মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে জেলার কর্তারা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
রাস্তা তৈরি থেকে করোনা রোধ, নানা কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের মুখে পড়ল পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার ‘ভার্চুয়াল’ প্রশাসনিক বৈঠকে জেলার কাজের তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘“লজ্জা করছে না শুনতে? ভেরি ব্যাড পারফর্ম্যান্স।’’ বৈঠকের পরে, মুখ্যমন্ত্রীর ‘অসন্তোষ’ নিয়ে জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিন দুই বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলা প্রশাসনের কাজের মূল্যায়ন-বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। গোড়াতেই করোনা-সংক্রমণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। পূর্ব বর্ধমানে সংক্রমণের হার ৩.৪%, যা বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়ার থেকে বেশি। এর কারণ জানতে চান তিনি। জেলাশাসক জানান, বর্ধমান ও কাটোয়া শহরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। খণ্ডঘোষ থানায় এক সঙ্গে ১৮ পুলিশকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। যা শুনে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ-কর্তাদের নির্দেশ দেন, ‘‘ব্যারাকে গাদাগাদি করে অনেক পুলিশ থাকেন। তাঁদের একটু আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।’’ মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানান, পূর্ব বর্ধমানে করোনায় সুস্থতার হার রাজ্যের তুলনায় বেশি।
গ্রামের ছোট রাস্তায় যাতে বড় গাড়ি না চলে, সে দিকে পুলিশকে নজর রাখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গেই ওঠে বাংলা গ্রাম সড়ক যোজনার কথা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, পূর্ব বর্ধমানে ৯৫ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেখানে হয়েছে মাত্র ১৫.৬৭ কিলোমিটার। এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘লজ্জা করছে না শুনতে? অতিমারি দেখিয়ে অন্য কাজ করব না, এটা হয় নাকি! পূর্ব বর্ধমানের প্রোগ্রেস রিপোর্ট ভেরি ব্যাড।’’ জেলাশাসককে শীঘ্রই এ নিয়ে ব্লক স্তরের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেন তিনি। জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া ও সহ-সভাধিপতি দেবু টুডুর কাছেও রাস্তার কাজের হাল জানতে চান। দেবুবাবু বলেন, “দেখে নেব।’’ সাত দিন পরে পুনর্মূল্যায়নের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকের পরেই জেলাশাসক সংশ্লিষ্ট নানা দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। জানা যায়, রায়নার বাঁধগাছা থেকে ফতেপুর পর্যন্ত ৩৯ কিলোমিটার রাস্তার কাজ চলছে, মেমারি ২ ব্লকের কালীবেলে থেকে বড়বাজার পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ১৩ কিলোমিটার শেষ হয়েছে। বর্ধমান ২ ব্লকের আমড়া থেকে পালশিট পর্যন্ত সাড়ে সাত কিলোমিটারের মধ্যে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার, কালনা ২ ব্লকের একটি রাস্তার ছ’কিলোমিটারের চার কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। কেতুগ্রাম ২ ব্লকের উদ্ধারণপুর থেকে মৌগ্রাম, খণ্ডঘোষের উজ্জ্বলপুকুরের ১০ কিলোমিটার রাস্তা, কালনা ২ ব্লকের বৈদ্যপুরের প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ চলছে।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন, ‘‘ওই রাস্তাগুলির কাজের দরপত্র ডাকা থেকে ঠিকাদার নিয়োগ, তথ্য রাখা সবই ‘রাজ্য সড়ক উন্নয়ন সংস্থা’র (এসআরডিএ) কলকাতা অফিস থেকে করা হয়। কাজ শেষ করার সময়সীমা এখনও রয়েছে, তাই ঠিকাদার সংস্থা বাতিল করার সুপারিশ করা যাচ্ছে না।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই সংস্থা জেলায় জেলা পরিষদের একটি শাখা হিসেবে কাজ করে। ওই বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ দাবি করেন, অনেক রাস্তার অংশই হয়ে গিয়েছে। বাকি কাজও চলছে। রাজ্য প্রশাসনের কাছে হয়তো সর্বশেষ তথ্য নেই, ধারণা তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy