Advertisement
১৮ অক্টোবর ২০২৪
JMB leader

অনুুপ্রবেশকারীর আড়ালে জেলবন্দি জেএমবি নেতা

পুলিশ বা কারা কর্তৃপক্ষ, নিছক অনুপ্রবেশকারী ছাড়া কিছুই ভাবেননি রহমতুল্লা নামে ওই বাংলাদেশি যুবককে। তবে জেলের ভিতর থেকেই ‘সোর্স’ মারফত খবর পৌঁছেছিল যথাস্থানে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৫২
Share: Save:

চোরাপথে ভারতে ঢুকে ‘বেআইনি অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে ধরা পড়েছিলেন এক বাংলাদেশি যুবক। আদালতের নির্দেশে ঠাঁই হয়েছিল বনগাঁ সংশোধনাগারে। পুলিশ বা কারা কর্তৃপক্ষ, নিছক অনুপ্রবেশকারী ছাড়া কিছুই ভাবেননি রহমতুল্লা নামে ওই বাংলাদেশি যুবককে। তবে জেলের ভিতর থেকেই ‘সোর্স’ মারফত খবর পৌঁছেছিল যথাস্থানে। তাতেই রীতিমতো তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন দুঁদে গোয়েন্দারা। তাঁরা বলছেন, রহমতুল্লা আর পাঁচ জন অনুপ্রবেশকারীর মতো নয়। সে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের অন্যতম নেতা। পশ্চিমবঙ্গ হয়ে কাশ্মীরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল রহমতুল্লা। তাই গত মে মাসে এ দেশে ঢুকেছিল সে।

বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে রহমতুল্লার ভারতে ঢোকাকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন গোয়েন্দারা। এক গোয়েন্দা-কর্তার কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নানা কারণে উত্তাল। প্রতিবেশী দেশগুলিতেও নানা উথালপাতাল ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে জঙ্গি সংগঠনগুলি কী করতে চলেছে তার আঁচ রহমতুল্লাকে জেরা করে পাওয়া যেতে পারে।’’ গোয়েন্দা সূত্রের খবর, জঙ্গি সংক্রান্ত খবর জোগাড়ে বর্তমানে জেলে গিয়ে দফায়-দফায় রহমতুল্লাকে জেরা করছেন কেন্দ্র এবং রাজ্যের গোয়েন্দারা। তাঁর সম্পর্কে নতুন করে তদন্তু হবে বলেও ওই সূত্রের দাবি। গোয়েন্দাদের একটি সূত্রের দাবি, ওই জেলে আরও কয়েক জন বাংলাদেশি বন্দি আছেন। ঢাকার বাসিন্দা রহমতুল্লা তাঁদের সঙ্গে কথা বলার সময় এমন কিছু বলেছিলেন যাতে অন্য কয়েক জন বন্দির সন্দেহ হয়। সেই খবরই ‘সোর্স’ মারফত গোয়েন্দাদের কানে পৌঁছে যায়।

গোয়েন্দারা জেনেছেন, রহমতুল্লা এ দেশে ঢুকে নিরাপদ আস্তানা পায়নি। তার ফলেই ধরা পড়ে গিয়েছে সে। বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যে বাংলাদেশি জঙ্গিরা এ দেশে ঢুকে কোনও গোপন আস্তানায় কিছু দিন কাটায় এবং সেই ফাঁকে বিভিন্ন পরিচয়পত্র তৈরি করে তা দিয়েই দেশের অন্যান্য প্রান্তে পাড়ি দেয়। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, রহমতুল্লাও তেমন কোনও সুযোগের সন্ধানে ছিল। তার সঙ্গে অনলাইনে পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা এবং জইশ-ই-মহম্মদের নেতাদের যোগাযোগের প্রমাণও গোয়েন্দারা পেয়েছেন। জেএমবি সম্পর্কিত কিছু তথ্যও রহমতুল্লা জেরায় উগরে দিয়েছে বলে গোয়েন্দাদের একটি সূত্রের দাবি।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একাংশ বলছেন, এ রাজ্যে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জেএমবির বিভিন্ন শাখা সক্রিয়। ২০১৪ সালে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর প্রথম জেএমবি সংগঠনের বিষয়টি সামনে আসে। বারবার ধরপাকড় হলেও জঙ্গি সংগঠনের বিস্তার পুরো নির্মূল করা যায়নি। জেএমবির সঙ্গে যোগসূত্রে আল-কায়েদার উপমহাদেশীয় শাখার (একিউআইএস) কথাও গোয়েন্দাদের বহু বার সামনে এসেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

JMB Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE