স্মার্ট সিটির দৌড়ে দ্বিতীয় দফার তালিকাতেও জায়গা হয়নি দুর্গাপুরের। বর্তমান পুরবোর্ডের কাজকর্ম এবং দূরদৃষ্টির অভাবেই শিল্পশহরের ভাগ্যে এ বারও শিকে ছিঁড়ল না অভিযোগে ফের সরব হয়েছে বিরোধীরা।
কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক দেশের যে ১০০টি শহর ‘স্মার্ট সিটি’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে, তার মধ্যে আছে দুর্গাপুরও। সে জন্য আন্তর্জাতিক মানের পরিকাঠামো, পার্কিং, জঞ্জাল সাফাই, নিকাশি, ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা, তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো, ই-গভর্ন্যান্স, ই-পরিষেবা, ওয়াই-ফাই জোন গড়ে তোলার পাশাপাশি জল সরবরাহের মতো নাগরিক সমস্যার চটজলদি সমাধান, আধুনিক গণ পরিবহণ ব্যবস্থা করতে হবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষার আধুনিক পরিকাঠামো, মহিলা ও শিশুদের সুরক্ষার জন্য নানা ব্যবস্থা, এমনকী গরিবদের জন্য সস্তায় আবাসনের ব্যবস্থাও এই প্রকল্পের অঙ্গ। পাঁচ বছরের এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম বছর ২০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা। পরের চার বছর বরাদ্দ ১০০ কোটি টাকা করে। রাজ্য সরকার ও পুরসভাও একই পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করবে বলে ঠিক হয়েছে। পাশাপাশি, মিলবে বেসরকারি বিনিয়োগও।
প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব পুরসভার হাতে। স্মার্ট সিটিতে রূপান্তরিত হলে শহরের হাল বদলে যাবে। সে জন্য বর্তমান পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ এবং বেহাল পুর পরিষেবার হাল পাল্টানো দরকার— সিপিএমের তরফে এমন দাবি জানানো হয়েছিল তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার কাছে। নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম রাউন্ডে মাত্র ২০টি শহরে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। সেই তালিকায় জায়গা পেতে শহরগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল মন্ত্রক। প্রায় ২৪টি ক্ষেত্রে পরিষেবা ও পরিকাঠামোর দিকে নজর দেওয়া জরুরি ছিল পুরসভার। জানুয়ারিতে ঘোষিত প্রথম রাউন্ডে জায়গা হয়নি দুর্গাপুরের। মঙ্গলবার প্রকাশিত দ্বিতীয় তালিকায় এ রাজ্য থেকে জায়গা পেয়েছে শুধু নিউটাউন।
সিপিএমের অভিযোগ, স্মার্ট সিটি প্রতিযোগিতায় সফল হতে যা-যা করার দরকার, তা করেনি পুরসভা। সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক তথা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে সব পরিকাঠামো ছিল তা টিকিয়ে রাখারই উদ্যোগ নেই পুরসভার। নতুন কিছু তো চিন্তাই করা যায় না!’’ তিনি অভিযোগ করেন, সুষম গণ পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল। কিন্তু অপরিকল্পিত ভাবে বিপুল সংখ্যায় অটো-টোটো চালু করা হয়েছে। তা নিয়ে অশান্তি লেগেই রয়েছে। শহরের আনাচে-কানাচে আবর্জনা জমছে। কারণ বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর। অথচ, বাম আমলে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য দুর্গাপুর পুরসভাকে পুরস্কৃত করেছিল কেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘‘স্মার্ট সিটি প্রতিযোগিতায় সফল হতে পুরসভার আরও উদ্যোগ প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তা দেখা যাচ্ছে না।’’
পুরসভার তরফে অবশ্য জানানো হয়, দক্ষ বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে সেই মতো এগোনো হয়েছে। যেখানে-যেখানে খামতি রয়েছে বলে স্মার্ট সিটি মিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সে দিকে অতিরিক্ত নজরও দেওয়া হয়েছে। ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট বিষয়গুলির উপরে নজর দিয়ে ধাপে ধাপে আমরা এগোচ্ছি। আশা করি, শীঘ্রই সফল হব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy