Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Covid Oxygen Crisis

‘দুয়ারে অক্সিজেন’ নিয়ে হাজির ওঁরা, রয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ডও, পথ দেখাচ্ছে পলাশডিহা

কোভিড-পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝতে আসানসোল শহরের উপকণ্ঠে পলাশডিহায় এই কর্মকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছেন আসানসোলের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তিন শিক্ষক।

পলাশডিহায় গ্রামবাসীদের অক্সিজেন ব্যবহারের খুঁটিনাটি শেখাচ্ছেন চন্দ্রশেখররা।

পলাশডিহায় গ্রামবাসীদের অক্সিজেন ব্যবহারের খুঁটিনাটি শেখাচ্ছেন চন্দ্রশেখররা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২১ ০৬:৫৮
Share: Save:

এক গ্রামবাসীর ঘরে তৈরি হয়েছে ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’। কেউ করোনায় সংক্রমিত হলে তাঁর চিকিৎসা হবে সেখানে। রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডার। রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন দুই গ্রামবাসী। বাড়ি-বাড়ি বিলি করা হয়েছে ওষুধ এবং ‘করোনা কিট’। কোভিড-পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝতে আসানসোল শহরের উপকণ্ঠে পলাশডিহায় এই কর্মকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছেন আসানসোলের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তিন শিক্ষক চন্দ্রশেখর কুণ্ডু, অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়, অমিতাভ চক্রবর্তী এবং ইসিএল-এর চিকিৎসক শম্পা চট্টোপাধ্যায়। উদ্যোগের নাম—‘দুয়ারে অক্সিজেন।’

চল্লিশটি পরিবারের ওই গ্রামের প্রায় সব পুরুষই দিনমজুর। মহিলারা মূলত পরিচারিকার কাজে যুক্ত। চন্দ্রশেখর জানান, এখনও গ্রামের কেউ করোনা-সংক্রমিত হননি। তবে রয়েছেন বেশ কয়েকজন বয়স্ক নাগরিক। করোনায় আক্রান্ত হলে ওষুধ ও অক্সিজেনের অভাবে তাঁদের বিপদ হতে পারে। গ্রামের এই প্রকল্পে তাঁরা পরিষেবা পাবেন বিনা মূল্যে। প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ভাবনা থেকে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে।

পলাশডিহার সনকা ভুঁইয়ার মাটির বাড়ির একটি ঘরকে ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার। কী ভাবে রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া হয়, তা সনকা ও স্থানীয় আর এক বাসিন্দা গঙ্গা ভুইঁয়াকে শিখিয়েছেন শম্পা। ঠিক হয়েছে, কারও শ্বাসকষ্টের খবর পেলে তাঁকে ওই ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’-এ রেখে অক্সিজেন দেওয়া হবে।

শম্পা বলেন, ‘‘করোনার উপসর্গগুলি গ্রামবাসীদের চেনানো হয়েছে। সকলকে একটি করে করোনা কিট দেওয়া হয়েছে। তাতে প্রয়োজনীয় ওষুধ থাকছে। উপসর্গ দেখা দিলেই ওষুধ নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।’’ চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, আপাতত পলাশডিহা গ্রাম থেকে এই কাজ শুরু করা হয়েছে। পরে কাটাগড়িয়া, সরাকডিহি-সহ আরও চারটি গ্রামে তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের ফোন নম্বর সোশ্যাল মিডিয়া-সহ অন্য মাধ্যমে দিয়েছি। অক্সিজেনের দরকার হলে ফোন করেন অনেকে। সে পরিবারগুলির সঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহকারীদের যোগাযোগ করাই।’’ স্থানীয় বাসিন্দা প্রতাপ ভুঁইয়া বলেন, ‘‘বিপদের সময়ে ওঁদের পাশে থাকতে দেখে ভরসা পাচ্ছি।’’

চন্দ্রশেখররা জানান, গোটা প্রকল্পে প্রায় ২০,০০০ টাকা খরচ হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমানের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনীকুমার মাজি বলেন, ‘‘উদ্যোগ অবশ্যই অভিনন্দনযোগ্য। কিন্তু অক্সিজেনও একটি ওষুধ। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া, কোনও রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া যায় না। কী পরিমাণ

অক্সিজেন, কোন রোগীকে, কোন অবস্থায় দিতে হবে, তা কেবল ডাক্তারেরাই বুঝতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই কাজ করতে হবে। না হলে বিপদের আশঙ্কা থাকে।’’ চন্দ্রশেখরদের আশ্বাস, ডাক্তারের পরামর্শ মেনেই যাবতীয় ব্যবস্থা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Covid Oxygen Crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy