—ফাইল চিত্র
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আগে বলেছিলেন, তৃণমূল-সহ অন্য দল থেকে যাঁরা দলে যোগ দিতে ইচ্ছুক, তাঁদের সকলের জন্যই দরজা খোলা আছে। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘দরজা খুলে রেখেছি। তবে এ বার আস্তে আস্তে দরজা ছোট করছি। আস্তে আস্তে দরজা বন্ধও করে দেব।’’ রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও এ দিন মুর্শিদাবাদে বলেন, ‘‘সকলকে দলে নেওয়া হবে না। যারা ভাইপোর গরু-কয়লা পাচার এবং সিন্ডিকেটের মাফিয়া-রাজে যুক্ত নয়, শুধু তাদের নেওয়া হবে।’’
বিজেপি নেতাদের এই ঘোষণা শুনে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায়ের কটাক্ষ, ‘‘আসলে ওঁরা বুঝেছেন, তৃণমূল ভাঙানো সহজ নয়। আর তৃণমূল থেকে নেতা নিয়ে নিজেদের দলের নেতাদের মাথায় বসালে বিদ্রোহ অবশ্যম্ভাবী। তাই ওঁরা রণে ভঙ্গ দিয়েছেন।’’ আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘এর আগে পরিবর্তনের সময় লাল চোরেরা নীল হয়েছিল। বামেদের দুর্নীতিগ্রস্ত কলঙ্কিত লোকজন তৃণমূলে ভিড়েছিল। এখন নীল চোরেরা মওকা বুঝে গেরুয়া হচ্ছে। বাংলায় চোরেদের জন্য আলাদা দল খুলতে হবে।’’
তাৎপর্যপূর্ণ হল, শুক্রবার দিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে দিলীপবাবু, কৈলাস, রাজ্য দলের কেন্দ্রীয় সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, আর এক কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ, দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় প্রমুখের। সেখানে অন্য দল থেকে নেতাদের বিজেপিতে যোগদান করার প্রসঙ্গও ওঠে। তার পরে শুক্রবার রাতে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমরা বাছবিচার করছি। সকলকে নেওয়া হবে না।’’ এ দিন কলকাতায় দিলীপবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘বাছবিচার নিয়ে আগেও কথা হয়েছে। সবাইকে নিইনি। নেবও না। আমাদের কাজের উপযোগী এবং ভাল ভাবমূর্তির মানুষদের নেওয়া হবে।’’ দিলীপবাবুর সংযোজন, ‘‘রাজনীতিতে সব সময় ক্যারেকটার সার্টিফিকেট দেখে লোক নেওয়া যায় না। যাঁরা মানুষের কাছে সমালোচিত, তাঁদের বাদ দেওয়া হবে। যাঁদের নেওয়া হবে, তাঁদের যোগ্যতা, ভাবমূর্তি বিচার করে কাজে লাগানো হবে।’’ আগামী ৩০ এবং ৩১ জানুয়ারি রাজ্যে আসার কথা শাহের। তবে তাঁর কর্মসূচি নির্দিষ্ট হয়নি বলে দিলীপবাবু জানান। তাঁর কথায়, ‘‘ঠাকুরনগর, নবদ্বীপ বা অন্য কোথাও অমিত শাহজির কর্মসূচি হতে পারে।’’
আরও খবর: বউবাজারে বৃদ্ধ খুন, মাথায় বাড়ি প্রেসার কুকারের, গলায় ধারালো ছুরির কোপ
আরও খবর: পলাতক অভিযুক্তদের তালিকা চাইল নির্বাচন কমিশন
বিজেপি সূত্রের খবর, তৃণমূল-থেকে নেতা ভাঙিয়ে আনায় দলীয় কর্মী এবং জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরে। বিজেপির একাংশের মতে, তৃণমূলের যাঁদের বিরুদ্ধে জনসাধারণের ক্ষোভ আছে, তাঁদেরই দলে আনলে মানুষ বিজেপির উপরেও বিরক্ত হবেন। ভোটে তার ফল ভুগতে হতে পারে। আবার বিজেপির অন্য অংশের মতে, ভোটে জেতার জন্য অন্য দল থেকে নেতাদের যোগদান করানোর কৌশল অসম, ত্রিপুরা, হিমাচল প্রদেশে সফল হয়েছে। সে কারণে এ রাজ্যেও সেই পথে এগোচ্ছেন দলীয় নেতৃত্ব। বিজেপির ওই অংশের বক্তব্য, ‘বহিরাগত’ নেতাদের সকলে পদ, গুরুত্ব এবং ভোটে টিকিট পাবেন না। দল যথেষ্ট বাছাবাছি করবে। বিজেপির ওই অংশের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘দলের হজমশক্তি খুব বেশি। নবাগতরা দলকে বদলে ফেলতে পারবেন না। যাঁরা দলের মতাদর্শ অনুযায়ী নিজেদের বদলাবেন, তাঁরা টিকবেন। বাকিরা কালের নিয়মে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy