Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
BJP

BJP: ভোটে জেতা লটারি নাকি! দিলীপের তির বিজেপিকেই

বর্তমানে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপের সঙ্গে ওই মঞ্চেই হাজির ছিলেন দলের নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

দিলীপ ঘোষ

দিলীপ ঘোষ ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২১ ০৬:২৬
Share: Save:

রাজ্যে নির্বাচনে বিপর্যয়ের কোনও সামগ্রিক বিশ্লেষণ এখনও সে ভাবে করেনি বিজেপি। তবে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ সোমবার প্রকাশ্য মঞ্চে কার্যত সেই কাজটিই করলেন এবং পরোক্ষে আঙুল তুললেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকে।

তাঁর বক্তব্য, ভোটে জেতা কোনও লটারি লাগা নয়। তার জন্য সাংগঠনিক ভিত্তি দরকার। মেদিনীপুরে দলের কর্মিসভায় এ দিন দিলীপ বলেন, “রাজ্যে সাড়ে তিন হাজারের বেশি পঞ্চায়েত আছে। ক’টা জিতেছি? তিনশো-সাড়ে তিনশো হবে। রাজ্যে প্রায় ১৩৫টা পুরসভা আছে। একটা পুরসভাও আমাদের হাতে আছে? দু’শো-আড়াইশো কাউন্সিলর হবে খুব বেশি হলে। আর আমরা ভেবেছি সরকার গঠন করব। লটারি না কি, যে লেগে যাবে!” তাঁর সংযোজন, “আমাদের নেতাদের মধ্যে লোভটা লেগেছিল। ভেবেছিলেন, মন্ত্রী হবেন। কেউ কেউ তো মন্ত্রী হয়েই গিয়েছিলেন। সেই নেতারা অবশ্য ভোট গণনার সময় যাননি। গণনায় গিয়ে মার খেয়েছেন কর্মীরাই।”

বর্তমানে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপের সঙ্গে ওই মঞ্চেই হাজির ছিলেন দলের নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি অবশ্য বক্তৃতায় দিলীপের বক্তব্য নিয়ে সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে ভোটে পরাজয়ের পরে দলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ‘উদ্যোগ’-এর অভাব যে রয়েছে, তা সুকান্তের বক্তৃতায় স্পষ্ট। তিনি বলেন, “নিজের মা-বাবা মারা গেলেও তো লোকে এত দিন দুঃখ করে না। তার পরে তো লড়াইয়ে নামে। হয় ব্যাটারি ফুল চার্জ করে নেমে পড়ুন রাস্তায়, নয়তো মোবাইল সুইচড অফ করে ঘরে বসে থাকুন!”

রাজ্যে বিজেপির নির্বাচনের রাশ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিজেদের হাতে রেখেছিলেন। সামনে রাখা হয়েছিল কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেনন, অমিত মালবীয়র মতো ব্যক্তিদের। আর কেন্দ্রীয় পরিচালনায় ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে নির্বাচনী সভা করেছিলেন ২০টিরও বেশি। শাহের সভা, রোড শো ইত্যাদি তো ছিলই। পাশাপাশি, তৃণমূল থেকে আসা নেতা-মন্ত্রীদের জন্য দলের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল।

রাজ্য বিজেপির ভিতরের খবর, দিলীপ এই কৌশলকে ‘সঠিক’ বলে মনে করেননি। এখন তাঁর মুখে আত্মসমালোচনা তাই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি ইঙ্গিত করে বলে পর্যবেক্ষকেরা অনেকেই মনে করছেন। বিজেপির একাংশ আবার প্রশ্ন তুলছেন, এখন যাকে কার্যত ‘অবাস্তব স্বপ্ন’ বলছেন দিলীপ, ভোটের আগে তা তিনি কেন দেখিয়েছিলেন? দিলীপের জবাব, “যাঁরা রাজনৈতিক কর্মী, তাঁরা লোককে স্বপ্ন দেখান। আমরা সেই স্বপ্ন দেখিয়েছি। দেড়শো- দু’শো আসন পাব ভেবেছিলাম। কিন্তু হয়নি। এটাই রাজনীতি। ভাবি এক, হয় এক। এটাকে মেনে নিয়েই কাজ করতে হবে।’’ এর পরই কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, ‘‘আবার গোড়া থেকে শুরু করতে হবে। তবেই আপনারা সফল হবেন।”

রবিবার দিলীপ ফেসবুকে লিখেছিলেন, “অনেক দালাল নির্বাচনের আগে আমাদের দলে ঢুকে গিয়েছিলেন। কিছু জন গিয়েছেন। কিছু এখনও রয়েছেন। তাঁরা উৎপাত করছেন। সবাইকে বাদ দেব। এরা চায় না, বিজেপি শক্তিশালী হোক।” দালাল কারা? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ এ দিন বলেন, “আমরা খুঁজছি। যাঁরা কর্মীদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছেন, তাঁদের খুঁজছি। যথাসময়ে দল থেকে বার করব।” তাঁরা সকলেই কি তৃণমূল থেকে আসা? মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ বলেন, “বেশিরভাগ লোকই তৃণমূল থেকে আসা। তবে আমাদের দলেরও কিছু লোক রয়েছেন। যাঁরা দলকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Dilip Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy