একেই বলে মধুর মিলন!
এমনিতে তাঁরা একই দলের ‘সহযোদ্ধা’। একই মন্ত্রিসভার সহকর্মী। দু’জনেই দিদির ‘কাছের ভাই’। তবে পুজো নিয়ে তাঁরা একে অন্যের ‘চরম ‘শত্রু’। সেখানে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়েন না।
এক জনের পুজো সুরুচি সঙ্ঘ। অন্য জনের চেতলা অগ্রণী।
পুজো নিয়ে অরূপ বিশ্বাসের সুরুচি সঙ্ঘ এবং ফিরহাদ (ববি) হাকিমের চেতলা অগ্রণীর আকচা-আকচির কথা সারা শহর জানে। জানেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শুধু অরূপ বা ববি নন, তৃণমূলের বাঘা-বাঘা অনেক নেতা-মন্ত্রীই বিভিন্ন পুজোর উদ্যোক্তা। কাজেই তাঁদের নিজেদের মধ্যে একটা চাপা প্রতিযোগিতা রয়েছেই। কখনও কখনও তা-ই চলে আসে প্রকাশ্যে। এই পুজোর লড়াই নিয়ে দলের ঘনিষ্ঠ মহলে রসিকতাও কম নেই। সেই রসিকতায় মাঝেমধ্যে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রীও।
কয়েক বছর আগে মন্ত্রীদের মধ্যে লড়াই বেধেছিল পুজো শুরুর আগেই। দক্ষিণ কলকাতার এক মন্ত্রীর পুজো ঘোষণা করেছিল, তারাই বাংলার পুজোর মুখ। তাদের কটাক্ষ করে আর এক মন্ত্রীর পুজো হোর্ডিং দিয়েছিল— ‘নিজে যাকে বড় বলে, বড় সে নয়। লোকে যাকে বড় বলে বড় সে-ই হয়।’ শেষে ভবানীপুরে আর এক মন্ত্রীর ঘোষণা ছিল, ‘মন্ত্রীরা সাবধান! রাজা আসছেন।’
মন্ত্রীদের পুজো নিয়ে এমন রেষারেষিই দেখতে অভ্যস্ত কলকাতার দর্শকেরা। কিন্তু কোনওটাই অরূপ-ববির লড়াইয়ের মতো জমাটি নয়।
এই আবহেই কিন্তু মঙ্গলবার অন্য ছবি দেখল রেড রোডের ‘বিসর্জন কার্নিভাল’। সেখানে অরূপের সুরুচি সঙ্ঘের পরেই ঢুকল ববির চেতলা অগ্রণী। সুরুচি সঙ্ঘের শোভাযাত্রার যেখানে শেষ, সেখানেই চেতলা অগ্রণীর শুরু। সুরুচির শোভাযাত্রার শেষে ছিলেন অরূপ। আর চেতলার একদম শুরুতে ছিলেন ববি। মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চের সামনে এসে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরলেন তাঁরা। তার পরে হাত-ধরাধরি করে দু’টি মিছিল এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করলেন। শেষে দু’জনে একসঙ্গে উঠে গেলেন মঞ্চে— এক্কেবারে ‘দিদি’র সামনে। যা দেখে দিদিও হাসি চাপতে পারলেন না। এমন বিরল দৃশ্য তিনিও যে কম দেখেছেন!
ভাই-ভাই মিলনের আরও একটি দৃশ্যের সাক্ষী রইল মঙ্গলবারের রেড রোড। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পাশেই হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের পুজো। তার অন্যতম উদ্যোক্তা মুখ্যমন্ত্রীর দুই ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবারের শোভাযাত্রায় দুই ভাইকে দেখা গেল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের শোভাযাত্রায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy