ফাইল চিত্র।
দুর্গাপুজোর সময় করোনা-সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে। আশঙ্কার এই কথা জানিয়ে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সরাসরি আর্জি জানাল রাজ্যে চিকিৎসকদের একটি সংগঠন। এ ব্যাপারে ওই সংগঠনের তরফে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে নবান্নে। পুজোর সময় সাবধানতার কোনও রকম অভাব ঘটলে তা গণআত্মঘাতীর সমান হবে— চিঠিতে সে কথাই লেখা হয়েছে। পুজোতে জনস্রোত আটকানোর পাশাপাশি মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে, চিঠিতে এমন বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপরেও জোর দিয়েছে ওই সংগঠন।
করোনা আবহে শারদোত্সব পালন বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের অনেকেই। প্রাক-পুজোর সময়ে কেনাকাটা চলছে। জামাকাপড়ের দোকান, শপিংমলগুলিতে উপচে পড়ছে ভিড়। যা দেখে রীতিমতো উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। পুজোর সময় পরিস্থিতি যে আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে সেই আশঙ্কা করেই রাজ্য প্রশানের হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। চিঠিতে যেমন মহারাষ্ট্রের গণেশ চতুর্থী, গুজরাতের গরবার প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন তাঁরা, অন্য দিকে, কেরলের ওনাম উত্সব এবং স্পেনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
মহারাষ্ট্রে গণেশ চতুর্থী নিয়ে মাতামাতি আটকে দেওয়া হয়েছে। নবরাত্রিতে ঐতিহ্যশালী গরবা নাচ বাতিল করেছে গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র। তেমনই ওনাম উৎসবের সময় স্বাস্থ্যবিধি শিথিল হওয়ায় করোনার সংক্রমণ বেড়েছে লাগামহীন ভাবে। অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপন এবং একটি ফুটবল ম্যাচে জনসমাগমের পর স্পেনেও কোভিড-সংক্রমণ তুঙ্গে ওঠে। পুজোকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গেও যাতে এমন পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে জন্য আগেভাগেই এবং কঠোর ভাবে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছে ওই চিকিৎসক সংগঠন।
আরও পড়ুন: এক দিনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রাজ্যে, মৃত্যু ছাড়াল ৫,৫০০
দুর্গাপুজো নিয়ে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো উদ্যোক্তা এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী ভাবে নিয়মবিধি মেনে পুজো করতে হবে তার দিক্নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এ বিষয় নবান্নের তরফে নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা পুজোর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সংক্রমণ ঠেকাতে কী কী করতে হবে তা নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও মেলা বা দোকান বসাতে গেলে পুরসভার অনুমতি নিতে হবে। পাশাপাশি, মণ্ডপে এক সঙ্গে অনেক মানুষের সমাগম যাতে না হয় সে দিকটাও উদ্যোক্তাদের নজর রাখতে হবে। এ ছাড়া খোলামেলা মণ্ডপ, মাস্ক, স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা-সহ কোভিডবিধি অক্ষরে অক্ষরে পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উদ্যোক্তাদের। কিন্তু তার পরেও আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে, এমনটাই মত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। শুধু দুর্গাপুজোই নয়, দশেরা-দীপাবলি-ছটপুজো-ক্রিসমাসের মতো উৎসব রয়েছে আগামী কয়েক মাসে। তা নিয়েও রাজ্য প্রশাসনকে আরও সতর্ক পদক্ষেপ করতে হবে বলেও মনে করেছেন তাঁরা।
সম্প্রতি মহালয়ায় তর্পণে গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে যে জনসামগমের ছবি দেখা গিয়েছে, তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন চিকিৎসকরা। দুর্গাপুজোতে রাজ্যব্যাপী যে জনস্রোতের পরিস্থিতি তৈরি হবে তাতে সংক্রমণের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটার কথায়, ‘‘বিভিন্ন রাজ্যে উত্সব যদি নিয়ন্ত্রিত হতে পারে, তা হলে এ রাজ্যেও প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সামান্য ভুলচুক হলেই চরম বিপদ নেমে আসতে পারে। এমনিতেই ডাক্তার, নার্সরা পরিষেবা দিতে গিয়ে করোনা-আক্রান্ত হচ্ছেন। তার উপর যদি করোনার সুনামি আছড়ে পড়ে কেরলের মতো, তা হলে ভয়ানক বিপদের মুখে পড়তে হবে।’’ একই মত ব্যক্ত করেছেন আর এক চিকিৎসক কৌশিক লাহিড়ীও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy