প্রচারে মিলল আশীর্বাদ।—নিজস্ব চিত্র।
প্রচারের প্রথম দিন থেকেই তৃণমূল ও বামেদের প্রতি আক্রমণের ঝড় তুললেন বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য। দোলের পর মঙ্গলবার নিজের কেন্দ্রে এসে তাঁকে দেখতে মানুষের ভিড় দেখে বেশ উৎসাহিত শমীকবাবু। জনতার উদ্দেশে বললেন, “আমি জিততে এসেছি। এখান থেকে জিতেই যাব।”
এ দিন দুপুরে টাউন হলের কর্মীসভায় যাওয়ার সময় রাস্তায় জনতার ভিড় দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়ে হাঁটতে থাকেন তিনি। জনতার ভিড় দেখে তাঁর মন্তব্য, “মানুষ ঠিক করে ফেলেছেন কাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী করবেন। আর সে জন্যই তাঁরা বিজেপিকে সমর্থন করবেন।” তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, “এ বার আর কেউ বলতে পারবে না যে, আমরা চাইলে সরকার উঠবে, আমরা চাইলে সরকার বসবে। পশ্চিমবঙ্গের কালীঘাটে কারও বাড়িতে কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তার চাবি থাকবে না।” তৃণমূলের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গ টেনে বিজেপি প্রার্থী বলেন, “সুন্দরবনের আয়লা দুর্গত মানুষ গরুর খাওয়ার অযোগ্য চাল, বাঁধ মেরামতি না হওয়া কিংবা উন্নয়নের নামে কেবল মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেখেছেন। তাই তাঁরা ঠিক করেছেন প্রধানমন্ত্রী যদি কাউকে করতে হয় তো তিনি হলেন নরেন্দ্র মোদী।”
বামেদের প্রচারিত তৃতীয় বিকল্পকে ‘চৈত্রের সেল’ বলে কটাক্ষ করে শমীকবাবুর অভিযোগ, “বামেরা সাম্প্রদায়িকতার তাস খেলে বা ধর্মের নামে সুড়সুড়ি দিয়ে নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে। যা বুঝতে পেরেছেন মানুষ। তাঁরা এ বার তার জবাব দেবেন।” কংগ্রেসকে কেলেঙ্কারির দল বলে মন্তব্যের পাশাপাশি তৃণমূলের ফেডারেল ফ্রন্টকেও একহাত নিয়ে তিনি বলেন, “এর কোনও গুরুত্বই নেই।” তিনি বলেন, “আমি সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরুর রাজনীতি করতে আসিনি। মন্দিরে-মাজারে যাব, তবে কপালে তিলক কেটে কিংবা মাথায় টুপি পরে নয়। কারণ আমি বিভাজনের রাজনীতি করি না। মানুষকে দেশের উন্নতির কথা বলব। আমার আশা পরিবর্তনের পক্ষেই তাঁরা রায় দেবেন।”
প্রসঙ্গত, ২০০৯ এর লোকসভায় এই কেন্দ্রে সিপিআই প্রার্থীকে ৫৯, ৩৭৯ ভোটে হারিয়েছিলেন তৃণমূলের নুরুল ইসলাম। তবে সেই সময় তৃণমূলের সঙ্গে জোট ছিল কংগ্রেস এবং এসইউসি-র। এ বার তারা পৃথক ভাবে লড়ছেন। ফলে তৃণমূলের গতবারের ভোটব্যাঙ্কে টান পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে। বিশেষ করে গত বিধানসভায় বসিরহাট কেন্দ্রের ১০,৩২৮৮৩ জন ভোটারের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ৪৭,৬৭৬৭টি ভোট, সিপিআই ৪১,৭৩৬৮টি ভোট, বিজেপি ৬৭,৬৯০টি ভোট এবং পিডিসিআই পেয়েছিল ৪১,৩৩৮টি ভোট। তার উপর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মোদীর নাম ঘোষণার পর এই কেন্দ্রে বিজেপি-র ভোট বাড়তে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
এই অবস্থায় লড়াই যে সহজ হবে না তা টের পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল, বাম, বিজেপি সব পক্ষই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy