ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই হাওড়া, হুগলির বিভিন্ন জায়গা থেকে গোলমালের অভিযোগ উঠেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদি প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তারা।
শুক্রবার দুপুরে চুঁচুড়ার রবীন্দ্রভবনে গণনা চলাকালীন আখনবাজারে সিপিএমের জোনাল অফিসে তৃণমূলের বাইকবাহিনী হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, মারধর করে বলে অভিযোগ। সেই সময় সেখানে ছিলেন সিপিএম নেতা ও প্রাক্তন সাংসদ রূপচাঁদ পাল-সহ কয়েক জন নেতা ও কর্মী-সমর্থকেরা। সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের বাইকবাহিনী আচমকা বাঁশ, লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। অফিসের আলমারি, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। তাদের মারধরে গুরুতর জখম হন তিন সিপিএম কর্মী। খবর পেয়ে চুঁচুড়া থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘মারধর ও ভাঙচুরের ঘটনায় আমাদের দলের কেউ জড়িত নয়। ওদের নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।”
জাঙ্গিপাড়া রহিমপুর পঞ্চায়েতে রঞ্জনপুর মান্না পাড়ায় এ দিন দুপুরে একটি স্থানীয় ক্লাবে আগুন লাগিয়ে দেয় এক দল যুবক। ক্লাবের সদস্যদের অভিযোগ তৃণমূলের লোকেরাই আগুন ধরিয়েছে। তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। চন্দননগরের লিচুতলায় সিপিএমের কার্যালয় ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আহত হন দু’জন। পান্ডুয়ার ইলছোবা মন্ডলাইতেও সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে তৃণমূল ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গোঘাটের নকুন্ডায় সিপিএমের পার্টিঅফিস পোড়ানো হয় এবং সংলগ্ন দু’টি পাড়ায় কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ গিয়ে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। খানাকুলের কাবিলপুরে সিপিএমের এক জোনাল সদস্য বাবলু ঘাটাকে মারধর করা হয় ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পুরশুড়ায় কৃষ্ণবাটি সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক সন্দীপ সামন্তের বাড়ি ভাঙচুর করা হয় ও তাঁকে মারধর করা হয়। সব ক্ষেত্রেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। সমস্ত ঘটনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়ছে।
উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের জোয়ারপুরী নয়াচকে এ দিন বিকেলে বিজেপি-র পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়। উলুবেড়িয়ার পূর্ব কেন্দ্রে পারিজাত মোড়ে সিপিএমের শহিদ বেদি ভাঙচুর করা হয়।দু’টি ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত তৃণমূল।
ভাঙড়ে সন্ত্রাসের অভিযোগ সিপিএমের
ভোট-গণনা শেষ হওয়ার পরেই শুক্রবার বিকেলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভাঙড়ে সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ তুলল সিপিএম। সিপিএমের অভিযোগ, ভাঙড়ের শোনপুর, বিজয়গঞ্জ বাজার, কাঁঠালিয়া, চন্দনেশ্বর, নিতুড়ি-সহ বিভিন্ন জায়গায় কোথাও দলীয় সমর্থকদের মারধর করা হয়েছে। কোথাও তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুঠপাট করা হয়েছে। বিজয়গঞ্জ বাজারের সাত-আটটি দোকানে তালা মেরে দেওয়া হয়। সিতুড়িতে একটি দলীয় কার্যালয় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী বলেন, “সন্ত্রাস বন্ধ করতে পুলিশকেই উদ্যোগী হতে হবে। আমি অনুরোধ করব, তারা যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।” অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি শক্তি মণ্ডলের দাবি, “ভোটে হেরে ওরা মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, এলাকায় যেন শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy