Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Hand Sanitizer

উপাদান অমিল, কলেজে বন্ধ স্যানিটাইজ়ার তৈরি

করোনা-সংক্রমণ রুখতে বারবার স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধোয়ার কথা বলেছেন চিকিৎসকেরা।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৩২
Share: Save:

এত দিন নিজেদের গবেষণাগারেই স্যানিটাইজ়ার তৈরি করে তা বিতরণ করছিলেন তাঁরা। কিন্তু লকডাউনের জেরে মিলছে না হাত ধোয়ার ওই জীবাণুনাশক তৈরির মূল উপাদান ইথাইল অ্যালকোহল। তাই আপাতত স্যানিটাইজ়ার তৈরি বন্ধ রামকৃষ্ণ মিশনের বিভিন্ন কলেজে।

করোনা-সংক্রমণ রুখতে বারবার স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধোয়ার কথা বলেছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু লকডাউন শুরুর আগে থেকেই বাজারে মিলছিল না ওই জীবাণুনাশক। তখন কিছুটা হলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে স্যানিটাইজ়ার তৈরি শুরু করে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির, রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ সেন্টিনারি কলেজ এবং নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আবাসিক কলেজ। তি‌নটি কলেজ মিলিয়ে তৈরি হয়েছিল কয়েক হাজার বোতল স্যানিটাইজ়ার।

স্থানীয় এলাকার পাশাপাশি বেলুড় সারদাপীঠের মাধ্যমেও তা বিভিন্ন জায়গায় বিলি করা হয়েছে। লকডাউনের মধ্যেও শিক্ষক ও গবেষণারত পড়ুয়ারা যৌথ ভাবে কলেজেই স্যানিটাইজ়ার তৈরি করেন বলে জানান বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠের সম্পাদক স্বামী দিব্যানন্দ। তাঁর কথায়, ‘‘স্যানিটাইজ়ার তৈরির মূল উপাদন ইথাইল অ্যালকোহল। কলেজগুলির গবেষণাগারে ওই রাসায়নিক যা মজুত ছিল, তা দিয়ে যতটা সম্ভব বানানো হয়েছে। এখন আর ইথাইল অ্যালকোহল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই স্যানিটাইজ়ার বানানোও আপাতত বন্ধ।’’

রহড়া কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে স্যানিটাইজ়ার তৈরিতে যুক্ত ছিলেন ওই কলেজে ক্যানসার নিয়ে গবেষণারত তপনজ্যোতি সান্যাল। তিনি জানান, মূলত ৮০ শতাংশ ইথানল, ৩ শতাংশ হাইড্রোজেন পারক্সাইড এবং ১৭ শতাংশ গ্লিসারল ও জলের সংমিশ্রণে স্যানিটাইজ়ার তৈরি করা হচ্ছিল। একই পদ্ধতিতে অন্য কলেজে তা তৈরির পরে ভরা হচ্ছিল ১০০ বা ২০০ মিলিলিটারের বোতলে। প্লাস্টিকের বোতলের গায়ে সাঁটা থাকছিল সংশ্লিষ্ট কলেজের নাম এবং উপকরণের পরিমাণ
লেখা লেবেল।

নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সম্পাদক স্বামী সর্বলোকানন্দ জানান, তাঁদের কলেজে মজুত থাকা ওই সব উপকরণ দিয়েই শিক্ষক ও পড়ুয়ারা ২০০ মিলিলিটারের প্রায় দুশো বোতল স্যানিটাইজ়ার বানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় এলাকায় খাদ্যসামগ্রী বিলি করার পাশাপাশি ওই স্যানিটাইজ়ারও দিয়েছি। আর বেশ কিছু বোতল পাঠানো হয় বেলুড়ে।’’ অন্য দিকে, রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ সেন্টিনারি কলেজের ‘স্বামী বিবেকানন্দ মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি রিসার্চ সেন্টার’-এও ৯০০ বোতল স্যানিটাইজ়ার তৈরি হয়েছিল। তার মধ্যে সাড়ে তিনশো পাঠানো হয়েছিল সারদাপীঠে। এখনও ২৫০টি বোতল ওই কলেজে রাখা রয়েছে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য।

কলেজের অধ্যক্ষ স্বামী কমলেশ্বরানন্দ জানান, মূলত রসায়ন, মাইক্রোবায়োলজি, উদ্ভিদবিদ্যা এবং প্রাণীবিদ্যা বিভাগের গবেষণাগারে ব্যবহৃত হয় ইথাইল অ্যালকোহল। করোনা-পরিস্থিতির তিন-চার মাস আগে থেকে ওই উপকরণ কলেজে মজুত ছিল। তা দিয়েই স্যানিটাইজ়ার বানানো হয়েছিল। একই ভাবে কাজ করেছে বেলুড়ের রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির কলেজও। সেখানে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে বানানো হয়েছিল ১০০ মিলিলিটারের এক হাজার বোতল স্যানিটাইজ়ার। এ ছাড়াও রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতালের জন্য আরও প্রায় ৩০ লিটার স্যানিটাইজ়ার বানানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্বামী দিব্যানন্দ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy