জোড়হাত: মুর্শিদাবাদ থানার ধরমপুর ২২ পুতুল মনসাপুজো কমিটির পুজোয়। ছবি: মৃম্ময় সরকার
সকাল সকাল মহরম আলি শাহ পৌঁছে যান নিজের তেলকলে। শুক্রবার থেকে বেমালুম বদলে গিয়েছে সেই রোজনামচা। কেন?
মহরম বলছেন, ‘‘পাড়ার পুজো বলে কথা! সব সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি, মশাই।’’
হাজি নইমুদ্দিন শাহের বয়স হয়েছে ঢের। হাইস্কুলের প্রাক্তন ওই শিক্ষক অবসর নিয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। সাধারণত তিনি বাড়িতেই বেশি থাকেন। এ দিন তিনিও স্নান-টান সেরে সটান চলে এসেছেন পুজো মণ্ডপে। তার পরে গম্ভীর গলায় জানতে চেয়েছেন, ‘‘কী রে, সব ঠিকঠাক চলছে তো?’’
আরও পড়ুন: ডাইনোসর নাকি! কঙ্কাল ঘিরে চাঞ্চল্য আমডাঙায়
সোনারুল ইসলাম, রবিউল ইসলামরা সকাল থেকেই পুজো কমিটির কর্তা বলরাম মণ্ডলের কাছে ঘন ঘন খোঁজ নিয়েছেন, ‘‘পুরোহিত কখন আসবে গো?’’ পুরোহিত নিয়ে এত হইচই কেন?
একগাল হেসে দু’জনেই বলছেন, ‘‘এ বার উপোস রেখেছি। পুজো না হলে তো কিছু খাওয়া যাবে না।’’
সাকিন ধরমপুর। জেলা মুর্শিদাবাদ। গত প্রায় ৩৭ বছর ধরে প্রান্তিক ওই গ্রামে এ ভাবেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মনসা পুজো করে চলেছেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, প্রায় ৪২ বছর আগে ধরমপুরের কয়েক জন মনসামঙ্গলের গান শেখেন।
তার পরে তাঁরা মনসা পুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। মনসা-সহ আরও ২২টি মূর্তি সাজিয়ে শুরু হয় পুজো। কিন্তু কয়েক বছর পরে পুজোর খরচ সামাল দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন পুজো উদ্যোক্তারা। তখন পুজোর হাল ধরেন ধরমপুরের মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন।
পুজো উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণেই বসেছে মেলা। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ওই মেলা চলবে বারো দিন। প্রতি সন্ধ্যায় বসছে কবিগান ও যাত্রাপালার আসর। ধরমপুর ২২ পুতুল মনসাপুজো কমিটির সম্পাদক বলরাম মণ্ডল বলছেন, ‘‘এটাই আমাদের সংস্কৃতি।’’ পুজো কমিটির আর এক কর্তা মহরম আলি শাহ বলছেন, ‘‘মায়ের কাছে সব সন্তানই সমান। তাই আমরাও মায়ের পুজোতে থাকি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy