উদ্ধার হওয়া হাতির দাঁতের অংশ। —নিজস্ব চিত্র
কেরলের চোরাশিকারিদের কাছ থেকে বাবা নিয়ে আসতেন হাতির দাঁত।কলকাতায় বসে মেয়ে সেই হাতির দাঁত দিয়ে বানাতেন বিভিন্ন মূর্তি, গয়না বা সাজের জিনিস। তারপর চোরা পথে পাচার করা হত নেপালে। সেখানে চড়া দামে বিক্রি করা হত। এ রকমই একটি আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্রের পাণ্ডা বাবা-মেয়েকে গ্রেফতার করলেন শুল্ক দফতরের গোয়েন্দারা। উদ্ধার করা হল এক কোটি টাকারও বেশি মূল্যের হাতির দাঁতের তৈরি বিভিন্ন জিনিস।
ডিরেক্টরেট অফ রেভেনিউ ইনটেলিজেন্স (ডিআরআই)-র গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, সোমবার তাঁদের কাছে খবর আসে, একজন গাড়িতে করে চোরাশিকার করা হাতির দাঁত নিয়ে আসছে। সেই তথ্য অনুযায়ী সাঁতরাগাছির কাছে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে এবং ক্যারি রোডের সংযোগস্থলে একটি সেডান গাড়ি ধরেন গোয়েন্দারা। সেই গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় ৩.১৪ কিলোগ্রাম ওজনের হাতির দাঁত। গোয়েন্দারা গাড়ির দুই আরোহী সুদীশচন্দ্র বাবু এবং তাঁর মেয়ে অমিতাকে গ্রেফতার করে।
ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরাতে ধৃতরা স্বীকার করে, ওই হাতির দাঁত কসবা রাজডাঙাতে অমিতার ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। ডিআরআইয়ের গোয়েন্দারা সেখানে তল্লাশি চালিয়ে হাতির দাঁতের তৈরি ১০ টি বিভিন্ন মূর্তি, গয়না ছাড়াও হাতির দাঁতের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করেন যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭২ লাখ টাকা।
হাতির দাঁতের তৈরি মূর্তি। —নিজস্ব চিত্র
লোকসভা ভোটের সব খবর জানতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুন: লাইভ: সুগত-সন্ধ্যা-সুব্রত-ইদ্রিস-উমা দাঁড়াচ্ছেন না, প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করছেন মমতা
শুল্ক দফতরের গোয়েন্দারা এর পরই ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদের আধিকারিকরাও জেরা করেন ওই বাবা-মেয়েকে। ডিআরআই-র গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ধৃতরা স্বীকার করেন, কেরলের একটি বড় চোরা শিকার চক্রের সঙ্গে যুক্ত সুদীশ কুমার। সে কেরল থেকে চোরাশিকার করা হাতির দাঁত নিয়ে আসে কলকাতায়। এখানে তার মেয়ে ওই হাতির দাঁত দিয়ে বিভিন্ন জিনিস বানিয়ে শিলিগুড়ি দিয়ে পাচার করত নেপালে। সেখানে বিদেশি পর্যটক এবং সংগ্রাহকদের কাছে বিক্রি করা হত চড়া দামে।
আরও পড়ুন: শুক্রবার থেকেই রাজ্যে নামছে কেন্দ্রীয় বাহিনী
শুল্ক গোয়েন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে কেরলের ইডামালায়ার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে একটি চোরাশিকারের মামলায় সস্ত্রীক গ্রেফতার হয়েছিল সুদীশ কুমার। জামিনে ছাড়া পেয়ে ফেরার হয়ে যায় সে। গোয়েন্দাদের অনুমান সুদীশ ছাড়াও এই চক্রে অনেকে রয়েছে। জেরায় দিল্লির এক ব্যবসায়ীর নাম উঠে এসেছে। গোটা চক্রের আন্তর্জাতিক যোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়্ন্দারা। শুল্ক গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এ বারে কেরলের কোট্টায়াম থেকে হাতির দাঁত নিয়ে এসেছিল সুদীশ। সুদীশ এবং তার মেয়ের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া হাতির দাঁত এবং দাঁতের তৈরি বিভিন্ন জিনিসের সব মিলিয়ে মূল্য ১.০৩ কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন শুল্ক দফতরের গোয়েন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy