Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

ফের গণপিটুনি নাগরাকাটায়

এই নিয়ে রবিবার রাত থেকে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলা মিলিয়ে মোট পাঁচটি গণপিটুনির ঘটনা ঘটল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নাগরাকাটা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ০২:৩০
Share: Save:

সদ্য সোমবার নাগরাকাটায় গণপিটুনিতে খুন হয়েছেন এক বহুরূপী। তার পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, ফের গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটল ওই এলাকায়। এ বারে ভুটান সীমান্তবর্তী জিতি চা বাগানে। এই বাগানটিও নাগরাকাটা থানার অন্তর্গত। এ দিন আক্রান্ত হন এক মূক ও বধির তরুণী। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে জখম হলেন দু’জন এএসআই। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁরা উন্মত্ত জনতার হাত থেকে মহিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসতে সক্ষম হন। এর মধ্যে সোমবারের ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জিতি চা বাগান থেকে নাগরাকাটা থানার দূরত্ব ২০ কিমি। সোমবারের ঘটনার পর থেকেই নাগরাকাটা জুড়ে পুলিশ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। মালবাজার থানার একটা বড় অংশের পুলিশকেও নাগরাকাটায় মোতায়েন করা হয়। জিতি চা বাগানের কাছে ভুটানগামী সড়কের মোড়েই মালবাজারের পুলিশ পাহারায় ছিল। বাগানে গোলমাল শুনে সেই পুলিশকর্মীরাই আগে ছুটে যান। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জিতি বাগানের খেলার মাঠে বৃষ্টির জলকাদার মধ্যেই সেই মূক-বধির মহিলার উপর চড়াও হন চা শ্রমিকরা। পরে স্থানীয় লোকজন দাবি করে, চা বাগানটিতে না ঢুকলেও নাগরাকাটার বিভিন্ন এলাকায় ভবঘুরে মহিলাটিকে অনেক দিন ধরেই ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। তাঁর নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তাঁকে মালবাজার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

এই নিয়ে রবিবার রাত থেকে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলা মিলিয়ে মোট পাঁচটি গণপিটুনির ঘটনা ঘটল। সোমবার বহুরূপী আক্রান্ত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে, রবিবার রাতেই আলিপুরদুয়ারের বাদলনগরে আক্রান্ত হন এক বৃদ্ধ। সকালে আলিপুরদুয়ার জংশনের কাছে অজয় বাঁসফোর নামে বিহারের এক বাসিন্দাকে ছেলেধরা সন্দেহে পেটানো হয়। তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের মনে হয়েছিল, তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিকেলে বীরপাড়া স্টেশনে ফের তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করা হয়। উদ্ধার করে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল

অজয়ের পরিচয় নিয়ে সোমবার ধন্দ ছিল পুলিশের। এ দিন তারা জানতে পারে, অজয় বিহারের বাসিন্দা হলেও গুয়াহাটিতে কাজ করতেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে তিনি বিহারের বাবাধামে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে কর্মস্থলে ফেরার সময়ে এই বিপত্তি। পুলিশের এক অংশ জানায়, প্রথম বার মার খাওয়ার পরে সম্ভবত নিজের ছেলেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। তার পরে বীরপাড়ায় এক শিশুকে দেখে তার হাত ধরে টানতে গিয়েই দ্বিতীয় বার বিপদে পড়েন। এ দিন তাঁর বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ এনে তাঁকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

কিন্তু গণপিটুনি থামাতে কি করছে পুলিশ-প্রশাসন। মালবাজারের এসডিপিও দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “ছেলেধরা গুজব রুখতে আমাদের সব রকম প্রচার চলছে। তা সত্ত্বেও এই ঘটনা দুর্ভাগ্যের।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

Nagrakata Mob Lynching
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE