বাম আমলের প্রস্তাব ছিল, মাতলা নদীর উপরে ক্যানিং-মৌখালি সেতু তৈরি হবে। কিন্তু ডান-বাম কোনও সরকারই সেই প্রস্তাব রূপায়িত না করায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা এলাকার জীবনতলার মৌখালিতে ওই সেতু তৈরি হলে সড়ক পথে সুন্দরবনের সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা সহজ হত বলে মনে করছেন স্থানীয় মানুষ। ওই সেতু তৈরি হলে ক্যানিং মহকুমার ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা-সহ উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, সরবেড়িয়া, মিনাখাঁ-সহ ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা এলাকার জীবনতলা, মৌখালি, আঠারোবাঁকি, মঠেরদিঘি প্রভৃতি এলাকার মানুষ সহজে ঘটকপুকুর হয়ে কলকাতা এবং বারুইপুর, সোনারপুরে যাতায়াত করতে পারতেন। এই সেতু তৈরি না হওয়ায় ৩-৪ লক্ষ মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। স্থানীয় মানুষের আরও অভিযোগ, জীবনতলা থানার মৌখালিতে মাতলা নদীর চরে ৫-৬ হাজার বিঘা খাস সরকারি জমি পড়ে আছে। এক দিকে, এই সেতু তৈরি হলে যেমন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হত, তেমনই পড়ে থাকা সরকারি খাস জমিতে ইকো ট্যুরিজম, পিকনিক স্পট, ছোট ছোট কলকারখানা তৈরি হতে পারত।
এখন মাতলা নদীর চরে হাজার হাজার বিঘা সরকারি খাস জমিতে গড়ে উঠেছে বেআইনি মেছোভেরি। আর এই মেছোভেড়ির দখল করা নিয়ে প্রায়শই এই এলাকায় চলে সমাজবিরোধীদের মধ্যে গুলি-বোমার লড়াই। ভেড়ি দখলকে কেন্দ্র করে অতীতে বহু খুন-জখমের ঘটনা ঘটেছে এই এলাকায়। সাধারণ মানুষের দাবি, সরকার যদি অবিলম্বে এই সেতু তৈরি করে এবং পড়ে থাকা সরকারি খাস জমিতে বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করে, তা হলে ওই সব এলাকায় সমাজবিরোধী কার্যকলাপও বন্ধ হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ওহাব মোল্লা, আব্দুল হাইরা বলেন, ‘‘আমরা ওই সেতু তৈরির ব্যাপারে বারবার ক্যানিং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সওকাত মোল্লাকে উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেছিলাম। প্রশাসনের সর্বস্তরেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছে না।’’
সওকত বলেন, “এই সেতু তৈরির ব্যাপারে আমরা প্রথমে পূর্ত দফতরকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। ওরা না করায় জেলা পরিষদকেও সেতু তৈরির প্রস্তাব দিয়েছি।” সেতুটি তৈরি হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি তো বটেই, সরকারি খাস জমিতে প্রকল্প গড়ে তোলা গেলেও ভেড়ি দখলকে কেন্দ্র করে এলাকায় সমাজবিরোধীদের কার্যকলাপ বন্ধ করা যেত বলে মনে করেন তিনিও।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখের বক্তব্য, “ক্যানিং-মৌখালি সেতু তৈরির জন্য আমরা একটি প্রস্তাব পেয়েছি। আরআইডিএম-কে টাকা অনুমোদনের জন্য জানিয়েছি। ওই টাকা পেলেই কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া, ওই এলাকায় ইকো-ট্যুরিজম বা অন্যান্য প্রকল্পের ব্যাপারে পর্যটন দফতরের সঙ্গেও কথা হয়েছে।”
আপাতত এই আশ্বাসটুকুর মুখ চেয়ে দিন কাটবে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার বহু মানুষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy