Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

বিনা পয়সায় গান গেয়ে যাব, প্রতিশ্রুতি বাপ্পিদার

সিপিএমের দেখানো পথেই চলছে তৃণমূল— ভদ্রেশ্বরে এসে এ ভাবেই শাসক দলের সমালোচনা করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। দলের সর্বভারতীয় নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীকে পাশে পেয়ে এ দিন দৃশ্যতই উচ্ছ্বসিত ছিল বিজেপি শিবির। রাহুলবাবু বলেন, “সিপিএমের লুম্পেন, গুণ্ডারা এখন তৃণমূলে ভিড়েছে। আর যাঁদের সঙ্গে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলটা শুরু করেছিলেন, তাঁরা মার খাচ্ছেন।”

বিজেপির সভায় উৎসাহী কর্মী-সমর্থকেরা। বৃহস্পতিবার ভদ্রেশ্বরে ছবি তুলেছেন তাপস ঘোষ।

বিজেপির সভায় উৎসাহী কর্মী-সমর্থকেরা। বৃহস্পতিবার ভদ্রেশ্বরে ছবি তুলেছেন তাপস ঘোষ।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৪০
Share: Save:

সিপিএমের দেখানো পথেই চলছে তৃণমূল— ভদ্রেশ্বরে এসে এ ভাবেই শাসক দলের সমালোচনা করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ।

দলের সর্বভারতীয় নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীকে পাশে পেয়ে এ দিন দৃশ্যতই উচ্ছ্বসিত ছিল বিজেপি শিবির। রাহুলবাবু বলেন, “সিপিএমের লুম্পেন, গুণ্ডারা এখন তৃণমূলে ভিড়েছে। আর যাঁদের সঙ্গে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলটা শুরু করেছিলেন, তাঁরা মার খাচ্ছেন।” ‘আত্মসম্মান’ বজায় রাখতে তৃণমূলের এই অংশটিকে দল ছেড়ে বেরিয়ে আসার আহ্বান করেন রাহুলবাবু। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহ বুধবারই সভা করে গিয়েছেন রামপুরহাটে। দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্বুদ্ধ করতে তিনি বলে গিয়েছেন, এ রাজ্যে এ বার লোকসভা ভোটে ১০টি আসন পাবে ভারতীয় জনতা পার্টি। সেই সঙ্গে আরও এক ধাপ এগিয়ে, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটেও এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপি এমন দাবিও করেছেন তিনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতিও এ দিন একই সুরে ঘোষণা করেন, “আগামী বিধানসভা ভোটে ফের পরিবর্তন হবে। এ রাজ্যে আমরাই সরকার গড়বো।”

ভদ্রেশ্বরের মিল মাঠে এ দিন বিজেপির সমাবেশে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আডবাণীর আসার কথা ছিল বিকেল ৫টায়। তিনি অবশ্য দমদম বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে ভদ্রেশ্বরে পৌঁছন ৫টা ৪০ মিনিট নাগাদ। তাঁর উপস্থিতির খবর আরও ভিড় টেনে আনে। নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল জোরদার। অনুষ্ঠানের শুরুতে কিছুটা হুড়োহুড়িও বাধে। মঞ্চ থেকে ঘোষিকা অভিযোগ করেন, তাঁদের দলের এক কর্মীকে হেনস্থা করছে পুলিশ। এই খবর মাইকে শুনেই জনতা হইচই শুরু করে। বাধ্য হয়ে মাইকের দায়িত্ব নেন হুগলির বিজেপি প্রার্থী চন্দন মিত্র। তিনি জনতাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।

পরে বক্তৃতায় চন্দনবাবু রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। ডানলপের বন্ধ কারখানার প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। ভদ্রেশ্বর মূলত জুটমিল এলাকা। এ দিন ভিড়ের মধ্যেও শ্রমিকদের একটি বড় অংশের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। বিজেপির একটি সূত্রের খবর, বন্ধশিল্পের প্রসঙ্গ সেই কারণেই কৌশলী ভাবে তুলেছেন চন্দনবাবু। গোন্দলপাড়ায় বন্ধ জুটমিলের প্রসঙ্গ তুলেছেন আডবাণীও।

শ্রীরামপুরের প্রার্থী বাপ্পি লাহিড়ীকে ঘিরে ভিড়ের একটা বাড়তি উৎসাহ তো ছিলই। আডবাণীর পাশে দাঁড়িয়ে বাপ্পিবাবু বাংলা-হিন্দি মিশিয়ে গানে-কথায় আসর মাতান। পাশ থেকে অনুরোধ উড়ে এসেছিল, “দাদা একবার উ লা লা (বাপ্পির জনপ্রিয় গান) হয়ে যাক।” উত্তরে বাপ্পিদা বলেন, “এখন ওই গান হবে না। উল্টে দেবো, পাল্টে দেবো (এটিও বাপ্পিদার গান) গানও এখন হবে না। ১৭ মে (আগের দিনই ভোটের ফলপ্রকাশ) উল্টে দিয়ে এসে পাল্টে দিয়ে এসে তখন ওই গান গাইব।” তবে গানবাজনা থেকে জনতাকে একেবারে নিরাশ করেননি বাপ্পি। “অটলজিকে প্রণাম, আডবাণীজিকে প্রণাম” এই গানে মাতিয়েছেন সভা। “চিরদিনই তুমি যে আমার”— তা-ও গেয়েছেন দু’কলি।

বাপ্পিদাকে নিয়ে তৃণমূল চটুল গানের সিডি তৈরি তাঁকে নানা ভাবে কটাক্ষ করছে বলে এর আগে অভিযোগ তুলেছেন বাপ্পি। ঈষৎ অভিমানের সুরেই তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে এ সব নিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নালিশও জানাতে পারেন। এ দিন বাপ্পিদা বলেন, “ভোটে জিতি-হারি, একটা কথা দিয়ে যাচ্ছি। যখনই ডাকবেন, শ্রীরামপুর-চন্দননগরে এসে বিনা পয়সায় গান গেয়ে যাব।”

করতালি থামতে সময় নিল বেশ খানিকটা।

অন্য বিষয়গুলি:

gautam bandyopadhyay bappi lahiri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE