Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

টানা বন্ধ ইন্টারনেট, ভোগান্তি জেলায় জেলায়

উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বিমানবন্দর এলাকায় পৌঁছলে তবেই ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে। তা-ও খুব ধীর গতির

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৪
Share: Save:

নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় বিক্ষোভ-অবরোধের পাশাপাশি গুজব ছড়ানো রুখতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায়। যার জেরে সমস্যায় পড়েছেন শহর সংলগ্ন ওই দুই জেলার অসংখ্য মানুষ। ইন্টারনেটের অভাবে ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের মতো পরিষেবার পাশাপাশি ধাক্কা খাচ্ছে অনলাইনে টিকিট কাটা বা কোনও জিনিস অর্ডার দেওয়ার কাজও। বুক করা যাচ্ছে না অ্যাপ-ক্যাব। জেলার প্রশাসনিক কর্তারা অবশ্য বুধবার জানিয়েছেন, বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবেই আপাতত নেট বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই তা চালু করে দেওয়া হবে।

উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বিমানবন্দর এলাকায় পৌঁছলে তবেই ইন্টারনেট পাওয়া যাচ্ছে। তা-ও খুব ধীর গতির। জেলা সদর বারাসতেও নেট না থাকায় সরকারি অফিসে কাজ করাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। অভিযোগ, ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে গেলেই শুনতে হচ্ছে ‘সার্ভার ডাউন’।

ইন্টারনেট না থাকায় থমকে গিয়েছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্মও। বারাসত, মধ্যমগ্রাম এলাকার রেস্তরাঁ ও হোটেল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, অনলাইনে খাবারের অর্ডার না আসায় লোকসান হচ্ছে তাঁদের।

বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ওই জেলার সাধারণ মানুষ ও কৃষকদের অভিযোগ, ক্ষতিপূরণের জন্য অনলাইনে আবেদনের শেষ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। নেট না থাকায় আবেদন করতে পারেননি অনেকেই। পাশাপাশি ভোটার এবং আধার কার্ড সংশোধনের কাজকর্মও শিকেয় উঠেছে। এ বিষয়ে জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বুধবার বলেন, ‘‘নেট এখনও বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। সব দিক খতিয়ে দেখে তবেই ইন্টারনেট চালু করা হবে।’’

এ দিকে, আরও ২৪ ঘণ্টা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে বলে বুধবার জানিয়ে দিয়েছে হাওড়া জেলা প্রশাসন। রবিবার থেকে একটানা ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় তার প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস ও পরিষেবায়। গত শনিবার থেকে হাওড়ার বিভিন্ন প্রান্তে নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় ট্রেন ও বাসে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ঘটেছে আগুন লাগানোর ঘটনাও। এ নিয়ে নানা গুজব ছড়াতে শুরু করতেই রবিবার ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।

সমস্যায় পড়েছেন জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার্থীরাও। আগামী জানুয়ারিতে সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা। প্রায় ১৪ লক্ষ পরীক্ষার্থী সেই প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। তাঁদের একটি বড় অংশই অনলাইনে পড়াশোনা করেন। তিন দিন লাগাতার নেট বন্ধ থাকায়

সমস্যায় পড়েছেন ওই পরীক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্য বুধবার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি বিবেচনা করেই আপাতত নেট বন্ধ রাখা হয়েছে।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় উত্তর ২৪ পরগনা ও হাওড়ার মতোই পরিস্থিতি উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাংশেও। তবে উত্তর ২৪ পরগনায় এ দিন অল্প সময়ের জন্য নেট চালু করা হয়েছিল। প্রশাসন সূত্রের খবর, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় ফের পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE