বিপত্তি: কাপলিং খুলে এগিয়ে গিয়েছে ইঞ্জিন। ছবি: নারায়ণ দে
ইঞ্জিন ছাড়াই চলছে ট্রেন! বৃহস্পতিবার সকালে এই দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছিলেন লাইনের আশপাশের বাসিন্দারা। পরে জানা যায়, কাপলিং ‘ছিঁড়ে’ বেরিয়ে গিয়েছে ইঞ্জিন।
একবার নয়, বৃহস্পতিবার দু’বার ঘটন এমন ঘটনা। এর জেরেই এ দিন সকাল থেকে দফায় দফায় বিপত্তি বাধে অসমের তিনসুকিয়াগামী বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসে। এ দিন সকাল পৌনে নটা নাগাদ প্রথমে মাদারিহাটের কাছে কামরা পিছনে ছেড়েই ইঞ্জিন এগোতে থাকে। তারপর মেরামতির পরে ট্রেন ছাড়ে। কিছুদূর এগোতেই আলিপুরদুয়ারের অসম গেটের কাছে ফের কামরা ছেড়ে ইঞ্জিন এগোতে থাকে। দু’বারই ইঞ্জিনের কাপলিং খুলে যায়। ট্রেন জোর গতিতে থাকলে বড়সড় দুর্ঘটনারও আশঙ্কা ছিল বলে দাবি যাত্রীদের। রেল জানিয়েছে, বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
রেল সূত্রে খবর, বছরখানেকও হয়নি ইঞ্জিনটি যাত্রীবাহী ট্রেনের কামরা টানা শুরু করেছে। তারই মধ্যে কাপলিং বা হাতের আদলে তৈরি লোহার যে অংশ অন্য কামরাকে টেনে ধরে রাখে সেটি নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, সে দিকে নজরই দেননি রেলকর্মীরা। তার জেরেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দফায় দফায় বিপত্তি বাধে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের এডিআরএম মনোজকুমার জিন্দল বলেন, “কী কারণে ঘটনাটি ঘটল তা নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। কাপলিং সংক্রান্ত সমস্যা তো ছিলই। অন্য কোনও কারণও ছিল কি না তা রিপোর্ট পেলেই জানা যাবে।’’
বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেস অসমের তিনসুকিয়া থেকে বেঙ্গালুরু পর্যন্ত যাতায়াত করে। এ দিন ওই ট্রেনের ইঞ্জিনের কাপলিংয়ের সঙ্গে প্রথমে লাগানো ছিল পার্সেল ভ্যানের কামরা বা রেক। দু’বারই সেটি খুলে যায়। রামপুরহাট থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন মনোজিৎ চক্রবর্তী। তিনি দাবি করেন, তিনবার ইঞ্জিন খুলে গিয়েছিল। তাঁর কথায়, “হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রেন থেমে যায়। খোঁজ নিয়ে জানি ইঞ্জিন খুলে গিয়েছে। তারপরে অমন ঝাঁকুনি দু’বার পেয়েছি। রেল কি যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে খেলা করে?”
যাত্রীদের দাবি, বুধবার রাত দেড়টা নাগাদও কিসানগঞ্জেও ইঞ্জিন খুলে গিয়েছিল। যদিও সরকারি ভাবে তা রেল স্বীকার করেনি। তবে তুলনামূলক নতুন ইঞ্জিনে এই ধরনের ত্রুটি থাকা সম্ভব নয় বলে দাবি রেলের। বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসের রক্ষণাবেক্ষণ হয় তিনসুকিয়ায়। অন্যদিকে ইঞ্জিনটি হাওড়ার ডিজেল শেডের। দুই কর্তৃপক্ষের কাছেই জবাব তলব করা হবে বলে রেল জানিয়েছে।
এ দিকে আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের মাদারিহাটের কাছে ইঞ্জিন ছাড়া ট্রেন চলতে দেখে চমকে উঠেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ইঞ্জিনটি আলাদা হওয়ার পরেও ট্রেনটি বেশ কিছুটা চলেছিল। পরে আস্তে আস্তে তা থেমে যায়।’’ কাপলিং বিপত্তির জেরে ট্রেনটি অন্তত তিন ঘণ্টা দেরিতে চলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy