষজন সচরাচর সেই সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফর্ম-৭ জমা দেওয়ার সাহস দেখান না। সেই জন্যই ফর্ম-৭ জোগাড় করে তালিকা থেকে অভিযুক্তদের নাম বাদ দেওয়াটা চ্যালেঞ্জের। এটা কবুল না-করলে সত্যের অপলাপ করা হবে,’’ বলছেন ওই সব অফিসার।
বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি বুঝতে সপ্তাহ দেড়েক আগে বঙ্গে এসেছিলেন উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। জেলা ও রাজ্য স্তরের পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, অজামিনযোগ্য ধারায় অভিযুক্ত, ফেরার ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নিয়মটি বৈঠকে উপস্থিত পুলিশকর্তাদের স্মরণ করিয়ে দেন জৈন। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে নাম ছাঁটাইয়ের ক্ষমতা যখন কমিশনের ভারপ্রাপ্তদের দেওয়া ছিল, তখন অজামিনযোগ্য ধারার মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি ছ’মাস ফেরার থাকলেই তাঁর নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ে যেত।
কিন্তু বর্তমানে সাত নম্বর ফর্মের বিষয়টি আবশ্যিক করায় নাম ছাঁটাইয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। অজামিনযোগ্য ধারায় মামলা আছে, এমন ব্যক্তিদের কী অবস্থান, সেই বিধি কতটা রূপায়ণ করা গিয়েছে— সেই বিষয়ে এখন কমিশনের কাছে নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাতে হচ্ছে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও পুলিশ কমিশনারদের। অজামিনযোগ্য ধারায় অভিযুক্ত, ফেরার লোকজনের নাম ভোটার তালিকা থেকে সংগ্রহ করছে পুলিশ। জেলা প্রশাসনের কাছে সেই সব নাম পাঠানোর কাজ শুরু করেছেন পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা।
ভোটার তালিকা থেকে অজামিনযোগ্য ধারায় অভিযুক্তদের নাম কেটে দেওয়ার বিষয়ে কমিশনের যে-নির্দেশ রয়েছে, ভোটের বছরে তার বাড়তি গুরুত্ব থাকে। এই ধরনের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ যে দ্রুত বলবৎ করতে হবে, পুলিশকে সেটা বার বার মনে করিয়ে দেয় কমিশন। তাদের মতে, এই ধরনের লোকজন ভোটের সময় গোলমাল পাকাতে পারে। তাই এই পদক্ষেপ করতে জোর দেওয়া হয়।
উপ নির্বাচন কমিশনারের তরফে পুলিশ-প্রশাসনকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কমিশন এই বিষয়ে আবার জেলাশাসকদের নির্দেশ দিতে পারে বলে ওয়াকিবহাল সূত্রের খবর। শুধু বৈঠকে আলোচনা করাই সব নয়, লিখিত ভাবেও সেটা মনে করিয়ে দিতে পারে কমিশন।
ইতিমধ্যে বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কমিশনের কাছে দফায় দফায় নালিশ জানিয়েছে বিজেপি। সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে বিজেপি নেতৃত্বকে আশ্বাস দিয়েছে কমিশন। নির্বাচন সদনের কর্তাদের বক্তব্য, কমিশন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। আর সেই লক্ষ্যে সব ধরনের পদক্ষেপ করা হবে। সব ক্ষেত্রেই তা করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি অসম, তামিলনাড়ু, কেরল এবং পুদুচেরিতেও আগামী বছর বিধানসভার ভোট হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy